বদলায়নি ছবিটা। ছবি: অরুণ লোধ
ক্ষমতায় আসার পরে শহরের বড় রাস্তাগুলি ভ্যাটমুক্ত করতে কলকাতা পুরসভাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিন বছর পরেও সে কাজ করে উঠতে পারল না পুরসভা। মেয়াদ শেষ হয়ে আসা পুরবোর্ডের এ নিয়ে বিশেষ হেলদোলও নেই বলে অভিযোগ। যেমন, ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে এক দশক ধরে থাকা ভ্যাটটি আজও উচ্ছেদ হল না।
ডায়মন্ড হারবার রোডের উপরে ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের এই ভ্যাটের পাশেই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভ্যাটের দুর্গন্ধের মধ্যেই চলে পড়াশোনা। পথচারীরা নাক চেপে যাতায়াত করেন। ভ্যাট এড়াতে অনেক সময় রাস্তার মাঝখানে চলে আসেন পথচারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠিক সামনে রয়েছে ওই ভ্যাট। পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। আগে স্কুলের দরজার সামনেই ময়লা পড়ত। দু’বছর আগে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠায় সাময়িক ভাবে নড়েচড়ে বসেন পুর-কর্তৃপক্ষ। মাস ছয়েক নিয়ম করে আবর্জনা পরিষ্কার হয়। কিন্তু ভ্যাটটি সরানোর কোনও চেষ্টা হয়নি। উপরন্তু বছর দুই আগে ওখানে পাঁচিল তুলে কন্টেনার বসিয়ে পাকাপাকি ভ্যাট তৈরি হয়। এর জেরে বাচ্চারা তো নাজেহাল হচ্ছেই, নিত্য সমস্যার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারী।
নিত্যযাত্রী শ্যামল রজক জানান, ভ্যাটের সামনে অনেকে বিসদৃশ ভাবে প্রস্রাব করতে দাঁড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি খুবই অস্বস্তিকর। ছোটদের এই অপ্রীতিকর দৃশ্যের মুখোমুখি হতে হয়। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলে আসছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, দুর্গন্ধের ঠেলায় মাঝেমধ্যে দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হয়। গ্রীষ্ম আর বর্ষায় বেশি কষ্ট হয়। কখনও আবর্জনা ডায়মন্ড হারবার রোডের মাঝে চলে আসে।
বাসিন্দারা জানান, এক সময়ে এই ভ্যাট মাধব হালদার রোড এবং কেদার চ্যাটার্জি রোডের মোড়ে ছিল। একটু একটু করে সরে বর্তমান জায়গায় এসেছে প্রায় এক দশক। নিয়মিত আবর্জনা ফেলা ছাড়াও পাঠকপাড়া মোড় এবং বনমালী নস্কর রোডের দু’টি খাসির মাংসের দোকানের ছাট এবং ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রেস্তোরাঁর উচ্ছিষ্টও এখানে ফেলা হয়। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এই দুর্গন্ধে কিছু ক্ষণ থাকলে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের অশোকা মণ্ডল বলেন, “সমস্যার কথা শুনেছি। আমার ওয়ার্ড ১৩ নম্বর বরোর অন্তর্গত। কিন্তু ডায়মন্ড হারবার রোডের ওই অংশের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর বরো। তারাই বলতে পারবেন এ বিষয়ে।” এই প্রসঙ্গে ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় জানান, এই শহরের বড় রাস্তা ভ্যাট মুক্ত করা প্রায় অসম্ভব। ওখান থেকে ভ্যাট যেখানে সরানো হবে সেখানে প্রতিবাদ উঠবেই। বর্জ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, “ওখান থেকে ভ্যাট হয়ত সরানো সম্ভব হবে না। তবে এটুকু আশ্বস্ত করতে পারি যে, কয়েক মাসের মধ্যেই শহর জুড়ে ময়লা সংগ্রহের পদ্ধতি আধুনিক করার কাজ শুরু হবে। খোলা ভ্যাট তুলে কম্প্যাক্টর বসানো হবে। এই কাজ হতে আর তিন থেকে চার মাস সময় লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy