এই শীতে ৭৬ হল আমার। কিন্তু এমনটা কোনওদিন দেখিনি। ভূমিকম্প আগেও দেখেছি। কিন্তু এমন তাণ্ডব আর বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা আগে হয়নি। কয়েকটা মিনিট যেন মনে হচ্ছিল কয়েক ঘণ্টা।
দুপুরে খেতে বসেছিলাম আমরা। আমি আর আমার বৌমা শিখা। আমি রান্নাঘরে বসে খাচ্ছিলাম। পাশের ঘরে জানালার ধারে বসে খাচ্ছিল বৌমা। ছেলে কাজে বাইরে। আট বছরের নাতি ছিল স্কুলে। দ্বিতীয়বার মুখে ভাত তুলেছি, তখনই হুমড়ি খেয়ে পড়লাম ভাতের থালার উপরে। কোনওরকমে মাথা তুলে দেখলাম, ঘরটা নৌকার মতো এদিক ওদিক দুলছে। ভাবলাম, ভূমিকম্প হচ্ছে। কিন্তু ওই বিকট আওয়াজ ভূমিকম্পের কী করে হবে!
কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ততক্ষণে বৌমাও ছুটে এসেছে। ঘরের চালের অ্যাসবেসটস দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে যেন। মিনিটখানেক পরে যেন ঝড় এল। এমন দমকা হাওয়া যেন মনে হচ্ছে সব উড়িয়ে নিয়ে যাবে। তবে কি ভয়ঙ্কর কোনও ঝড়ের কবলে পড়লাম? তারই মধ্যে পুরো ঘর ছাই আর ধুলোতে ভরে গেল। ভাতের থালায় ছাই জমে গেল। ঘরের দুলুনি তখনও থামেনি। ওদিকে চাল মচমচ করছে। হুড়মুড়িয়ে পুরো ঘরটা আমাদের উপরে এসে পড়বে বলে মনে হল।