অ্যাপোলো-তদন্তে এ বার ডাক পড়ল লালবাজারের গোয়েন্দাদের।
ফুলবাগান থানাই এত দিন অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত করছিল। যাবতীয় জিজ্ঞাসাবাদও এই থানার তদন্তকারী অফিসারেরাই করেছেন।
তা হলে লালবাজারের গোয়েন্দাদের প্রয়োজন পড়ল কেন? পুলিশ সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তদন্ত যে দিকে এগিয়েছে তাতে মূলত আর্থিক প্রতারণার বিষয়টিই সামনে আসছে। মঙ্গলবার অ্যাপোলোর প্রাক্তন সিইও রূপালি বসু ও বর্তমান
সিইও রানা দাশগুপ্তকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তদন্তের অভিমুখ সে দিকে আরও বেশি ঘুরেছে বলে লালবাজারের দাবি। বিলে কতটা কারচুপি হয়েছে, তা দেখতে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের জালিয়াতি ও প্রতারণা শাখার অফিসারদের তদন্তে সামিল করা হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, সঞ্জয় রায়ের চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে তিনি পুরো অবহিত ছিলেন না বলে রূপালিদেবী মঙ্গলবার তাঁদের জানিয়েছেন। বলেছেন, দুর্ঘটনায় জখম সঞ্জয় রায় ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তিনি বিদেশে ছিলেন। সেই দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। বিদেশে থাকার সময় রূপালি কার কার সঙ্গে ফোন, ই-মেল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রেখেছিলেন তা দেখা হচ্ছে। ওই সময় হাসপাতাল থেকে কোনও ফোন রূপালিদেবীর কাছে গিয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ জন্য হাসপাতালের আরও কয়েক জন শীর্ষ কর্তাকেও তলব করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৬ ফেব্রুয়ারি সঞ্জয়কে ভর্তি করা হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে সাত দিন থাকার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই সাত দিনের জন্য বিল করেছিলেন প্রায় সাত লক্ষ টাকা। পুলিশের কাছে রোগীর পরিবার বিলের অসঙ্গতির যে অভিযোগ করেছে, তদন্তকারীরা মঙ্গলবার তা জানতে চান রূপালিদেবীর কাছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত যে মূল্য তালিকা রয়েছে, তার বাইরে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল করেছেন সঞ্জয়ের চিকিৎসায়। সে’টি কেন করা হল, তারও ব্যাখ্যা চাওয়া হয় অ্যাপোলোর একদা সর্বময় কর্ত্রীকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতে তদন্তকারীদের তলব পেয়ে ফুলবাগান থানায় যান ওই হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার জয় বসু। তাঁর কাছেও মূলত বিলের অনিয়ম নিয়েই জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়াও এ দিন তদন্তকারীদের একটি দল স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে তদন্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন। চিকিৎসার সময়ের সিসিটিভি-র ফুটেজ সংগ্রহের কাজও চলছে। লালবাজারের একটি অংশ জানিয়েছে, রূপালিদেবী এবং রানা দাশগুপ্ত জিজ্ঞাসাবাদের সময় যে তথ্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে অন্যদের বক্তব্যের মিল রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।