কুন্তল দাবি করেছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ ছিল না। — নিজস্ব চিত্র।
আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের মতোই তাঁর সম্পত্তি রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘রাস্তার লোকের যেমন থাকে।’’ কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কারণেই সমস্যায় পড়েছে তাঁর পরিবার। সন্তানদের স্কুলের ফিজ় পর্যন্ত দিতে পারছেন না বলে দাবি করলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষ। সব কিছুর জন্য তিনি সংবাদমাধ্যমকেই দায়ী করলেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ ছিল না।
বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলায় আলিপুর জাজেস কোর্টে কুন্তলকে হাজির করায় সিবিআই। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শুনানি চলছে তাঁর। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র চার্জশিটের সূত্রে তাঁর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কুন্তল বললেন, ‘‘এত সূত্র মারফত সম্পত্তি দেখালেন, শেষমেশ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন হয়ে গেল। ক্ষতি হল আমার পরিবারের। আমার পরিবার সমস্যার মুখে। ছেলেমেয়ের স্কুলের ফিজ় পর্যন্ত দিতে পারছি না।’’
ইডির একটি সূত্রে জানা গিয়েছিল, কুন্তলের বিরুদ্ধে চার্জশিটে প্রায় দু’কোটি টাকার হিসাব দেখানো হয়েছে। তার মধ্যে এক কোটি টাকা রয়েছে, যা অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত এবং পার্লারের মালিক সোমা চক্রবর্তী ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কুন্তলের অ্যাকাউন্টে। ঋণ বাবদ ওই টাকা কুন্তলের কাছ থেকে নিয়েছিলেন তাঁরা। পরে ইডির জেরার মুখে পড়ে সেই টাকা ফিরিয়ে দেন। সোমা ফিরিয়েছিলেন ৫৫ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। বনি ফিরিয়েছিলেন ৪৪ লক্ষ টাকা। চার্জশিটের হিসাব অনুযায়ী, দু’কোটি টাকার মধ্যে বাকি এক কোটি কুন্তলের সম্পত্তির সূত্রে মিলেছে। এই সম্পত্তির হিসাব নিয়েই কুন্তল আদালত চত্বরে মুখ খোলেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে যা সম্পত্তি রয়েছে, তা যে কোনও সাধারণ মানুষের কাছেই থাকে। ‘মিডিয়া ট্রায়াল’-এর কারণেই তিনি বিপাকে। কুন্তলের কথায়, ‘‘মিডিয়া ট্রায়াল চলার ফলে সব হয়েছে। যে ইমেজটা মা, মাটি, মানুষ এবং দলের সামনে করেছেন, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইডির চার্জশিটে দেখেছেন, আমার সম্পত্তি কিছুই নেই। একটা রাস্তার লোকের যেমন থাকে।’’
তা হলে তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে? এর নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক বিদ্বেষ’ই দেখছেন কুন্তল। তিনি বলেন, ‘‘গ্রেফতারের কারণ হল রাজনৈতিক বিদ্বেষ। আমার উপর রাজনৈতিক বিদ্বেষ।’’ তিনি বৃহস্পতিবার এ-ও জানিয়েছেন যে, তাঁর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ বা মানিকের কোনও যোগ নেই। কুন্তলের কথায়, ‘‘গীতায় হাত রেখে বলতে পারি যে, আমার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের কোনও সম্পর্ক নেই। কোনও সম্পর্ক ছিল না।’’
নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল বৃহস্পতিবারেও দুর্নীতির দায় ঠেলেছেন কুন্তলের দিকে। আদালতে ঢোকার মুখে তাপস বলেন, ‘‘কুন্তল ম্যাজিশিয়ান। ও সব জানে।’’ এই অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন কুন্তল। তিনি বলেন, ‘‘তাপস মণ্ডল কী ভাবে বললেন? হয়তো কোনও ম্যাজিক দেখিয়েছে, ওঁকে হয়তো কোনও ম্যাজিশিয়ান এ সব বলেছেন।’’ আদালতে চত্বরে মৌসুমী কয়ালের নামও তুলেছেন কুন্তল। মৌসুমী ‘এজেন্ট’ তাপসের দফতরে কাজ করতেন। তিনি বলেন, ‘‘মৌসুমী কয়াল জানতাম তাপস মণ্ডলের এজেন্ট। কত টাকা তুলেছে জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy