তিন বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনে, কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের গা ঘেঁষাঘেঁষির জেরেই তৃণমূলকে কুপোকাত করা গিয়েছিল— হাওয়ায় ঘুরছে এমনই মত। অপূর্ব সরকার তখনও অধীরের ‘ঘনিষ্ঠ’ গোত্রে পড়েন। বহরমপুর থেকে অধীর কান্দির দিকে রওনা দিয়েছেন শুনলেই ডেভিড-বাহিনী দাদার অপেক্ষায় পল গুনতেন। তিন বছরে হাওয়া বয়েছে এলোমেলো। এখন সেই অপূর্ব, দাদার থেকে বহু দূরে, এক অচেনা নাবিক!
তৃণমূলের দাপুটে নেতা জানালেন, ‘‘সে বার আমাদের গোষ্ঠী বিবাদ বার বার সামনে এসে পড়ছিল। বাধ্য হয়েই বহিরাগত শান্তনু সেনকে প্রার্থী করতে হয়। মনে রাখবেন, সেই দু’টো কাঁটাই এ বার উপড়ে ফেলা গিয়েছে।’’
এ বার সেই বিবাদের ছায়া নেই, নেই কং-বামের সেই ‘ভাই-ভাই’ সখ্যও। ডেভিডের দাদা পার্তপ্রতিম সরকার বলছেন, ‘‘আর একটা কথা মনে রাখবেন, এ বার কংগ্রেসের সব শক্তি জড়ো করেছি তৃণমূলে। বিধায়ক ছাড়াও কান্দির দশটি অঞ্চলের কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন তৃণমূলে। ফলে পুরনো হিসেব কষবেন না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তা হলে সহজ সমীকরণে যা দাঁড়ায় এ বার রাজ্যের শাসক দলের খোলা মাঠে জয়! কান্দি বাসস্ট্যান্ডের চায়ের দোকানে বসে স্কুল শিক্ষক ভদ্রলোক বলছেন, ‘‘তা হলে তো ভোট না দিয়ে ঘরে বসে থাকলেই হয়! মনে রাখবেন, কান্দি এখনও কংগ্রেসের শহর। গোষ্ঠীবিবাদ শব্দটা তৃণমূলের প্রতিশব্দ!’’ তার ছায়া মাঝে মধ্যেই বড় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দল বদলে তৃণমূলে পা বাড়ানো অধীরের পুরনো অনুগামী নিজে না উপস্থিত থাকলেও ‘দাদা’র সভায় পরিবারকে পাঠিয়ে দু’দিক সামাল দিচ্ছেন। পার্থবাবুর অমোঘ দাবি সত্ত্বেও গোষ্ঠী বিবাদের একটা আঁচও যে রয়ে গিয়েছে, তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই তা মালুম হচ্ছে।
দলীয় পর্যবেক্ষকের এলাকা ভিত্তিক ‘লিড’ দেওয়ার ফতোয়ায় এলাকার বাইরে প্রচারে না বেরোনো এক নেতা বলছেন, ‘‘অন্য এলাকায় কে বাঁচল কে মরল, দেখতে যাব কেন, আপনি বাঁচলে বাপের নাম!’’সে কথা মানছেন না পার্থ-অপূর্ব কেউই। পার্থ বলছেন, ‘‘আমরা ভোটটা সাংগঠনিক ভাবে করি। আমাদের দলীয় বিবাদ নিছকই বিরোধীদের প্রচার। তাই হিসেবটা গুলিয়ে ফেলবেন না’’
কংগ্রেসের প্রার্থী তথা কান্দি মহকুমা কংগ্রেসের প্রার্থী শফিউল আলম খান ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘বামেরাও নেই, তবে জানেন সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। আর আমার শেষ ভরসা ওটাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy