Advertisement
E-Paper

নিউ মার্কেট অঞ্চলে হকার রুখতে বনধ ডাকছেন দোকানিরা

হকারদের সমস্যা ও তার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী শুক্রবার কলকাতা শহরের হকারদের সঙ্গে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর হকারদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে তার ঠিক দু’দিন আগে আগামী কাল, বুধবার থেকে টানা তিন দিন ধর্মতলা-নিউ মার্কেট চত্বরে বাজার বনধের ডাক দিল ‘জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশন’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০২:২২

হকারদের সমস্যা ও তার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আগামী শুক্রবার কলকাতা শহরের হকারদের সঙ্গে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর হকারদের দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে তার ঠিক দু’দিন আগে আগামী কাল, বুধবার থেকে টানা তিন দিন ধর্মতলা-নিউ মার্কেট চত্বরে বাজার বনধের ডাক দিল ‘জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশন’।

সোমবার ওই সংগঠন জানিয়েছে, নিউ মার্কেট চত্বরে বিভিন্ন মার্কেটের স্থায়ী দোকানের সামনের জায়গা দখল করে নিয়েছেন হকারেরা। এতে দোকানগুলির ব্যবসা মার খাচ্ছে। পুরসভার সামনে ওই ঘটনা বাড়তে থাকলেও নীরব মেয়র এবং পুর-প্রশাসন। প্রতিবাদে বাধ্য হয়েই তাঁরা পথে নামছেন বলে জানিয়েছেন ওই সংগঠনের যুগ্ম সচিব উদয় সাউ। পুরভবন লাগোয়া ন’টি বাজারে বনধ ডাকার বিষয়ে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।”

প্রসঙ্গত, জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশনের ডাকা বনধ শুক্রবার পর্যন্ত। ওই দিনই শহরের হকারদের নিয়ে রবীন্দ্র সরোবরে একটি বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সে কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, “ওই বৈঠক পর্যন্ত ওঁদের বনধ স্থগিত রাখা উচিত।”

কেন ওই বনধ?

উদয়বাবুদের বক্তব্য, কলকাতার ঐতিহ্যশালী নিউ মার্কেট এবং লাগোয়া চত্বর ক্রমশ হকারদের দখলে চলে যাচ্ছে। গত বছরই বিষয়টি মেয়র পারিষদ (বাজার) এবং মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল। পরে এ নিয়ে একটি বৈঠকও করা হয়। বিভিন্ন বাজারের সামনে এবং রাস্তার উপর থেকে হকার সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে পুরসভায় সিদ্ধান্তও হয়েছিল। কিন্তু প্রায় সাত মাস হয়ে গেল, কিছুই হল না। তাই বাধ্য হয়ে বন্‌ধের রাস্তায় যাচ্ছে ফেডারেশন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, হকারেরা যে বেআইনি ভাবে বসে আছেন, তা পুলিশ জানে। কিন্তু পুরসভা না বললে কিছু করা যাবে না। কারণ, এটা রাজনৈতিক বিষয়। অর্থাত্‌, ওই হকারদের সরাতে গিয়ে পুলিশ যে যেচে নিজেদের হাত পোড়াতে চায় না, তা ইতিমধ্যেই প্রতিবাদী ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দিয়েছে তারা।

অথচ, নিউ মার্কেটের স্থায়ী ব্যবসায়ীদের দাবি যে যথার্থ, সে সময়ে তা স্বীকারও করেছিলেন পুরসভার বাজার দফতরের পদস্থ অফিসারেরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, নিউ মার্কেট পুরসভার অধীন। ওই বাজারের স্টল ভাড়া দিয়ে বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার মতো আয় হয় পুরসভার। কিন্তু যাঁরা বছরের পর বছর ওই ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছেন, তাঁরাই বিপদে পড়ে পুর-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তার পরেই পুর-প্রশাসন বাজারের স্থায়ী দোকানদার, হকার এবং হকার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে। সেখানে তখন হাজির ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রও।

মেয়র শোভনবাবু তখন জানিয়েছিলেন, নিউ মার্কেটের সামনের রাস্তা সাফ করা হবে। তখন রমজান মাস চলছিল। তা শেষ হলেই নিউ মার্কেটের সামনের চত্বর সাফ করার কাজ শুরু হবে। মেয়র পারিষদ তারকবাবুও বলেছিলেন, “সরকারকে সব রকম কর দিয়েই ওঁরা ব্যবসা করছেন। তা সত্ত্বেও এক শ্রেণির হকারের কারণে তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে।” তার পরেও কিছু হয়নি। এ ব্যাপারে তারকবাবুর বক্তব্য, “হকার-নীতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একটা সমস্যা হচ্ছে। তাঁদের তোলা যাচ্ছে না।” এ নিয়ে রাজ্য সরকারও একটা নীতি করেছে। যা এখনও প্রকাশ হয়নি। তাই পুর-প্রশাসন আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চায় না।

ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা এ দিন দাবি করেন, মাসখানেক আগেও তাঁরা মেয়রকে সমস্যার কথা জানান। তখন বলা হয়েছিল, ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। তাতেও প্রতিকার না হওয়ায় এ দিন তাঁরা বন্‌ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১১, ১২ এবং ১৩ মার্চ পুরসভা সংলগ্ন এস এস হগ মার্কেট, (নিউ মার্কেট), ফিরপো মার্কেট, চৌরঙ্গি মার্কেট, সিটি মার্ট, সিমপার্ক মল, ট্রেজার আইল্যান্ড ছাড়াও ফিনউইক বাজার স্ট্রিট, হুমায়ুন প্লেস, সব্জি মান্ডি, বাট্রাম স্ট্রিট এবং লিন্ডসে স্ট্রিটের সমস্ত স্থায়ী দোকান বন্ধ রাখবেন।

অন্য দিকে, নিউ মার্কেটের হকার সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা দোকান খোলা রাখবেন। পুর-প্রশাসন আগে যে বৈঠক ডেকেছিল, সেখানে তাঁরা পুনর্বাসনের শর্তে সম্মতও হয়েছিলেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সবই তাঁরা জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

new market hawker problem business strike
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy