Advertisement
E-Paper

ভ্যাটমুক্ত শহরের জন্য ১৫৩ কোটি বরাদ্দের সিদ্ধান্ত

কলকাতা শহরকে ভ্যাটমুক্ত করবে পুর-প্রশাসন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় ভ্যাটগুলি সরিয়ে বসানো হবে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কম্প্যাক্টর। রাজ্য সরকার এবং জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের টাকায় ৩৬৩টি কম্প্যাক্টর যন্ত্র বসানো হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৭:৩৬
পুরসভার কম্প্যাক্টর যন্ত্র। —ফাইল চিত্র।

পুরসভার কম্প্যাক্টর যন্ত্র। —ফাইল চিত্র।

কলকাতা শহরকে ভ্যাটমুক্ত করবে পুর-প্রশাসন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শহরের বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় ভ্যাটগুলি সরিয়ে বসানো হবে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কম্প্যাক্টর। রাজ্য সরকার এবং জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের টাকায় ৩৬৩টি কম্প্যাক্টর যন্ত্র বসানো হবে। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্যের নগরোন্নয়ন সচিব ও কলকাতা পুরসভার কমিশনারের এক বৈঠক হয়। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রায় ১৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে ওই প্রকল্পে। ওই টাকাতেই রাজারহাটে একটি নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ডও করা হবে। এর পাশাপাশি টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারেও ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে।

রাজ্যে ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, শহরকে পরিষ্কার রাখতে হবে। ভ্যাট-মুক্ত করতে হবে। সেই কাজের অগ্রগতি নিয়ে একাধিক বার পুর প্রশাসনকে সতর্কও করেছেন তিনি। মেয়র ও মেয়র পারিষদকে ডেকে ধমকও দিয়েছেন। তাই ওই কাজে যাতে কোনও খামতি না থাকে, তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালান তাঁরা।

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি শহরকে ভ্যাট-মুক্ত করা ছিল আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এ বার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পথে।” একইসঙ্গে শহরের ঐতিহ্যশালী টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারেও বরাদ্দ মিলেছে। গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকারের জেএনএনইউআরএম-এর কাছে টালা ট্যাঙ্কের সংস্কারে আর্থিক সহায়তা চেয়ে প্রকল্প-রিপোর্ট পাঠায় রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর। তার প্রেক্ষিতেই এ দিন দিল্লিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানানো হয়। শোভনবাবু জানান, ওই ট্যাঙ্ক সংস্কারের জন্য ৬৭ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। তাতে প্রায় ১০০ বছরেরও পুরনো ওই ট্যাঙ্কের ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে তোলা যাবে।

শহরের যত্রতত্র জমে থাকা জঞ্জাল নিয়ে এক সময় বিস্তর অভিযোগ উঠেছে পুরসভায়। শহরবাসীর অভিযোগে নাজেহাল অবস্থা পুর-প্রতিনিধিদেরও। এমন কিছু এলাকা রয়েছে, যেখানে পথচলতি মানুষকে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে চলতে হয়। এ বার সেই চিত্রটা বদলাবে বলে মনে করছেন মেয়র-সহ পুর প্রতিনিধিরাও।

মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানান, ইতিমধ্যেই পাইলট প্রোজেক্ট হিসেবে ১৬টি জায়গায় স্বয়ংক্রিয় কম্প্যাক্ট যনন্ত্র বসানো হয়েছে। তাতে সেই সব এলাকায় জঞ্জাল অপসারণের কাজে গতি এসেছে। শোভনবাবু জানান, শহরের সৌন্দর্যায়নে রাস্তায় জমে থাকা জঞ্জাল একটা বড় সমস্যা ছিল। এ বার তার স্থায়ী সমাধান করা যাবে। শহরের কোন কোন জায়গায় ওই কম্প্যাক্টর মেশিন বসানো হবে, তা ঠিক করবে জঞ্জাল দফতরের নেতৃত্বাধীন এক বিশেষ কমিটি।

ধাপা নিয়েও রীতিমতো কপালে ভাঁজ পড়েছিল পুর প্রশাসনের। বর্তমানে ধাপায় আর জঞ্জাল ফেলার জায়গা নেই। রাজারহাটে জমি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল পুর প্রশাসন। মেয়র জানান, সরকার রাজারহাটে প্রায় ৩০ একর জায়গা দেওয়ার কথা জানায়। এর মধ্যে ২০ একর ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গায় নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার জন্য প্রকল্প পাঠানো হয় জেএনএনইউআরএমের কাছে। নয়াদিল্লিতে এ দিনের বৈঠকে সে বাবদও ৪৪ কোটি বরাদ্দ হয়েছে।

১০৪ বছরের পুরনো টালা ট্যাঙ্কের সংস্কার নিয়ে চিন্তায় ছিল সরকার। এ দিন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, ৯০ লক্ষ গ্যালন জলধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন ওই জলাধারকে সুরক্ষিত রাখতে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের দ্বারস্থ হয় পুরসভা। সেই মতো আর্থিক সাহায্যের জন্য প্রকল্পটি জেএনএনইউআরএম-এর কাছে পাঠানো হয়েছিল। প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ দেবে রাজ্য। বাকি টাকা মিলবে কেন্দ্রীয় সংস্থা থেকে।

পুরসভা সূত্রের খবর, মাস কয়েক ওই ট্যাঙ্কের সমীক্ষা করতে গিয়েই কয়েকটি ছিদ্র ধরা পড়ে। পুরসভার এক পদস্থ অফিসারের কথায়, “১০০ বছরের আগে লন্ডনে তৈরি ইস্পাত দিয়ে গড়া হয়েছিল টালার বিশালাকায় এই জল ট্যাঙ্ক। ঠিক ওই ধরনের ইস্পাত দিয়েই তৈরি হয়েছিল টাইটানিক জাহাজও।” তিনি জানান, ওই জলাধার তৈরির পর থেকে কোনও কাজ করা হয়নি। পরে অবস্থা যাচাইয়ের জন্য খড়গপুর আইআইটি, যাদবপুর ও শিবপুরের একদল বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই একটি প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হয়েছিল নয়াদিল্লিতে।

garbage cleaning money allocate municipality shovon mukhopadhya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy