Advertisement
E-Paper

পুলিশকে প্রহার, পুলিশের প্রহার, দুই ছবি মহানগরের

যানশাসনকে কেন্দ্র করে এক জায়গায় গাড়িচালকের হাতে খোদ ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার অন্য জায়গায় সেই যানশাসন নিয়েই এক গাড়িচালককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত এক হোমগার্ড। ১৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এমন বিপরীত দু’টি ঘটনার সাক্ষী রইল শহর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৪ ০২:১০
প্রহৃত গাড়িচালক ভুবনেশ্বর দাস। —নিজস্ব চিত্র

প্রহৃত গাড়িচালক ভুবনেশ্বর দাস। —নিজস্ব চিত্র

যানশাসনকে কেন্দ্র করে এক জায়গায় গাড়িচালকের হাতে খোদ ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার অন্য জায়গায় সেই যানশাসন নিয়েই এক গাড়িচালককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত এক হোমগার্ড। ১৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এমন বিপরীত দু’টি ঘটনার সাক্ষী রইল শহর।

প্রথমটি ঘটেছে শনিবার রাতে দক্ষিণ শহরতলির পাটুলির পদ্মশ্রী মোড়ে। পুলিশ জানায়, এক ট্রাফিক সার্জেন্টকে মারধরের অভিযোগে সুনীল সিংহ চহ্বাণ নামে এক গাড়িচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে রবিবার বেলা এগারোটা নাগাদ। পুলিশ জানায়, লেক মার্কেট এলাকায় গাড়ি পার্কিং-কে কেন্দ্র করে শহরের এক প্রবীণ চিকিৎসকের গাড়িচালককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক হোমগার্ডের বিরুদ্ধে। গাড়িচালক ভুবনেশ্বর দাসের দাবি, এ দিন বিকেলে টালিগঞ্জ থানায় এ নিয়ে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

কী হয়েছিল পাটুলিতে?

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ গড়িয়া ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট রণবীর দাস পদ্মশ্রী মোড়ে ডিউটি করছিলেন। সেই সময়ে একটি এসইউভি লাল সিগন্যাল ভেঙে চলে যাচ্ছে দেখে আটকান তিনি। অভিযোগ, গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাইলে চালক সুনীল রাস্তায় নেমে এসে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি জোড়েন। তার পরে হঠাৎই ওই সার্জেন্টকে ধাক্কা দিতে থাকেন তিনি। বাধা দিলে বেমক্কা সার্জেন্টের মুখে তিনি ঘুষি চালিয়ে দেন বলেও অভিযোগ। কাছেই থাকা এক ট্রাফিক কনস্টেবল তখন তাঁর সাহায্যে এগিয়ে যান। ওই কনস্টেবলই মারমুখী গাড়িচালককে চেপে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন আরও কয়েক জন পুলিশ অফিসার ও কনস্টেবল। পরে সুনীলকে গ্রেফতার করে পাটুলি থানার পুলিশ।

গত ছ’মাসে কলকাতার রাজপথে কর্তব্যরত অবস্থায় একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্ট ও কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও কয়েক জন। কয়েকটি ক্ষেত্রে নিছক দুর্ঘটনা নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ধাক্কা দিয়েই গাড়িচালকেরা পুলিশদের মেরেছেন বলে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি। তাঁদের বক্তব্য, শনিবার পদ্মশ্রীর ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, যান-বিধি না মানায় আইনি ব্যবস্থা নিতে গেলেই এক শ্রেণির গাড়িচালক কী ভাবে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে মারমুখী হয়ে উঠছেন।

তবে পদ্মশ্রীর ঘটনার প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে, রবিবার তারই উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে সাবেক লেক মার্কেট, অধুনা লেক মলের সামনে।

পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের এক নামী অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞের স্ত্রী গাড়ি নিয়ে লেক মার্কেটে বাজার করতে গিয়েছিলেন। গাড়িচালক ভুবনেশ্বর দাস লেক মলের সামনে গাড়ি দাঁড় করান। রঞ্জিত গায়েন নামে টালিগঞ্জ ট্রাফিক গার্ডের এক হোমগার্ড গিয়ে সেখান থেকে গাড়িটি সরিয়ে নিতে বলেন। পুলিশের একাংশের দাবি, ওই গাড়িচালক লেক মলের সামনে ‘ডবল লাইনে’ গাড়ি রেখেছিলেন, যা ওই জায়গায় নিয়মবিরুদ্ধ।

ভুবনেশ্বরের অবশ্য অভিযোগ, যানশাসনের নামে ওই হোমগার্ড তাঁকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করা শুরু করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে লাথি-ঘুষি মারেন ওই হোমগার্ড। ভুবনেশ্বরের কপাল ফেটে যায়। সেখানে চারটি সেলাই পড়েছে। এর পরেই তিনি ফোন করে ওই চিকিৎসকের স্ত্রীকে ঘটনাটি জানান। ততক্ষণে শপিং মলের সামনে থাকা লোকজন হোমগার্ডকে ঘিরে ফেলেছিলেন। সেই সময়ে এক পুলিশকর্মী গিয়ে হোমগার্ডকে ঘেরাওমুক্ত করেন। তা না হলে উত্তেজিত জনতার হাতে ওই হোমগার্ডের প্রহৃত হওয়ার আশঙ্কা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

police beaten sunil singh chawan bhubaneswar das
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy