ভাগ্নের হাতেই খুন হয়েছেন মামা। পাটুলি থানা এলাকায় বৃদ্ধ খুনের ঘটনার মাস চারেক পরে এমনই দাবি করছে পুলিশ। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শঙ্করবাবুর ভাগ্নে চিরঞ্জীব ও তার স্ত্রী আলপনা গ্রেফতার হয়েছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর পাটুলি থানার কেন্দুয়া মেন রোডে নিজের বাড়িতে খুন হন শঙ্করপ্রসাদ রায় (৬২)। রান্নাঘরে গ্যাস ওভেন রাখার জায়গার নীচে মৃতদেহ রেখে ইট দিয়ে গেঁথে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সম্পত্তি নিয়ে শঙ্করবাবুর সঙ্গে তাঁর বোন বিপাশা ও ভাগ্নে চিরঞ্জীবের বচসা চলছিল। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা চলায় শঙ্করবাবুর কাছেই ছেলেকে নিয়ে থাকতেন বিপাশা। গত কালীপুজোর দিন তুমুল ঝগড়ার পরে বোন ও ভাগ্নেকে তাড়িয়ে দেন শঙ্করবাবু। তার পরেই চিরঞ্জীব শঙ্করবাবুকে খুনের চক্রান্ত করে বলে পুলিশের দাবি। বছরখানেক আগে আলপনা মণ্ডল নামে উলুবেড়িয়ার এক তরুণীর সঙ্গে চিরঞ্জীবের পরিচয় হয়। গত অগস্টে কালীঘাটে তাদের বিয়ে হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ঘটনার দিন সাতেক আগে এক রাতে চিরঞ্জীব মামার বাড়িতে হাজির হয়। ফের মামার সঙ্গে বচসা হয় তার। ওই বাড়িটি নিজের নামে লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে সে। কিন্তু শঙ্করবাবু নারাজ ছিলেন। ৫ ডিসেম্বর রাতে মামার বাড়িতে যায় চিরঞ্জীব। মামাকে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে মারার পরে মৃতদেহ বিছানায় রেখে আসে। পরের দিন আলপনাকে সঙ্গে নিয়ে মৃতদেহ লোপাটের জন্য দেওয়ালে ইট দিয়ে গেঁথে দেয়। ধৃতেরা জেরায় ঘটনার কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।
ধৃতেরা জেরায় আরও জানিয়েছে, খুনের ঘটনার পরে দিন কয়েক সোনারপুরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল চিরঞ্জীব ও আলপনা। তার পরে বেশ কয়েক সপ্তাহ উলুবেড়িয়ায় আলপনার বাড়িতে ছিল তারা। এর পরে আস্তানা বদলের জন্য খড়গপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল চিরঞ্জীব। এক তদন্তকারীর কথায়, “বিয়ের পর থেকে আলপনাকেও শঙ্করবাবুর কাছে নিয়ে আসত চিরঞ্জীব। শঙ্করবাবুর কয়েক জন প্রতিবেশীর কাছ থেকে সে খবর মেলে। তার পরেই আলপনার বাড়িতে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়।” টানা নজরদারির পরেই খোঁজ মেলে আলপনার। উলুবেড়িয়া থেকে তাকে এবং খড়গপুর থেকে চিরঞ্জীবকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে হাজির করা হলে তাদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy