Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাড়ি বাড়ি রাত্রিবাস, পা মিলিয়েই শহরে

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদ, শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি-সহ সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির সমস্যাকে পুঁজি করে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘লং মার্চ’।

গত বছর কৃষকসভার ডাকে সিঙ্গুর থেকে রাজ ভবন পদযাত্রা।—ফাইল চিত্র।

গত বছর কৃষকসভার ডাকে সিঙ্গুর থেকে রাজ ভবন পদযাত্রা।—ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১৬
Share: Save:

শহর ও মফস্সল মিলে এক ডজন জায়গায় বাড়ি বাড়ি রাত্রিবাস। তার পরে দল বেঁধে কলকাতায় এসে চোখে পড়ার মতো সমাবেশ। আবার তারও আগে কলকাতার নানা ওয়ার্ডে ছোট ছোট মিছিল করে সমাবেশের বাতাবরণ তৈরি করা। এই পরিকল্পনা নিয়েই ২৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পদযাত্রায় নামছে বাম ও কংগ্রেস।

জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় জেলা এবং শহরে বামেদের প্রতিবাদী সভা-সমাবেশ চলছেই। তার পাশাপাশিই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদ, শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি-সহ সাধারণ মানুষের রুটি-রুজির সমস্যাকে পুঁজি করে আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘লং মার্চ’। শ্রমিক সংগঠনগুলি ওই পদযাত্রার উদ্যোক্তা হলেও বাম ও কংগ্রেসের সব শাখা-সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরাই ‘লং মার্চ’-এ পা মেলাবেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বামেদের সঙ্গেই সর্বত্র পতাকা নিয়ে দলের কর্মীদের পথে নামার নির্দেশ যেমন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র দিয়েছেন, তেমনই তেমনই কলকাতার দিকে আসার পথে কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে পদযাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের কাছে নির্দেশিকা যাচ্ছে।

বাম সূত্রের খবর, চিত্তরঞ্জনে শুক্রবার রাত থেকেই জড়ো হবেন পদযাত্রীরা। এর পরে আসানসোল, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর, পানাগড়, গলসি বাজার, বর্ধমান, পাণ্ডুয়া, চাঁপদানি, বালির মতো এলাকায় রাতের বিরতি নেওয়া হবে। সব বিরতিতেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে থাকবেন স্থায়ী পদযাত্রীরা। যেখানে যোগদানকারীর সংখ্যা বাড়বে, সেখানে অনুষ্ঠান-বাড়ি ভাড়া নেওয়ার বন্দোবস্ত থাকবে। সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহুর কথায়, ‘‘অন্তত দু’শো পদযাত্রী স্থায়ী ভাবে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত থাকবেন। বাকিদের কেউ তিন বা পাঁচ দিন, কেউ সাত দিন ভাগ করে হাঁটবেন। আবার দৈনিক ভিত্তিতে কয়েক হাজার মানুষ পদযাত্রায় যোগ দেবেন।’’ প্রবীণ সিটু নেতা শ্যামল চক্রবর্তী চিত্তরঞ্জনে পদযাত্রার সূচনা করবেন। ‘লং মার্চ’ শেষে ১১ ডিসেম্বর কলকাতার সমাবেশে থাকার কথা আইএনটিইউসি-র সভাপতি জি সঞ্জীব রেড্ডি, সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন, কৃষক সভার নেতা এবং মহারাষ্ট্রে ‘কিসান লং মার্চ’-এর অন্যতম কারিগর অশোক ধওয়েলে, টিইউসিসি-র জি দেবরাজন, এআইটিইউসি-র অতুল আনজান প্রমুখের। পুলিশ অনুমতি না দিলেও ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সমাবেশ করতে মরিয়া অনাদিবাবুরা।

চলছে লং মার্চের প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।

তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল যেমনই হোক, আন্দোলনের পথে যে তাঁরা স্থায়ী ভাবেই আছেন, সেই বার্তা দিতে পদযাত্রায় বড়সড় পরিকল্পনা নিয়েছেন বাম ও কংগ্রেস নেতারা। কিছু জেলা ও শহর সংলগ্ন এলাকার লোকজন নিয়ে ১১ ডিসেম্বর শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশন থেকে যেমন পদযাত্রা হবে, তেমনই আবার উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার, দক্ষিণে সুকান্ত সেতু ও মধ্য কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে মিছিল যাবে ধর্মতলার দিকে।

যে পথে যাবে লং মার্চ।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবু বলেছেন, ‘‘মোদী সরকারের ভ্রান্ত অর্থনীতির প্রতিবাদ এবং কর্মসংস্থানের দাবিতে এই কর্মসূচির যাত্রাপথে পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া এবং কলকাতার প্রতিটি অঞ্চল ও বুথের কর্মীদের দলের পতাকা নিয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Long March CPM Esplanade Congress NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE