বৃহস্পতিবার কুন্তল ঘোষ (ডান দিকে)-এর মুখে উঠে এল তাপস মণ্ডলের ‘এজেন্ট’ মৌসুমী কয়াল (বাঁ দিকে)-এর নাম। — ফাইল ছবি।
পার্থ-অর্পিতা, কুন্তল এবং তাঁর স্ত্রী জয়শ্রী, শান্তনু-হৈমন্তী, অয়ন-শ্বেতার পর কি নতুন চরিত্রের সন্ধান মিলল নিয়োগ দুর্নীতিতে? বৃহস্পতিবার কুন্তল ঘোষের মুখে উঠে এল তাপস মণ্ডলের ‘এজেন্ট’ মৌসুমী কয়ালের নাম। এই মৌসুমীই কামদুনির সেই প্রতিবাদী চরিত্র। এর আগেও মৌসুমীর নাম উঠেছিল। সে সময় তিনি তাপসের বিরুদ্ধে এক গুচ্ছ অভিযোগ করেছিলেন সংবাদমাধ্যমে। যদিও বৃহস্পতিবার কুন্তলের মন্তব্যের পর তিন বার মৌসুমীকে ফোন করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি ফোন তোলেননি।
মহিষবাথানে তাপসের ট্রেনিং সেন্টারে কাজ করতেন কামদুনিকাণ্ডের প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী। পাঁচ-ছ’মাস বেতন না পেয়ে সেই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। মৌসুমী বলেছিলেন, তাপসকে জেরা করলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আরও বড় বড় নাম উঠে আসবে। এ বার সেই মৌসুমীকে সরাসরি তাপসের ‘এজেন্ট’ বলে উল্লেখ করলেন কুন্তল। তিনি বলেন, ‘‘মৌসুমী কয়াল জানতাম তাপস মণ্ডলের এজেন্ট। কত টাকা তুলেছে জানি না।’’
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপসকে ১৯ ফেব্রুয়ারি, রবিবার গ্রেফতার করা হয়। তাপস নিজে তখন বলেছিলেন, কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল, সেটা তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না। কারণ, তিনি তদন্তে সহযোগিতাই করছিলেন। অন্য দিকে, আনন্দবাজার অনলাইনকে তাপসের অফিসের প্রাক্তন কর্মী মৌসুমী বলেছিলেন, ‘‘এই গ্রেফতারি তো স্বাভাবিক। আমার মতে, আরও আগে ওঁকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। অনেক বছর দেরি হল।’’
মৌসুমী তখন দাবি করেছিলেন, ‘‘এ রাজ্যে বিএড কলেজগুলোতে কাউন্সেলিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন তাপস। এই দায়িত্ব ওঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং মানিক ভট্টাচার্য (প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি)। তবে একা মানিক নন, এই দুর্নীতি কাণ্ডে আরও বড় বড় মাথা রয়েছেন। সেগুলো তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।’’ এর পর জুড়ে দিয়েছিলেন, ‘‘অনেক দেরি হল গ্রেফতারিতে। এত দিন হয়তো ইডিকে তদন্তে সহযোগিতা করেছেন তাপস। কিন্তু এখনও উনি পুরোপুরি মুখ খোলেননি। অনেক কথা ওঁর পেটে আছে। আমি সাধারণ মানুষ হিসাবে বলতে পারি, যে ভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন উনি, তার বিচার হোক। উনি রাজসাক্ষী হোন। সাজা ওঁর প্রাপ্য।’’
আনন্দবাজার অনলাইনকে মৌসুমী সে সময় জানিয়েছিলেন, বছর দেড়েক ধরে মহিষবাথানে তাপসের একটি অফিসে কাজ করতেন তিনি। দীনদয়াল উপাধ্যায় কেন্দ্রীয় কারিগরি শিক্ষা প্রকল্পের কাজ ছিল। সব মিলিয়ে ১৩-১৪ জন মিলে কাজ করতেন। কিন্তু কেউই সময়মতো পারিশ্রমিক পাননি। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা একসঙ্গে অনেকে কাজ ছেড়ে দিয়েছিলাম। মানুষ তো দু’টো টাকার জন্য কাজ করেন। কিন্তু যেখানে সময় মতো স্যালারিই দেবে না, সেখানে কাজ করে লাভ কী!’’ এখানেই থামেননি মৌসুমী। যোগ করেছিলেন, ‘‘যাঁদের কাছে কোটি কোটি টাকা আছে, তাঁরা কর্মীদের সামান্য কয়েক হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতেন না। আশ্চর্যের বিষয় হল, ওই অফিসে যিনি চা বানাতেন, তাঁকে পর্যন্ত টাকা দেননি। এঁরা এমনই মানুষ।’’
এ বার মৌসুমীর বিরুদ্ধেই টাকা তোলার অভিযোগ আনলেন কুন্তল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy