এটাই প্রতি দিনের ছবি। ছবি: অরুণ লোধ।
গলির মধ্যে প্রতিটি বাড়ির ভিতরে সারি দিয়ে বালতি, জার, ড্রামে জল ভর্তি করে রাখা। এই জল ভরতে পাঁচ ফুট নীচের চৌবাচ্চায় নামতে হয়। যে যখন পারেন এ ভাবে জল ভরে রাখেন। সারা দিন এই জলই ভরসা। কোনও কোনও জায়গায় এই জলও মেলে না। অপেক্ষা করতে হয় পুরসভার জলের গাড়ির জন্য। এ ছবি দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ সংলগ্ন কলকাতা পুরসভার ১১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পিএন মিত্র লেন, তারা পার্ক, সারদা পল্লি (বেদে পাড়া এলাকায়), ক্যানাল রোড এলাকার।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যখনই পুরসভার গাড়ি আসে, জল নেওয়ার জন্য রীতিমতো কাড়াকাড়ি লেগে যায়। কখনও তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। গরমে জলের হাহাকার বাড়লেও বেশ কিছু এলাকায় সারা বছরই জলকষ্ট থাকে। এখানে গার্ডেনরিচ থেকে পরিস্রুত পানীয় জল আসে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই জলও সব সময় পাওয়া যায় না। সারা দিনে যা জল আসে, তা দিয়ে চাহিদা মেটে না। যদিও এই ওয়ার্ডের আবাসনগুলিতে জলের সমস্যা নেই। কারণ, আবাসনগুলি পাম্পের মাধ্যমে জল তুলে নেয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, টালিগঞ্জ করুণাময়ী সংলগ্ন টালিনালার উল্টো দিকের এই অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বড় বড় আবাসন এ ভাবে জল তোলায় জলস্তর নেমে গিয়েছে। তাই সাধারণ নলকূপে জলই ওঠে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগে ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি পুকুর ছিল। ধীরে ধীরে তা বুজিয়ে বাড়ি তৈরি হয়েছে। ফলে নিত্যদিনের কাজকর্মে পুকুরের জল ব্যবহার করতে পারছেন না বাসিন্দারা। তাই পুরসভার জলই ভরসা।
জলের সমস্যার পাশাপাশি এখনও এই ওয়ার্ডে খাটা পায়খানা রয়েছে। কলাবাগান এলাকায় টালিনালার পাশে বসবাসকারী সব বাড়িতে শৌচাগার তৈরি হয়নি। ফলে এখনও টালিনালার উপরে অস্থায়ী শৌচাগার রয়েছে। এলাকার বিরোধী তথা সিপিআইয়ের তারক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ধরনের শৌচাগার অস্বাস্থ্যকর। এখানে দুর্ঘটনাও ঘটেছে।” তারকবাবুর অভিযোগ, ১১৬ নম্বর ওয়ার্ডেই সিরিটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন রয়েছে।
অথচ সেই পাম্পিং স্টেশনের জল এই ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়েই ১১৮ নম্বরে সরবরাহ হয়। কিন্তু এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জল পান না। যদিও জলকষ্টের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের কৃষ্ণা সিংহ। তিনি বলেন, “আমার ওয়ার্ডের দু’একটি জায়গায় অল্প জলকষ্ট রয়েছে। সেখানে প্রতি দিনই পুরসভার জলের গাড়ি যায়।’’ পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি বিভাস মাইতিও বলেন, “জলের তেমন সমস্যা নেই। এই অঞ্চলে জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তাই কয়েকটি জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। তবে প্রকট নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy