Advertisement
E-Paper

পড়শিকে হারিয়ে নিঝুম বো-ব্যারাক

অন্য দিনের মতোই আলোয় ঝলমল করছে বো-ব্যারাক। অথচ কোথাও যেন প্রাণের সাড়া নেই। উত্‌সবের আনন্দ এ ভাবে বিষাদে বদলে যেতে পারে, বুধবার রাত পর্যন্তও তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি না ক্লাইডের মা জ্যাকি। বো-ব্যারাকে পড়শিদের সঙ্গে হইচইয়ে মেতে ছিলেন। হঠাত্‌ই একটা ফোন। নিমেষে বদলে গেল ছবিটা। চারপাশে সকলের চোখে-মুখে খুশির ঝলকানিও হারিয়ে গেল নিমেষে।

বিদীপ্তা বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০১
ক্লাইড ভেনচুরা

ক্লাইড ভেনচুরা

অন্য দিনের মতোই আলোয় ঝলমল করছে বো-ব্যারাক। অথচ কোথাও যেন প্রাণের সাড়া নেই।

উত্‌সবের আনন্দ এ ভাবে বিষাদে বদলে যেতে পারে, বুধবার রাত পর্যন্তও তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি না ক্লাইডের মা জ্যাকি। বো-ব্যারাকে পড়শিদের সঙ্গে হইচইয়ে মেতে ছিলেন। হঠাত্‌ই একটা ফোন। নিমেষে বদলে গেল ছবিটা। চারপাশে সকলের চোখে-মুখে খুশির ঝলকানিও হারিয়ে গেল নিমেষে। হতভম্ব মুখে ক্লাইড ভেনচুরার বন্ধুবান্ধবরা ছুটলেন গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের দিকে। কানাঘুষো শুনে পিছনে ছুটলেন জ্যাকিও। একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, ততক্ষণে তা শুনেছেন। কিন্তু তাতে যে তাঁর একমাত্র ছেলেই মারা গিয়েছে, তা জানতে পারলেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে।

গত সোমবার থেকেই উত্‌সবে মেতেছিল বো-ব্যারাক। রোজই সন্ধ্যা গড়ালেই কিছু না কিছু অনুষ্ঠান।

বো-ব্যারাকের বাসিন্দারা তো বটেই, সেই হুল্লোড়ে মাততে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এসে ভিড় জমাতেন মানুষ। সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান ছিল বুধবার রাতে। বড়দিনের উত্‌সব শুরু হয়ে যায় রাত ১২টার পরে। ‘মিডনাইট মাস’ শেষে বাসিন্দারা তখন একে একে জড়ো হচ্ছেন ব্যারাক চত্বরে। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একটি গীর্জা থেকে বেরিয়ে মোটরবাইকে ক্লাইডও সেখানেই আসছিলেন। তার মধ্যেই ম্যাটাডরের সঙ্গে সংঘর্ষ।

বৃহস্পতিবার, বড়দিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চার দিকে উত্‌সবের সাজ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু প্রাণটাই নেই আর। সকলের চোখে মুখে বিষাদের ছাপ। সকাল থেকেই বো-ব্যারাক জুড়ে জটলা করে ছিলেন মানুষ। কারও চোখে জল, কারও বা মুখ থমথমে। সন্ধে হতেই ভিড় বাড়ছিল একটু একটু করে। শহরের নানা প্রান্ত থেকে বরাবরের মতোই উত্‌সবমুখর ভিড়টা ঢুকে পড়ে বো-ব্যারাকের সুনসান, নিস্তব্ধ অলিগলিতে। বুধবার মধ্যরাত পর্যন্তও যেখানে উত্‌সবের মেজাজ ছিল পুরোদমে, সেখানে বড়দিনের সন্ধেয় এমন চেহারা দেখে তাঁরাও হতবাক। রাস্তার মাঝখানে ক্রিসমাস ট্রি-র পাশে নিজস্বী তোলা দলগুলোতেও ঘুরপাক খেয়েছে প্রশ্ন।

উল্টোডাঙা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন পৌলমী দাস। বুধবার রাত ১টা পর্যন্তও বো-ব্যারাকেই অনুষ্ঠান দেখেছেন। এ দিনও তাই হুল্লোড়ে মাততে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু আগের দিনের চেয়ে পরিবেশটা এত অন্যরকম কেন? বুঝে উঠতে পারছিলেন না কেউই। বো-ব্যারাকে বড়দিন উত্‌সব আয়োজকদের তরফে ফিলিপ্‌স অগাস্তিন বলেন, “ক্লাইডের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তাই আজ উত্‌সব পালন করছি না।”

পুলিশি আইনকানুন মিটিয়ে এ দিন সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ ক্লাইডের মৃতদেহ পৌঁছয় বাড়ির সামনে। চারপাশে ভিড় করে এলাকার মানুষ। বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীরা বিষণ্ণ মুখে দাঁড়িয়ে। বাড়ির ভিতরে মা জ্যাকি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন পড়শিরা।

আলোয় মোড়া নিউ মার্কেট, পার্ক স্ট্রিটে ততক্ষণে জনজোয়ার। আলোগুলো জ্বলছিল বটে, তবু নিষ্প্রভই হয়ে রইল বড়দিনের বো-ব্যারাক।

bidipta biswas clyde ventura bow barracks accident death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy