লোকসভা নির্বাচনের সময়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে লাইসেন্স থাকা আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা রাখাই নিয়ম। কিন্তু লালবাজারের ‘ভুলে’ এমনই এক আগ্নেয়াস্ত্র জমা হয়নি থানায়। গার্ডেনরিচে এক যুবক খুনের তদন্তে নেমে লালবাজারের এই ‘ভুল’-এর কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোন থানা এলাকায় ক’টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক আছে তার নথি থাকে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকধারীর নাম, ঠিকানা জানিয়ে ভোটের আগে লালবাজার থেকেই বিভিন্ন থানায় নির্দেশ যায়, সেগুলি ভোটপর্ব শেষ না হওয়া অবধি বাজেয়াপ্ত করে রাখার জন্য।
তা হলে লোকসভা ভোটের সময় গার্ডেনরিচ থানায় সেই বন্দুকটি জমা পড়ল না কেন? লালবাজারের এক কর্তা জানান, অস্ত্র বিভাগের কোন কর্মীর গাফিলতি ছিল তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশের বন্দর এলাকার ডেপুটি কমিশনার ভি সলোমন নিশাকুমার বলেন, “কী করে ওই ভুল হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
১৮ মে গার্ডেনরিচের ব্যানার্জিবাগান এলাকায় পুরসভার কলে জল নেওয়া ঘিরে গুলি চলে। নিহত হন মনোজ যাদব (৩০) নামে এক যুবক। পুলিশের অভিযোগ, মনোজ তাঁর প্রতিবেশী সঞ্জীব চৌধুরীর ছোঁড়া গুলিতে নিহত হন। সঞ্জীবের দাদা দীপকও ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ। তবে তাদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সঞ্জীব ও দীপক দু’জনেই একটি বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষী। তাদের দু’জনের কাছেই দো-নলা বন্দুক ছিল। অথচ লালবাজার মারফত গার্ডেনরিচ থানায় খবর ছিল, কেবল দীপকের কাছেই ওই বন্দুক রাখার লাইসেন্স রয়েছে। ভোটের আগে থানার নোটিস পেয়ে দীপক বন্দুকটি সংস্থার অফিসে জমাও দেন। খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, যে বন্দুক থেকে গুলি চলেছে, সেটি সঞ্জীবের। জানা যায়, সঞ্জীবের কাছে সেই বন্দুক রাখার লাইসেন্সও রয়েছে। অথচ তা জানতেন না থানার পুলিশকর্মীরা।
গার্ডেনরিচ থানা এলাকার ৬০ জন লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকধারীর নাম, ঠিকানা জানিয়ে লালবাজার থেকে যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল লোকসভা ভোটের আগে তাতে সঞ্জীবের নাম ছিল না। তাই থানা থেকে তাকে বন্দুক জমা দেওয়ার নোটিসও পাঠানো হয়নি। সঞ্জীবও থানায় তার বন্দুক জমা দেননি।
লালবাজারের এক কর্তা জানান, লোকসভা ভোটের সময় ২০০ জনের বেশি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকধারী সংশ্লিষ্ট তাঁদের অস্ত্র জমা দেননি। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সঞ্জীবের বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? উত্তরে ওই কর্তা বলেন, সঞ্জীবকে তো বন্দুক জমা দেওয়ার নোটিসই পাঠানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy