Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে সাড়া দিল না হেল্পলাইন

রাত দশটা থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। প্রায় প্রতিদিনই এই সময়ে অন্ধকার হয়ে যায় বাগুইআটির গৌতমপাড়ায়। ঘণ্টাখানেক পরেই চলে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে কিন্তু এল না। রাত বারোটা বেজে যাওয়ার পরেও আলো না আসায় বাসিন্দারা ফোন করলেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হেল্পলাইনে। ফোন বেজেই গেল। বারবার ফোন করলেও কেউই ধরেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩৭
Share: Save:

রাত দশটা থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। প্রায় প্রতিদিনই এই সময়ে অন্ধকার হয়ে যায় বাগুইআটির গৌতমপাড়ায়। ঘণ্টাখানেক পরেই চলে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে কিন্তু এল না। রাত বারোটা বেজে যাওয়ার পরেও আলো না আসায় বাসিন্দারা ফোন করলেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার হেল্পলাইনে। ফোন বেজেই গেল। বারবার ফোন করলেও কেউই ধরেননি।

সম্প্রতি একই অভিজ্ঞতা হয়েছে সল্টলেকের ইই ব্লকের বাসিন্দাদেরও। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ ব্লকের কিছু কিছু বাড়িতে হঠাৎই আলো চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও আলো না আসায় অনেকেই বণ্টন সংস্থার হেল্পলাইনে ফোন করতে শুরু করেন। এখানেও কেউ ফোন ধরেননি। বেশি রাতের দিকে কোনও কোনও বাড়িতে বিদ্যুৎ এলেও অন্ধকারে থেকে যান অনেক গ্রাহকই।

হেল্পলাইনে কেউ ফোন ধরছেন না কেন?

বণ্টন সংস্থার কর্তাদের অবশ্য দাবি, ফোন ধরা হচ্ছে। গরম বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে এক জন গ্রাহকের ফোন ধরতে গিয়ে অন্য জনের ফোন অনেক সময়ে ধরা যাচ্ছে না। তবে ফোন না ধরার অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন বিদ্যুৎকর্তারা।

বণ্টন এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দারা অবশ্য অন্য কথা বলছেন। বাগুইআটির গৌতমপাড়ার বাসিন্দা সোমা চক্রবর্তীর অভিযোগ, “রাত ১২টা ২০ থেকে আমরা হেল্পলাইনে ফোন করতে শুরু করি। বারবার ফোন করলেও কেউ ধরেননি। রাত দুটো নাগাদ কেউ এক জন ফোনের রিসিভার তুলে ফের নামিয়ে রেখে দেন। এর পরে মাঝেমধ্যেই হয় শুধু ফোন বেজে গিয়েছে, নয়তো এনগেজড টোন পেয়েছি।” সোমাদেবীর দাবি, অবশেষে সকাল ছ’টা দশ মিনিটে হেল্পলাইনের ফোন ধরে রিপোর্ট নেওয়া হয়। সকাল ন’টা নাগাদ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা আসেন লাইন ঠিক করতে।

হেল্পলাইন এখন বণ্টন সংস্থার লাইফলাইন বলা যায়। সারা বছর ওই ফোন নম্বরের মাধ্যমেই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর এসে পৌঁছয় বণ্টন সংস্থার ঘরে। গ্রাহকের অভিযোগ শোনার পরে লাইন সারানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। লাইন ঠিক হয়ে গেলে গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস করে তা জানিয়ে দেওয়ার নিয়মও রয়েছে। তবে সব সময়ে যে হেল্পলাইন কাজ করে না, এমন নয়। গ্রাহকদের উল্টো অভিজ্ঞতাও রয়েছে। হেল্পলাইনে ফোন করে চটজলদি কাজ হয়েছে, এমন উদাহরণও প্রচুর। কিন্তু গরম যত বাড়ছে, বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেব্ল ফল্ট, ফিউজ উড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা বেশি হচ্ছে। ফলে অনেক সময়েই হেল্পলাইনের ফোন নানা অছিলায় এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে। আর তার জেরেই ভুগতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

যেমন গৌতমপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, “সারারাত আলো না আসায় বাড়ির ইনভার্টারের চার্জও শেষ হয়ে গিয়েছে। রাত ১টার পরে তাই পুরো বাড়ি অন্ধকার। পাম্প চালানো যায়নি। ফলে জলও ওঠেনি ট্যাঙ্কে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অনেক রাত পর্যন্ত হেল্পলাইনে ফোন করার পরেও কেউ ফোন না ধরায় তাঁরা লালবাজারে ফোন করে অভিযোগ জানান। এলাকার এক বাসিন্দা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “লালবাজার থেকে আমাদের বিদ্যুৎ ভবন ও স্থানীয় বাগুইআটি থানার ফোন নম্বর দেয়। বিদ্যুৎ ভবনের ফোনও সারা রাতে কেউ ধরেনি। বাগুইআটি থানার অফিসাররা ‘দেখছি, দেখছি’ করেই দায় এড়িয়েছেন। কাজের কাজ কিছু হয়নি।”

বণ্টন সংস্থার চেয়ারম্যান নারায়ণস্বরূপ নিগম জানাচ্ছেন, হেল্পলাইনের ফোন ধরা হচ্ছে না, এমন কিছু অভিযোগ তাঁর কাছেই এসেছে। তবে সেই সংখ্যাটা খুবই কম। তিনি বলেন, “একটা অভিযোগ এলেও, তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। আমাদের তরফ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, হেল্পলাইনের ফোন ধরে গ্রাহকের অভিযোগ জানতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

power crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE