Advertisement
E-Paper

আসন চাই আসন, কঠিন অঙ্কে বামফ্রন্ট

বাংলা ছবিতে মান্না দে-র গান ছিল, ‘আমি আগন্তুক, আমি বার্তা দিলাম। কঠিন অঙ্ক এক কষতে দিলাম’। জোটের বাজারে অবিকল যেন সেই অবস্থা! আগন্তুক হয়ে এসে বামফ্রন্টকে কঠিন অঙ্ক এক কষতে দিয়েছে কংগ্রেস! যেখানে ‘এ প্লাস বি মাইনাস সি হোল স্কোয়ার ইজ ইক্যুয়াল টু কলেজ স্কোয়ার’ করে তুলতে দমছুট হতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ০৫:১৩

বাংলা ছবিতে মান্না দে-র গান ছিল, ‘আমি আগন্তুক, আমি বার্তা দিলাম। কঠিন অঙ্ক এক কষতে দিলাম’। জোটের বাজারে অবিকল যেন সেই অবস্থা! আগন্তুক হয়ে এসে বামফ্রন্টকে কঠিন অঙ্ক এক কষতে দিয়েছে কংগ্রেস! যেখানে ‘এ প্লাস বি মাইনাস সি হোল স্কোয়ার ইজ ইক্যুয়াল টু কলেজ স্কোয়ার’ করে তুলতে দমছুট হতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে!

কংগ্রেসের জন্য জায়গা ছেড়ে রেখেই বিধানসভা ভোটের জন্য প্রথম পর্যায়ের তালিকা প্রকাশ করেছে বামফ্রন্ট। কিন্তু এখন কংগ্রেসের চাহিদার সঙ্গে বাম শরিকদের আসনের দাবি মেলাতে গিয়ে প্রায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে! তৃণমূলকে হারাতে বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন, এই যুক্তিতে শরিকদের আত্মত্যাগে রাজি করাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। শরিকেরা অনেক ক্ষেত্রে রাজি হচ্ছে। কিন্তু তারা আবার পাল্টা দাবি করছে, কংগ্রেসের জন্য ত্যাগের কোটা না হয় সিপিএম পুষিয়ে দিক! এক দিকে নব্যবন্ধু কংগ্রেস, অন্য দিকে কয়েক দশকের সঙ্গী শরিক— কার মন কী ভাবে রাখা যাবে, জটিল অঙ্ক কষতে হচ্ছে আলিমুদ্দিনকে!

তিন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি এবং সিপিআই নেতৃত্বের সঙ্গে মঙ্গলবার সকাল থেকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছিলেন বিমানবাবুরা। সে আলোচনাতেই সব জট ছাড়েনি। কিছু আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে শরিকেরা, কিছু আসন নিয়ে আবার প্রবল দর কষাকষি! যেমন, এ দিনের আলোচনায় আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, মনোজ ভট্টাচার্যেরা তাঁদের কোটা থেকে বহরমপুর, রেজিনগর, বেলডাঙা ও কালীগঞ্জ আসন চারটি কংগ্রেসের জন্য ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু সুতি, নওদা বা বড়ঞাঁ তাঁরা ছাডবেন না! সিপিআইয়ের প্রবোধ পণ্ডা, ম়ঞ্জুকুমার মজুমদারেরা সিপিএমকে জানিয়েছেন, তাঁদের কোটা থেকে কান্দি, শ্রীরামপুর ও কালিম্পং তাঁরা ছেড়ে দিতে পারেন। কিন্তু শর্ত, বর্ধমান ও হুগলি জেলা থেকে অন্তত দু’টি আসন বদলি হিসাবে দিতে হবে তাঁদের। চিন্তায় পড়েছেন বিমানবাবুরা! আর মঞ্জুবাবু বলছেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে কিছু আসন ছাড়তে আমরা রাজি। কিন্তু কংগ্রেসের সব দাবি মানা সম্ভব নয়!’’ মেদিনীপুর ও দক্ষিণ কাঁথি আসন তাঁরা কংগ্রেসকে দিতে রাজি নন।

ফ ব নেতৃত্ব আবার সিপিএমকে বলেছেন, তাঁরা যে ৩৪টি আসনে লড়াই করেন, তার মধ্যে ৮টি পর্যন্ত তাঁরা ছেড়ে দিতে রাজি। জলপাইগুড়ির বদলে ওই জেলায় পাশাপাশি কোনও আসন তাঁরা সিপিএমের কাছ থেকে পেতে চান। তার বাইরে কিছু নয়। ফ ব নেতা হাফিজ আলম সৈরানির কথায়, ‘‘আমাদেরও তো নিচু তলার চাপ আছে। যা চলছে, এ ভাবে ঐক্যবদ্ধ লড়াই হয়?’’ ঘটনাপ্রবাহ দেখে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের মন্তব্য, ‘‘আমাদের বামফ্রন্টেই ১১টি শরিক। তার সঙ্গে এ বার জেডিইউ, আরজেডি, এনসিপি, পিডিএসকে আসন দিতে হচ্ছে। এর উপরে আছে কংগ্রেস! এত সহজ নাকি রফা বার করা?’’

কংগ্রেস শিবিরে আবার টানাটানি চলছে প্রার্থী হওয়া নিয়ে! বিধান ভবনে এ দিন নির্বাচনী কমিটির বৈঠকে সোমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, দীপা দাশমুন্সি, অরুণাভ ঘোষের মতো প্রবীণ নেতাদের প্রার্থী হওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব। মান্নান অবশ্য ফের খোলাখুলি জানিয়েছেন, তিনি ভোটে দাঁড়াতে ইচ্ছুক নন। মান্নানের বক্তব্য, ‘‘আমিই প্রথম থেকে বাম-কংগ্রেসে জোট চেয়েছি। এখন আমি দাঁড়ানো, না-দাঁড়ানো তে কিছু আসে যায় না!’’ যদিও দলের একাংশ বলছে, হুগলিতে বামেরা যে ভাবে আসন বাঁটোয়ারা করছে, তাতে মান্নান ক্ষুব্ধ। ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে চেয়েছেন শিক্ষক-নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র। অধীর তাঁর উপস্থিতিতেই বলেন, ‘‘আমরা ওমপ্রকাশকে ভবানীপুরে প্রার্থী করার জন্য আমরা আবেদন করছি।’’ আবার সোমেনবাবু প্রার্থী হবেন কি না, খোলসা করেননি।

assembly election Left Front vote
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy