আলিপুর আদালতে মন্ত্রী মদন মিত্রের জামিনের আবেদনের মামলায় এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠল মদন মিত্রের আইনজীবীর মুখেই এবং এই প্রসঙ্গকে ঘিরেই সারদা কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের দাবিতে সরব হলেন একাধিক বিরোধীদলের নেতা। বিপাকে পড়া মদনবাবুর অস্বস্তি বাড়িয়ে বৃহস্পতিবারও আদালত তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে।
এতদিন সারদা মামলার শুনানিতে বিভিন্ন সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর নাম উঠেছে। মূলত সারদা-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাসংদ কুণাল ঘোষ আদালতের মধ্যে এবং বাইরে কেন মমতাকে গ্রেফতার করা হবে না তা নিয়ে সরব হয়েছেন। এ দিন মমতার নাম তুলেছেন অন্য কেউ নন, খোদ মদন মিত্রের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। তাতেই বিষয়টি অতিরিক্ত গুরুত্ব পেয়েছে।
কী ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম এদিন আদালতে তুললেন মিলনবাবু? মদন মিত্রের জামিনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে মদনের আইনজীবী জানান, মালদহের চাঁচোলের এক সাক্ষী সিবিআইকে দেওয়া তাঁর বয়ানে জানান, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের অফিসে তিনি মদন মিত্রের ছবি দেখেছিলেন। তা দেখে তিনি প্রভাবিত হন।
মিলনবাবু বলেন, ‘‘শুধু মদন মিত্র কেন, সেখানে তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও রয়েছে। বলা হয়েছে, কলম পত্রিকার উদ্বোধনে মমতাকে দেখে ওই আমানতকারী প্রভাবিত হয়েছিলেন।’’ প্রসঙ্গত অসমের প্রাক্তন মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মার প্রসঙ্গও তোলেন মিলনবাবু। জানান, সিবিআইকে লেখা চিঠিতে সুদীপ্ত সেন হেমন্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। মিলনবাবুর অভিযোগ, ‘‘হেমন্তকে সাক্ষী করা হল। অথচ মদন মিত্রের জামিন হচ্ছে না।’’
সুদীপ্ত সেন তাঁর ওই চিঠিতে মমতার নামও করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম হঠাৎ কেন তুললেন মদন মিত্রের আইনজীবী, রাজনৈতিক মহলে এখন এই নিয়েই জোর জল্পনা। কারণ ইতিমধ্যে এই প্রসঙ্গটাকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের দাবিতে সরব হচ্ছেন বিরোধীদলগুলির নেতারা।
মদন মিত্র জামিন না পেলে, দীর্ঘদিন জেলে থাকলে কেন অন্যদেরও গ্রেফতার করা হবে না এ প্রসঙ্গই কি তুলতে চেয়েছেন মিলনবাবু। এ প্রশ্নও উঠছে এখন সব মহলে। যদিও এ দিন মিলনবাবু পরে ফোনে বলেন, ‘‘আমি শুধু ওই সাক্ষীর বয়ান পড়েছি। কিন্তু, ঈঙ্গিত করতে চাইনি।’’
মিলনবাবু জানান, সিবিআইয়ের তরফ থেকে মদনবাবুর ছেলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই বছরের ১১ জুন এই মামলার অন্যতম সাক্ষী হেম্নত প্রধান নামে এক ব্যক্তিকে হুমকি দিয়েছিলেন মদনবাবুর ছেলে। সেই সাক্ষী পরে ১০ ফেব্রুয়ারি গোপন জবানবন্দি দেন। মিলনবাবু বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি যে এই মামলার সাক্ষী সেটা আমরা জানতে পারি ১৮ ফেব্রুয়ারি। তা হলে সে সাক্ষী কি না তা জানার আগে কী করে তাঁকে হুমকি দেওয়া সম্ভব?’’ তিনি বলেন, ‘‘মদন মিত্রকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। কলম পত্রিকার উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া জবানবন্দিতেও আরও অনেকের নামোল্লেখ থাকা সত্ত্বেও শুধু মদন মিত্রের জেলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy