প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তো বটেই বিজেপির উত্তরবঙ্গের তিনটি কেন্দ্রের লোকসভা প্রার্থীরাও উন্নয়নের থেকে অনেকটাই বেশি সরব হলেন দেশপ্রেম নিয়ে। রায়গঞ্জের দেবশ্রী রায় চৌধুরী থেকে জলপাইগুড়ির জয়ন্ত রায় বা দার্জিলিঙের রাজু বিস্তা। বুধবার কাওয়াখালির সভামঞ্চ থেকে সকলেই উন্নয়নের থেকে বেশি গুরুত্ব দিলেন দেশপ্রমকেই। দেবশ্রী তো বললেন, ‘‘পানীয় জল, রাস্তা এসবের দাবি তো থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকার তা সুরাহার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু পাওনা গন্ডার এসবের থেকে বেশি করে মনে রাখতে হবে দেশের সুরক্ষাকে। মোদী সরকার যেভাবে আতঙ্কবাদীদের, দেশের শত্রুদের বিনাশ করেছে তাই এখন বড় বিষয়।’’
একই সুরে বক্তব্য রেখেছেন বাকি দুই প্রার্থীও। জয়ন্ত রায় বলেছেন, ‘‘মোদীর সরকার জোর গতিতে উন্নয়নের কাজ করছে। তার সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেথা হচ্ছে দেশের নিরাপত্তা, সুরক্ষাকে। দেশবাসীর সুরক্ষার প্রশ্নে মোদী সরকার আপস করে না।’’ আর রাজু বিস্তার কথায়, ‘‘পাহাড়ের গোর্খাদের পাশে আমি সবসময় থাকব। তাঁদের উন্নয়নে কাজ করব। গোর্খারা যেভাবে দেশের সীমান্তে থেকে সবাইকে রক্ষা করেন, তা আমাদের মাথা উঁচু করেছে।’’
প্রার্থীদের বক্তব্য শোনার পর তৃণমূল থেকে শুরু করে অন্য বিরোধী দলগুলো বলছে, এ বারের লোকসভা ভোটটা শুধু দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থার দাবি নিয়েই যেন হচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর উন্নয়ন, পরিকাঠামোর প্রকল্পের থেকে বড় করে দেখানো হচ্ছে যুদ্ধ বা ‘‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে’’। এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও মন্ত্রী গৌতম দেবও। তিনি বলেন, ‘‘এ অঞ্চলের নতুন কোনও উন্নয়নের তো শুনলাম না। আমরাও দেশকে ভালবাসি, সেনাবাহিনীকে সম্মান করি। কিন্তু ভোটের জন্য দেশপ্রেম বা সেনাকে ঢাল বানাই না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শুধু প্রার্থীরা কেন! এ দিন সভা মঞ্চ থেকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন, জেলার সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী বা উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু বা বিজেপি নেত্রীর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের গলাতেও একই সুর শোনা গিয়েছে।
বিজেপি নেতানেত্রী, কর্মী, সমর্থকেরা ছাড়াও মোদীর সভা শুনতে এসেছিলেন শিলিগুড়ির শিবমন্দিরের সমর বণিক বা দেশবন্ধুপাড়ার বিকাশ মালাকারের মত অনেকে। সভার শেষে তাঁদের অনেকেরই আক্ষেপ, উন্নয়নের পরিকল্পনার কোনও কথাই তো শোনা গেল না।