দলের পতাকা নিয়ে আন্দোলন। পাশাপাশিই, গণ-সংগঠন এবং নানা মঞ্চের ডাকে কর্মসূচি। একই সঙ্গে দুই কৌশলে পথে নামার গতি বাড়াতে চাইছে বামেরা। উৎসবের মরসুমের জন্য কিছু দিন কর্মসূচিতে ভাটা পড়েছিল। এখন আবার সিপিএমের সম্মেলন-পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে যথাসম্ভব রাস্তার কর্মসূচির তীব্রতা বাড়াতে চাইছেন বাম নেতৃত্ব।
আর জি কর-কাণ্ডে ন্যায়-বিচার এবং ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ উন্মোচনের দাবিতে আজ, বৃহস্পতিবার সিবিআই দফতর অভিযানের ডাক দিয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। উল্টোডাঙার হাডকো মোড়ে জমায়েত করে মিছিল নিয়ে বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। মিছিলে থাকার কথা সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের। তাঁদের মতে, প্রাথমিক চার্জশিটে সিবিআই শুধু সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের নাম দিয়েছে। অথচ এত বড় ঘটনায় শুধু এক জনই অপরাধী, এ কথা বিশ্বাস করা শক্ত। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য বা কেন্দ্রের যে সংস্থাই হোক, যদি পেশাদারি দক্ষতা ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক নির্দেশে কাজ করে, তা হলে কোনও দিনই সেটা সফল হতে পারে না। আমরা তাই গোড়া থেকেই কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনার পরেই তাৎক্ষণিক ভাবে নির্যাতিতার বাবা-মা সিবিআইকে তদন্ত-ভার দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। আমরাও তাই আপত্তি করিনি।’’ কিন্তু এখন তদন্তের ১০০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তাই ‘আরও কত সময় চাই, জবাব দাও সিবিআই’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে সিজিও অভিযান হবে। সেলিমের কথায়, ‘‘মানুষ দেখতে পাচ্ছেন, সিবিআই তদন্ত আগের দুর্নীতির মামলাগুলির মতোই কী ভাবে আইনের বদলে লাইনে চলছে! তাই সিবিআই দফতরেও প্রতিবাদ হবে।’’ হাওড়া জেলা কমিটির আয়োজনে সীতারাম ইয়েচুরি ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণ-সভায় এ দিন গিয়েছিলেন সেলিম।
পুলিশে চাকরি-প্রার্থীদের মিছিল ও বিক্ষোভ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।
শহরে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার পরে বামফ্রন্ট এবং সিপিএমের ডাকে দু’বার লালবাজার অভিযান হয়েছিল। লালবাজারের অদূরে রাতভর অবস্থানও চলেছিল। বামফ্রন্টের ডাকে মিছিল হয়েছিল মধ্য কলকাতা থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত। আবার সিপিএমের ছাত্র, যুব ও মহিলা সংগঠন শ্যামবাজারে লাগাতার ধর্না কর্মসূচি নিয়েছিল। তবে আর জি কর-কাণ্ডে বামেদের সিবিআই অভিযান এই প্রথম।
সিবিআই অভিযানের আগে বুধবারই কলকাতায় চাকরি-প্রার্থীদের মঞ্চের ডাকে মিছিল হয়েছে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত। পুলিশে পর্যাপ্ত নিয়োগ এবং রাজ্য সরকার যাতে অবিলম্বে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) সংরক্ষণের জটিলতা মেটায়, সেই দাবিতে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন সিটু নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। ধর্মতলার কাছে রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন চাকরি-প্রার্থীরা। একই দিনে জেলায় জেলায় সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের ডাকে প্রতিবাদ হয়েছে ‘ট্যাবের টাকা কোথায় গেল’ প্রশ্ন তুলে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)