রাতে বৌভাতের অনুষ্ঠানের পর বুধবারও থেকে গিয়েছে গেট।নিজস্ব চিত্র
স্টেডিয়ামের প্রবেশপথে ছ়ড়িয়ে আছে চা-কফি, আইসক্রিমের খালি কাপ, জলের বোতল। ইতিউতি আছে আবর্জনাও। বাঁশ আর কাপড় দিয়ে তৈরি হয়েছে বিয়ের গেট। সেখানে লেখা ‘শিবু ওয়েডস পূজা’।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য ব্যবহার হয় ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের মাঠ। এ বার মহকুমা প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে মঙ্গলবার রাতে স্টেডিয়ামের বারান্দা ও দু’টি হল ঘর বৌভাতের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠল। স্টেডিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে ঝাড়গ্রাম মহকুমা ক্রীড়া সংস্থা। পদাধিকার বলে সংস্থার সভাপতি হলেন ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক (সদর)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাস্থলের জন্য ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের মাঠটি প্রতিবার নেয় প্রশাসন। খানাখন্দে ভরা মাঠ। ফলে মহকুমা লিগ ফুটবলের খেলাগুলি স্টেডিয়ামের মাঠের পরিবর্তে অন্য জায়গায় হচ্ছে। জঙ্গলমহলের খেলাধুলোর প্রসারের উদ্দেশ্যে তৈরি এই স্টেডিয়ামটি কী তবে কেবল সরকারি সভা ও বেসরকারি উত্সব অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি হয়েছে? কারণ, স্থানীয় সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোয় একটি সংস্থা স্টেডিয়ামে খাবার দোকানও করেছিল।
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক অমিত হাজরা বলেন, “স্টেডিয়ামের রক্ষণাবেক্ষণ, সাফাই, বিদ্যুতের বিল মেটানো এ সবের জন্য টাকার সংস্থানের জন্যই খাবার দোকান কিংবা বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিয়েছি। স্টেডিয়ামের মাঠ ভাড়া দেওয়া হয়নি। ক্রীড়া সংস্থার সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েই ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।” অমিতবাবু জানান, মঙ্গলবার রাতে মহকুমাশাসক ফোন করে বৌভাতের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেছিলেন। বিয়ের বাড়ির খাওয়া চলায় অনুষ্ঠান বন্ধ সম্ভব হয়নি। এরপর থেকে ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। মহকুমাশাসক (সদর) সুবর্ণ রায় বলেন, “এটা আইন বিরুদ্ধ কাজ। ভবিষ্যতে এ ধরনের পদক্ষেপ করার আগে জানাতে হবে।” মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, স্টে়ডিয়ামের কোনও অংশে বেসরকারি অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে দেখভালকারী সংস্থা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ঝাড়গ্রাম শহরের আদর্শপল্লির বাসিন্দা তপন অধিকারীর ছেলে শিবুর বিয়ের বৌভাত ছিল মঙ্গলবার। স্টেডিয়ামের কাছে চা-খাবারের দোকান চালান তপন। শিবু অলঙ্কারের কাজ করেন। তপন বলেন, “আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। স্টেডিয়ামে খেলাধুলো হলে চা সরবরাহ করি। সেই সম্পর্কের সূত্রে ক্রীড়া সংস্থার কর্তৃপক্ষের কাছে স্টেডিয়ামের কয়েকটা ঘর ভাড়া চেয়েছিলাম। ওঁরা আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে পাঁচ হাজার টাকায় ছেলের বৌভাতের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy