Advertisement
E-Paper

জোটের কাঁটা তুলতে পথে সূর্য-মান্নান-প্রদীপ

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানো, শিল্পের দাবি এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা পর্যন্ত ২৮৩ কিলোমিটার ‘লং মার্চ’ করছে কেন্দ্রীয় ট্রে়ড ইউনিয়নগুলি। বাম ও কংগ্রেসের নানা শাখা সংগঠন ওই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:০৬
বজবজে পদযাত্রা শুরুর আগে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।—নিজস্ব চিত্র।

বজবজে পদযাত্রা শুরুর আগে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।—নিজস্ব চিত্র।

সমঝোতা করে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে লড়াই করেও আশানুরূপ ফল হয়নি। বরং, ময়না তদন্তে উঠে এসেছে কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন। জোটের কাঁটা সামাল দিতে ‘লং মার্চ’কেই তাই কাজে লাগাতে চাইছেন সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচানো, শিল্পের দাবি এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতায় চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা পর্যন্ত ২৮৩ কিলোমিটার ‘লং মার্চ’ করছে কেন্দ্রীয় ট্রে়ড ইউনিয়নগুলি। বাম ও কংগ্রেসের নানা শাখা সংগঠন ওই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছে। বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য ছোট পদযাত্রা করে মূল ‘লং মার্চ’-এর সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে বামেরা। কিন্তু সেখানেও স্থানীয় স্তরে বাম ও কংগ্রেসের ‘দূরত্ব’ মেটেনি। দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্য মাথায় রেখে জোটের বার্তা জোরালো করতে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্যেরা।

গণসংগঠনের কর্মসূচিতে দলের পতাকা থাকে না— এই ব্যাকরণ দেখিয়ে দুই বর্ধমান জেলাতেই কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের দলীয় পতাকা নিয়ে পদযাত্রায় হাঁটতে বারণ করেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতারা। দু’দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপেও পরিস্থিতির বিশেষ বদল ঘটেনি। এমতাবস্থায় পদযাত্রা হুগলি জেলায় ঢোকার পরে দেবীপুরে তাদের স্বাগত জানিয়ে অংশগ্রহণ করতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। প্রথা ভেঙে মান্নান সংক্ষিপ্ত বক্তৃতাও করেছেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজে সেন্ট্রাল জুট মিলের সামনে পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার আগে নিজে সভা করেছেন কংগ্রেসের পতাকা রেখে। তার পরে প্রদেশ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপবাবু হুগলির মগরায় গিয়েছেন ‘লং মার্চ’-এ শামিল হতে।

কেন অতিরিক্ত মাইল হাঁটতে হচ্ছে সূর্যবাবু, মান্নানদের? উপনির্বাচনের পরে দুই শিবিরের নীচের তলার ঈষৎ বিরূপ মনোভাবই তার অন্যতম নেপথ্য কারণ। বুথওয়াড়ি বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, করিমপুরে গত লোকসভা ভোটে যে সব বুথে কংগ্রেস প্রার্থী যত ভোট পেয়েছিলেন, বিধানসভা উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী সেখানে সেই ভোট পাননি। সিপিএমের প্রশ্ন, তার মানে কি কংগ্রেসের ভোট বাম বাক্সে হস্তান্তর হয়নি? আবার কালিয়াগঞ্জে তাঁদের প্রার্থীর জন্য বামেদের ভোট ঠিকমতো পাননি বলে অভিযোগ এনেছেন জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত-সহ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু প্রথম লক্ষ্য যে হেতু বিজেপিকে সরিয়ে বিরোধী পরিসর দখল নেওয়া, তাই স্থানীয় স্তরের এই ভুল বোঝাবুঝিকে বাড়তে দিতে চাইছেন না রাজ্য সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা পর্যবেক্ষকদের জোটবদ্ধ কর্মসূচির বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের দলীয় বৈঠকে।

‘লং মার্চ’ শেষে আগামী বুধবার নানা দিক থেকে মিছিল এনে কলকাতা ভরিয়ে দিতে চায় বামেরা। বারুইপুর থেকে যাদবপুর হয়ে যে মিছিলে বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবু থাকবেন, সেখানে কংগ্রেসের পতাকায় বাধা না দেওয়ার বার্তা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা হচ্ছে সোমেনবাবুকে হাওড়া বা কলকাতায় কোনও মিছিলে শামিল করার। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘একসঙ্গে রাস্তায় নেমে কর্মসূচি নিয়ে পরিমণ্ডল তৈরি করতে পারলে দু’পক্ষের কর্মীরাই স্বচ্ছন্দ হবেন। সেই চেষ্টাই চলছে।’’ দু’পক্ষের নেতারা ‘লং মার্চ’-এর পরে আবার আলোচনায় বসবেন।

CPM Congress Long March NRC Surjya Kanta Mishra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy