Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Cattle Smuggling

রাজ্যের সীমানায় আটকে যাচ্ছে গরু, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

গরু পাচার হচ্ছে এই সন্দেহে দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের দুধেল গরু ধরছে পুলিশ। যার জেরে গত কয়েক মাস ধরে দুধের ব্যবসায় মার খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের খাটাল ব্যবসায়ীরা।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১৪
Share: Save:

বেআইনি ভাবে গরু পাচার হয়েছে প্রতিবেশি দেশে, অভিযোগে উত্তাল রাজ্য। তদন্তে সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

ফলে, এখন কড়াকড়ি বেড়েছে। যার ফলে বিপদে পড়ছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। অভিযোগ উঠেছে, গরু পাচার হচ্ছে এই সন্দেহে দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের দুধেল গরু ধরছে পুলিশ। যার জেরে গত কয়েক মাস ধরে দুধের ব্যবসায় মার খাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের খাটাল ব্যবসায়ীরা। দুধ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাচার করা হচ্ছে, এই সন্দেহে তাঁদের কেনা দুধেল গরু ধরে নিচ্ছে পুলিশ। ফলে তাঁদের ব্যবসার অবস্থা কার্যত তলানিতে এসেছে। ডানকুনির মনোহরপুকুর মিল্ক প্রোডাক্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল মিল্ক মেনস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুগ্ধ ও পশুপালন দফতরে চিঠি লেখা হয়েছে। অভিযোগ, এখনও সুরাহা হয়নি।

ডানকুনির খাটালে বাপি ঘোষের ১৩টি গরু রয়েছে। বাপি জানান, সকাল ও বিকেল মিলিয়ে ১৩টি গরু থেকে ৮০ লিটারের মতো দুধ দোয়ানো হত। আরও গরু কিনতে চান তিনি। কিন্তু, বিহার থেকে গরু আনতে গিয়ে তাঁর গরু ধরা পড়েছে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সীমানায়। বাপি বলেন, ‘‘গাড়িতে গরু কেনার প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র থাকলেও পুলিশ কর্নপাত করছে না। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেই গরু ছাড়াতে অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে। কখনও ছাড়াতে পারছি। কখনও পারছি না।’’

মনোহরপুর মিল্ক প্রজেক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হাজী লোকমান মোল্লা দুগ্ধ ও পশুপালন দফতরের মন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, ‘‘ধরপাকড় ও বাজেয়াপ্তের ভয়ে আমরা অন্য রাজ্য থেকে গরু কিনতে ভয় পাচ্ছি। ফলে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় দুধের যোগান কমে যাচ্ছে।’’ আরেক দুগ্ধ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমরা ছোটখাট দুগ্ধ ব্যবসায়ী। বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে কেনা গরু পুরুলিয়া, আসানসোল এলাকায় বাজেয়াপ্ত হওয়ায় আমাদের মূলধনের ঘাটতি হচ্ছে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে এই পরিস্থিতি চলায় আমাদের জীবিকা নির্বাহই অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল মিল্ক মেনস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, একে তো গরুর খাবার দানাভুসি থেকে শুরু করে খড়ের দাম গত কয়েক বছরে অনেকটা বেড়েছে। দানাভুসির দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ। যে পরিমান খড় ৪০ টাকায় পাওয়া যেত সেই পরিমান খড় কিনতে এখন ৬০ টাকা লাগে। এর ফলে দুগ্ধ উৎপাদন মূল্য অনেকটা বেড়েছে। কিন্তু দুধের দাম তাঁরা বাড়াতে পারেননি। এর মধ্যে যদি ভিন রাজ্য থেকে আসা গরু ধরপাকড় শুরু হয়, তা হলে তারা কীভাবে ব্যবসা চালাবেন? কয়েক জন দুগ্ধ ব্যবসায়ীর মতে, গরু ধরপাকড়ের পরে ছাড়া পেতে পেতে ২০ থেকে ২৫ দিনও হয়ে যাচ্ছে। তত দিনে ওই দুধেল গরুর দুধ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কমে যায়। এই অবস্থায় ওই গরু হাতে পেয়েও তাঁদের বিশেষ লাভ হয় না। বাপি বলেন, ‘‘আমরা এই বিষয়ে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।’’ মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই সমস্যা আর থাকবে না। এখন কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এই রাজ্যেই অনেক উন্নতমানের গাভী উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আর অন্য রাজ্য থেকে গাভী আনার প্রয়োজন হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cattle Smuggling cow CBI ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE