Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি-কিটে দেরি, ক্ষোভ ডাক্তারদের

কিটের অভাবে ডেঙ্গি রোগীদের রক্ত পরীক্ষার কাজ ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

হাসপাতালে ডেঙ্গি নির্ধারণের কিট ফুরিয়ে গেলে যথাসময়ে জানিয়েও পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি চিকিৎসকদের একাংশের মনে প্রশ্ন, ইচ্ছে করেই কিট পাঠাতে দেরি করছে কি স্বাস্থ্য ভবন!

কিটের অভাবে ডেঙ্গি রোগীদের রক্ত পরীক্ষার কাজ ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। কোথাওই মেডিক্যাল কলেজের কোনও কর্মীকে শো-কজ করা হয়নি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। তার মানে সঠিক সময়েই কিট ফুরিয়ে যাওয়ার কথা স্বাস্থ্য ভবনকে জানানো হয়েছিল। তবু কিট পেতে দেরি কেন?

সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কিটের যা দাম এবং কেনার প্রক্রিয়াও যতটা সরল, তাতে এই মহার্ঘ বস্তুটি পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।’’ ডাক্তারদের প্রশ্ন, তা হলে কি হাসপাতালে কিট না থাকাকে কোনও সমস্যাই বলে মনে করছেন না স্বাস্থ্যকর্তারা? সজলবাবুর দাবি, ‘‘এটা ইচ্ছাকৃতও হতে পারে।’’

কেন? চিকিৎসকদের আশঙ্কা, কিট থাকলে বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা হবে। তাতে আরও বেশি আক্রান্ত ধরা পড়বে। সরকারকে সমস্যার গুরুত্ব স্বীকার করে নিতে হবে। সেই কারণেই ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স-এর তরফে গৌতম মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘এটা জলের মতো স্পষ্ট যে ডেঙ্গি আক্রান্তের আসল সংখ্যা চাপতে কিট সরবরাহে ঢিলেমি দিচ্ছে সরকার।’’ কিট ফুরিয়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘লোকাল পারচেজ’ করতে পারছেন না কৈফিয়ত দেওয়ার ভয়ে, দাবি করেন তিনি।

তথ্য বলছে, সাগর দত্ত, বিধাননগর মহকুমা, বসিরহাট এবং বারাসত হাসপাতাল— উত্তর ২৪ পরগনার এই চার হাসপাতালে ডেঙ্গি পরীক্ষা হচ্ছে। দেগঙ্গায় জ্বর প্রায় মহামারির আকার নিলেও সেখানে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই! রক্ত পরীক্ষা হয় ২০ কিলোমিটার দূরে বারাসত হাসপাতালে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, রোগের প্রকোপ নিয়ে প্রকৃত চিত্র এড়াতেই এটা করা হচ্ছে।

কলকাতার এক প্রবীণ সরকারি চিকিৎসকের স্ত্রী সম্প্রতি এই সমস্যার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ, ওই হাসপাতালে র‌্যাপি়ড টেস্টে মহিলার ডেঙ্গি ‘নেগেটিভ’ এসেছিল। কিন্তু সন্দেহ হয় ওই চিকিৎসকের। ফের বাইরের ল্যাবরেটরিতে রক্ত পরীক্ষা করান তিনি। রিপোর্ট আসে ‘পজিটিভ’। ওই চিকিৎসকের প্রশ্ন, সরকারি মে়ডিক্যাল কলেজে এলাইজা-র পরিবর্তে র‌্যাপি়ড টেস্ট করা হল কেন? তা হলে কি ডেঙ্গি নির্ণয়টাই দায়সারা ভাবে হচ্ছে?’’ শহরের একটি মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসকের আবার ব্যাখ্যা, ‘‘ডেঙ্গি হলেই অবস্থা খারাপ, তা তো নয়। অনেকের তাই রক্তের নমুনা সংগ্রহ হলেও তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা হচ্ছে না।’’ তাঁর যুক্তি, ডেঙ্গির আলাদা কোনও চিকিৎসা নেই। ডেঙ্গি বুঝতে পেরে ডাক্তার হয়তো সেই মতোই চিকিৎসা করেন। কিন্তু রোগীকে তা জানতে দেওয়া হয় না। এ ভাবেও আক্রান্তের সংখ্যা কম নথিভুক্ত হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।

রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর জবাব, ‘‘আমাদের যে ৩২টা কেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষা হয়, তার সবগুলিতে কিট রয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। এর বাইরেও দিন কয়েকের মধ্যে হাবরায় একটা কেন্দ্র চালু হবে।’’

Dengue ডেঙ্গি Calcutta Medical College Dengue Testing Kit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy