সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জেলবন্দি সাংসদ কুণাল ঘোষকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হবে কি না, শনিবার বেশি রাত পর্যন্ত তা নিয়ে টানাপড়েন চলে। আর তার মধ্যেই প্রেসিডেন্সি জেলের আধিকারিকদের লাগাতার কাউন্সেলিংয়ের পরে ওই রাতে ফের খাওয়াদাওয়া শুরু করেন কুণাল। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক না-হওয়ায় রবিবারেও তাঁকে জেল হাসপাতালেই রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, শারীরিক সমস্যার চেয়েও কুণালের বড় সমস্যা মানসিক অবসাদ। তা কাটানোর জন্য ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
গ্রেফতারের পরে কয়েক দফায় খাদ্য বর্জন করেছেন কুণাল। এ বারেও কয়েক দিন ধরে মোটেই খাওয়াদাওয়া করছিলেন না। এমনকী জলও খাচ্ছিলেন খুব কম। তার জেরে তাঁর শরীরে জলশূন্যতা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে জেলের হাসপাতালে পাঠানো হয়। শরীরে এতটাই জলাভাব দেখা দিয়েছিল যে, একটানা প্রায় ২২ ঘণ্টা তাঁর প্রস্রাব হয়নি। তাই রবিবার তাঁকে জেলের হাসপাতাল থেকে সোজা এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নবান্ন থেকে আসা একটি ফোনে সব কিছুই বদলে যায় বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
কুণালের পিজি যাওয়া স্থগিত হয়ে যায়। তার পরেই জেলের আধিকারিক ও চিকিৎসকেরা স্থির করেন, যে-ভাবেই হোক তাঁরা সারদা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া এই সাংসদকে খেতে রাজি করাবেন। শুরু হয় কাউন্সেলিং। জেলের খবর, রাত ১০টা নাগাদ চা আর একটি বিস্কুট খেতে রাজি হন তিনি। ১১টা নাগাদ খান একটি রুটি আর ডিমের ঝোল। রবিবার সকালে চা, পাউরুটি, কলা এবং দুপুরে ভাত খেয়েছেন কুণাল। দফায় দফায় খাওয়ানো হচ্ছে ওআরএস। তাঁকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে ডাক্তারদের উপস্থিতিতেই। কুণাল কিছু দিন আগেই ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। কী ভাবে তিনি একসঙ্গে বেশি ঘুমের ওষুধ জোগাড় করেছিলেন, এখনও সেই রহস্যের সমাধান হয়নি। তবে তার পর থেকে তাঁকে তো বটেই, সব বন্দিকেই ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে।
শনিবার এসএসকেএমের কয়েক জন চিকিৎসক জেল হাসপাতালে গিয়ে কুণালকে দেখে আসেন। আজ, সোমবার ফের তাঁদের যাওয়ার কথা। এসএসকেএম সূত্রের খবর, আপাতত কুণালকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। জেল হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলবে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পুলিশ ভ্যান বা অ্যাম্বুল্যান্সে যাতায়াতের পথে সাংবাদিকদের সামনে সরকার-বিরোধী বক্তব্য পেশ করতে পারেন কুণাল, এই আশঙ্কায় নবান্নের কর্তারা জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন, দরকার হলে এসএসকেএমের চিকিৎসকদের নিয়মিত জেল হাসপাতালে পাঠিয়ে তাঁকে পরীক্ষার ব্যবস্থা হবে।
সারদা কেলেঙ্কারিতে ধৃত অন্যতম তৃণমূল সাংসদ সৃঞ্জয় বসু কিছু দিন ধরে পিজি-তে ভর্তি আছেন। শিরদাঁড়া ও ঘাড়ে ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় তাঁর এমআরআই করানো হয়েছে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy