Advertisement
E-Paper

সিপিএম ধরে রাখতে পারল না মুর্শিদাবাদের হিংসায় নিহত সমর্থকদের পরিবারকে! ভোট ফিরবে কী ভাবে? প্রশ্ন দলেই

সোমবার মুর্শিদাবাদ গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। কিন্তু তার আগেই রবিবার জাফরাবাদ ছেড়ে কলকাতায় এসে পড়েছেন নিহত হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাসের পরিবার। সিপিএম সমর্থক পরিবার এই মুহূর্তে রয়েছে বিজেপির তত্ত্বাবধানে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ২০:৩৪
Left supporter family of Murshidabad unrest victims in custody of BJP, what did CPM State Secretary MD Salim reply

(বাঁ দিকে)মহম্মদ সেলিম। (ইনসেটে) চন্দন দাসের পরিবারের সঙ্গে মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ধুলিয়ানের জাফরাবাদে মাস খানেক আগের হিংসায় প্রাণ হারিয়েছিলেন হরগোবিন্দ দাস এবং চন্দন দাস। নিহত দু’জনকেই নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছিল সিপিএম। নামের আগে জুড়ে দিয়েছিল ‘শহিদ’ও। কিন্তু সেই পরিবার এখন বিজেপির ‘হেফাজতে’। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সিপিএমের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, নিজেদের সমর্থক পরিবারকেই ধরে রাখা গেল না, ভোট ফেরানো যাবে কী ভাবে?

দলের রাজ্য দফতরে সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেখানে দাস পরিবারের প্রসঙ্গ উঠতে তিনি বলেন, ‘‘লাশ ছিনতাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীদের সংস্কৃতি। এখন ওই পরিবারকে নিয়ে টানাটানি করছে। এটাও এক ধরনের রাজনীতি। ওই রাজনীতি আমরা করি না।’’

জাফরাবাদে নিহত পিতা-পুত্রের পরিবারের কাছে রাজনৈতিক নেতা হিসাবে প্রথম পৌঁছেছিলেন সেলিমই। সঙ্গে ছিলেন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তার পর আদালতের অনুমতিতে হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে দাস পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। আনুষ্ঠানিক ভাবে না হলেও, একান্ত আলোচনায় সিপিএম নেতারা মানছেন, বাংলায় দলীয় মেরুকরণের আবহে পরিস্থিতি আরও কঠিন হচ্ছে তাঁদের পক্ষে। তাঁরা এ কথাও স্বীকার করছেন, ২০২১ সালের তুলনায় আরও চড়া দাগের রাজনৈতিক মেরুকরণের আবহে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে ২০২৬ সালে।

সোমবার মুর্শিদাবাদ গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। কিন্তু তার আগেই রবিবার জাফরাবাদ ছেড়ে কলকাতায় এসে পড়েছেন হরগোবিন্দ এবং চন্দনের স্ত্রী। তাঁদের নামে ‘নিখোঁজ ডায়েরি’ করেছেন হরগোবিন্দের কনিষ্ঠ পুত্র এবং চন্দনের ভাই সমর্থ দাস। তার ভিত্তিতেই সল্টলেকে রবিবার হানা দিয়েছিল জঙ্গিপুর পুলিশের একটি দল। পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দুই নিহতের স্ত্রীকে জোর করে নিয়ে যেতে চাইছে প্রশাসন। সেই কারণেই এই পুলিশি অভিযান। সজল এবং তরুণজ্যোতির দ্রুত পৌঁছে যাওয়াটাই স্পষ্ট করে দিয়েছিল, ওই বাম পরিবারকে বিজেপি ‘হেফাজতে’ নিয়ে ফেলেছে।

এ নিয়ে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে এই ঘটনা খাপ খাচ্ছে বলে বিজেপি ঝাঁপিয়েছে। অথচ হাঁসখালিতে যখন ধর্ষিতাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল, তখন বিজেপির কেউ যাননি।’’ ঘটনার পর থেকে সিপিএম দাবি করেছিল, হিংসা ঠেকাতে গিয়ে হরগোবিন্দ এবং চন্দনের প্রাণ গিয়েছে। বিজেপির পাল্টা ভাষ্য ছিল, ধর্মপরিচয় দেখেই খুন করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সেই পরিবারকে কলকাতায় এনেছে বিজেপি। সেই পরিবার কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের দাবিতে আদালতে মামলা করেছে। অন্য দিকে সিপিএম দলগত ভাবে বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।

বাম নেতারা একান্ত আলোচনায় বলছেন, ওই পরিবারকে বিজেপি আর্থিক সাহায্য করেছে। বাস্তব অবস্থায় তাঁদের দোষ দেওয়া যায় না। কিন্তু সার্বিক ভাবে যে এই ধরে রাখতে না-পারাটা রাজনৈতিক ক্ষতি, তা-ও মানছেন তাঁরা। বামেদের দিকে এখনও যেটুকু হিন্দু ভোট রয়েছে, তা কাচিয়ে নিতে চায় বিজেপি। সেই লক্ষ্যে হরগোবিন্দ এং চন্দনের পরিবারকে নিজেদের দিকে টানা পদ্মশিবিরের জন্য ‘উল্লেখযোগ্য’। অন্য দিকে বামেদের জন্য ‘ধাক্কা’।

Murshidabad Unrest Md Salim CPM BJP West Bengal Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy