Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Narada Scam

NARADA SCAM: এমন ‘বেনজির’ শুনানি হল কেন, প্রশ্ন কৌঁসুলিদের

অভিযুক্ত পক্ষের কাউকে নোটিস দেওয়া হয়নি, আদালত তাঁদের বক্তব্যও শোনেনি। এক তরফের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত জানায় আদালত।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ০৬:২৬
Share: Save:

রাতের বেলা শুনানির ব্যবস্থা করে নারদ মামলায় ধৃত রাজ্যের দুই মন্ত্রী-সহ শাসক দলের তিন নেতা এবং এক প্রাক্তন মেয়রের জামিন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু সোমবারের সেই শুনানির পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অভিযুক্তদের আইনজীবীরা। তাঁরা বলছেন, মামলার শুনানিতে অভিযুক্ত পক্ষের বক্তব্যই তো শোনা হয়নি। তা ছাড়া শুনানির জন্য সিবিআইয়ের তরফে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলা হলেও জামিন-সহ পুরো প্রক্রিয়া স্থগিত করার কথা বলা হয়নি। কিন্তু হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ সার্বিক ভাবে গোটা প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়ায় অভিযুক্তদের রাতেই জেল হেফাজতে পাঠাতে হয়।

অভিযুক্তদের তরফে অন্যতম আইনজীবী অনিন্দ্যকিশোর রাউত বলেন, “এমন বিস্ময়কর, নজিরবিহীন শুনানি আমার কর্মজীবনে আগে কোনও দিন দেখিনি।” তিনি জানান, এই মামলায় ফিরহাদ হাকিম-সহ অভিযুক্তেরা হলেন বিবাদী পক্ষ। কিন্তু শুনানিতে থাকলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। এজি রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি। তিনি অভিযুক্ত পক্ষের কেউ নন। অভিযুক্ত পক্ষের কাউকে নোটিস দেওয়া হয়নি, আদালত তাঁদের বক্তব্যও শোনেনি। এক তরফের বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত জানায় আদালত।

আদালত সূত্রে বলা হচ্ছে, সোমবার রাতে হাই কোর্টের শুনানিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এবং অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াইজে দস্তুর সিবিআই এবং নিম্ন আদালতের উপরে চাপ সৃষ্টির কথা বলেছিলেন। লিখিত আবেদনপত্রে বলা না-হলেও এ ব্যাপারে মৌখিক সওয়াল শুনেছে আদালত। তবে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সিবিআইয়ের আবেদন ঠিক কী ছিল, তা স্পষ্ট নয়। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গেলে তার প্রত্যয়িত প্রতিলিপি প্রয়োজন। বিষয়টি ই-মেলের মাধ্যমে হাই কোর্টকে জানানো হয়েছে এবং হাই কোর্ট তা গ্রহণ করেছে। সাধারণ মানুষও যদি এমন সুযোগ পান, তা হলে তাঁরা লাভবান হবেন। জয়ন্তবাবুও বলছেন, “কলকাতা হাই কোর্ট এত রাত পর্যন্ত মামলা শুনছে, এমনটা আগে কখনও হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই দণ্ডিতের মামলার শুনানি হয় না মাসের পর মাস। আদালতের এমন সক্রিয়তা সাধারণ মানুষের মামলায় দেখা গেলে খুবই আনন্দিত হব।”

সোমবার বিচার ভবনে বিশেষ সিবিআই আদালতের শুনানিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মণিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর কুণ্ডু-সহ অভিযুক্ত পক্ষের সওয়ালের অন্যতম বিষয় ছিল, করোনা আবহে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ। তার মর্মার্থ, অতিমারি পরিস্থিতিতে জেলে বন্দিদের ভিড় কমানো এবং সংক্রমণ প্রতিরোধই মূল লক্ষ্য বা বিবেচ্য। জামিনের লিখিত নির্দেশের ক্ষেত্রেও সেই নির্দেশের উল্লেখ করেছেন সিবিআই আদালতের বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায়।

দীপঙ্করবাবু বলছেন, “হাই কোর্টে আমাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি। সিবিআই বলেছে, নিম্ন আদালতের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু তার প্রমাণ কোথায়? এজলাসে যে-কোনও নাগরিক উপস্থিত থাকতে পারেন। তাতে বিচারক চাপে পড়লে বিচার ব্যবস্থার দিকেই তো আঙুল তোলা হয়। সেটা দুর্ভাগ্যজনক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE