প্রয়াগরাজে এ বছরের কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে বহু পুণ্যার্থীর মৃত্যুর ঘটনার পর গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বাড়তি সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। সেই ঘটনার পরেই উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মেলা আয়োজনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভিড় সামলানোর মতো উপযুক্ত বন্দোবস্ত না থাকাতেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক নতুন পদক্ষেপ করছে নবান্ন।
প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন জায়গায় ড্রপ গেট ও বাঁশের ব্যারিকেড ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে একসঙ্গে অতিরিক্ত মানুষের প্রবেশ আটকানোর চেষ্টা করা হয়। তবে এ বার সেই ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও কার্যকর করতে ড্রপ গেটে বসানো হচ্ছে ট্রাফিক লাইট। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, লাল ও সবুজ আলো দেখে দূর থেকেই পুণ্যার্থীরা বুঝতে পারবেন, কখন থামতে হবে এবং কখন এগিয়ে যাওয়া নিরাপদ। মোট ৪০টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে এই ড্রপ গেট ও ট্রাফিক লাইট বসানো হবে। কাকদ্বীপের লট-৮, সাগরদ্বীপে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ পথ কচুবেড়িয়া ঘাট, পাশাপাশি মেলাপ্রাঙ্গণের একাধিক মোড়ে এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। ভিড়ের চাপ বাড়লেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আলো লাল করা হবে, যাতে মানুষের ঢল নিয়ন্ত্রিত রাখা যায়।
আরও পড়ুন:
১২-১৫ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যস্নান করতে যে পরিমাণ ভিড় হয়, তাতে এই ধরনের বন্দোবস্ত অত্যন্ত জরুরি বলেই মনে করছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। বিশেষ করে মকরসংক্রান্তির পুণ্যলগ্নে স্নান করতে এ বছর ১৩ জানুয়ারি রাত থেকে ১৪ জানুয়ারি ভোর পর্যন্ত যে বিপুল সংখ্যক তীর্থযাত্রীর আগমনের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাতে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সুন্দরবন পুলিশ জেলার পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রযুক্তিনির্ভর ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই সুপারিশ মেনেই রাজ্য সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানিয়েছে নবান্নের একটি সূত্র। প্রশাসনের আশা, এই ব্যবস্থায় পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমবে এবং গঙ্গাসাগর মেলা আরও নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল ভাবে অনুষ্ঠিত করা সম্ভব হবে।