Advertisement
E-Paper

মহিলার পচাগলা দেহ উদ্ধার, উধাও সঙ্গী

ভোটের ফল ঘোষণার দিনও দু’জনকে এক সঙ্গে বাজার করে বাড়ি ফিরতে দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পর থেকে আর তাঁদের দেখা মেলেনি। এর ৪৮ ঘণ্টা পরে রবিবার সকালে পচাগলা অবস্থায় ওই মহিলাকে ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতের নাম অঞ্জনা নস্কর (৩৩)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৪ ০২:২৪
অঞ্জনা নস্কর

অঞ্জনা নস্কর

ভোটের ফল ঘোষণার দিনও দু’জনকে এক সঙ্গে বাজার করে বাড়ি ফিরতে দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পর থেকে আর তাঁদের দেখা মেলেনি। এর ৪৮ ঘণ্টা পরে রবিবার সকালে পচাগলা অবস্থায় ওই মহিলাকে ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতের নাম অঞ্জনা নস্কর (৩৩)। পুলিশের ধারণা, তাঁকে খুন করা হয়েছে। অঞ্জনার সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

ঘটনাস্থল বাগুইআটি থানার জগৎপুর বাজারের সন্তোষপল্লি। স্থানীয়েরা পুলিশকে জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন অঞ্জনা ও তাঁর সঙ্গী তাপস। বাড়িওয়ালা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দু’জনে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী বলেই পরিচয় দিয়েছিলেন। বাড়ির মালিক বিক্রমজিৎ হালদার রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজার। ওই বাড়িতে মোট পাঁচ ঘর ভাড়াটে রয়েছেন।

পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে অঞ্জনাদের ঘর থেকে পচা গন্ধ ছড়ায়। পুলিশে খবর যায়। তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুলিশ দেখে, বিছানার উপরে চিৎ হয়ে পড়ে অঞ্জনার পচাগলা দেহ। দু’হাত মাথার উপরে তোলা, ডান পা বিছানার উপরে রাখা, অন্য পা বিছানা থেকে ঝুলছে। তদন্তকারীরা জানান, দেহটি এতটাই পচে গিয়েছিল যে তোলার সময়ে চামড়া খসে খসে পড়ছিল।

তিন তলা ওই বাড়ির আড়াই তলার ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন তাপস-অঞ্জনা। একটি ঘরের লাগোয়া একটি ডাইনিং রুম, রান্নাঘর ও বাথরুম। তদন্তকারীরা ঘরে ঢুকে দেখেন, ঘর পরিপাটি করে সাজানো। তবে ওই ঘরের মেঝেতে হলুদ রঙের তরল পদার্থ পড়ে ছিল, যার নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, অঞ্জনার বাড়ি বালির নিশ্চিন্দায়। তাঁর মা আছেন। অঞ্জনা কোথায় কাজ করতেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। একটি সূত্রের খবর, তিনি পার্ক স্ট্রিটে কোনও বারে কাজ করতেন। বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “এটি ত্রিকোণ প্রেমের ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, মহিলার সঙ্গে আরও এক জনের সম্পর্ক হয়েছিল। তার জেরেই তাপস অঞ্জনাকে খুন করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বাড়িওয়ালা জানান, তাপস তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি দুর্গাপুরের একটি কারখানায় কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী অঞ্জনা সেক্টর ফাইভে একটি কল সেন্টারের কর্মী। গৃহকর্ত্রী মঞ্জুলা হালদার বলেন, “১৬ মে সকালে দু’জনে বাজার করে বাড়ি ফিরছিল। কিন্তু তার পরে আর দেখিনি। সন্ধ্যায় অঞ্জনার এক বান্ধবী এসেছিল। ঘরের বাইরে তালা দেখে তিনি ফিরে যান। পরদিনও এক মহিলা ওঁদের সঙ্গে দেখা করতে এসে ফিরে যান।” বিক্রমজিৎবাবু দাবি করেন, টানা দু’দিন ঘর বন্ধ দেখে তাঁরা দু’জনের মোবাইলে ফোন করেছিলেন। কিন্তু দু’টি মোবাইলই বন্ধ ছিল।

বাড়িওয়ালা এবং স্থানীয়েরা জানান, তাপস মাসে দু’-তিন বার আসতেন। অঞ্জনা সকাল ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোতেন। ফিরতেন রাত ৮টায়। কোনও দিন রাত বেশি হলে একটি গাড়ি এসে পাড়ার মোড়ে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে যেত।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই দু’জনের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য বাড়িওয়ালা কিংবা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। মনে করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে। সল্টলেক কমিশনারেটের এসিপি অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেল মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

ভাড়াটে সম্পর্কে তথ্য রাখতে বিধাননগর পুলিশ বার বার বাড়িওয়ালাদের আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু বাড়িওয়ালাদের হুঁশ যে ফেরেনি, এই ঘটনায় ফের তার ফের প্রমাণ মিলল। বিক্রমজিৎবাবু বলেন, “ওঁদের কাছে তথ্য চেয়েছিলাম। কিন্তু দিচ্ছি, দেব করে আর দেয়নি। আমরাও আর জোর করিনি।”

woman unnatural death decomposed body recovery baguihati
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy