নিরাপত্তা নিয়ে বিতর্ক এবং টানটান উত্তেজনার মধ্যেই রাজ্যে ভোট ঢুকছে পঞ্চম পর্বে। উত্তর ২৪ পরগনার দুই, হুগলির তিন এবং হাওড়ার দুই— এই ৭টি আসনে ভোট আজ, সোমবার। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, সুষ্ঠু ভোটের স্বার্থে ওই ৭ কেন্দ্রের ১০০% বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। দক্ষিণবঙ্গের যে অঞ্চলে শেষ তিন দফার ভোট রয়েছে, তার সবটাই প্রায় শাসক দল তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। পঞ্চম পর্বে আজকের ৭টি এবং তার পরের দুই দফায় যে ১৭ আসনে ভোট রয়েছে, সেই ২৪টি আসনের সবক’টিই এখন তৃণমূলের দখলে।
তবু সাম্প্রতিক কালে দল বদলে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া এবং কিছু এলাকায় গেরুয়া প্রভাব বৃদ্ধির জেরে রাজনৈতিক উত্তেজনা থাকছে আজকের ভোটে। সেই তালিকায় উপরের দিকে থাকবে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর ও বনগাঁ। তার মধ্যে ব্যারাকপুরে গত কয়েক দিনের লাগাতার তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল ভোটের আগের দিন, রবিবারও। দু’পক্ষই পরস্পরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় থাকা সত্ত্বেও এ দিন ব্যারাকপুর কেন্দ্রের হালিশহর ও পলতায় গোলমাল বাহিনীর ‘কার্যকারিতা’ নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। অন্য দিকে, বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের গাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য শাসক দলের চাপানউতোর বেধেছে।
বাংলার ৭টি ছাড়া আজ ভোট হবে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং জম্মু ও কাশ্মীরের ৪৪টি আসনে। রায়বরেলীতে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে লড়াই বিজেপির দীনেশপ্রতাপ সিংহের। অমেঠীতে রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে প্রার্থী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। লখনউ থেকে লড়ছেন বিজেপির রাজনাথ সিংহ। জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ কেন্দ্রে তৃতীয় দফার নির্বাচন আজ। ভোট হবে পুলওয়ামা, কুলগাম ও লাদাখে।
বারাসতে গিয়ে বাংলায় কমিশনের বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, আজ ৫৭৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটের দায়িত্বে থাকবে। যদিও সন্ধ্যায় কমিশনের দফতর থেকে কেন্দ্রওয়াড়ি যে হিসেব দেওয়া হয়েছে, তা ধরলে বাহিনী থাকছে ৫৩০ কোম্পানি।
বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র মতো সংগঠনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঠিক ভূমিকার দাবিতে সরব। কমিশনের দফতরে এ দিন বিক্ষোভের পরে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র একটি প্রতিনিধিদল ব্যারাকপুর, হাওড়া ও আরামবাগ কেন্দ্রের থানাওয়াড়ি দুষ্কৃতীদের তালিকা এবং মহিলাদের উপরে আক্রমণের কিছু ছবি-সহ এফআইআরের প্রতিলিপি জমা দিয়েছেন। সংগঠনের সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনী নিযুক্ত করে আর ভোট-লুটেরা গুন্ডাদের খোলা ছেড়ে রেখে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়।’’
হালিশহর ও পলতায় অশান্তির পরে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার অভিযোগ করেছেন, ‘‘ওই কেন্দ্রের ভোটার না হয়েও প্রচার শেষের পরে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দলবল নিয়ে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কমিশনকে জানিয়েছি, তাঁকে যেন অবিলম্বে ওখান থেকে বার করে দেওয়া হয়।’’
তৃণমূল আবার পাল্টা দাবি করেছে বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিংহকে ‘নজরবন্দি’ করার। অর্জুন যদিও মন্তব্য করেছেন, এক একটা ভোটে তাঁর নতুন নতুন কৌশল থাকে, এ বারও থাকবে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয়বাবু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘ভোটের পরে আজ সন্ধ্যা থেকেই অর্জুন বুঝতে পারবে, কত ধানে কত চাল! ফল বেরোলেও বুঝবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy