Advertisement
E-Paper

ধনেখালিতে ইভিএম ভাঙচুর, ভোট বন্ধ, অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে

উত্তর ২৪ পরগনার যে ২টি আসনে আজ ভোট, সেগুলি হল ব্যারাকপুর এবং বনগাঁ। ২টি আসনেই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ০৫:৩০
এক যুবককে ধমক দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

এক যুবককে ধমক দিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।

ভোটের হার:

এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৭৪.৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। বাংলার বনগাঁয় ভোট পড়েছে ৭৬.১৮ শতাংশ। ব্যারাকপুরে ৭১.২৮ শতাংশ, হাওড়ায় ৬৭.৫৯ শতাংশ, উলুবেড়িয়ায় ৭৭.৫৭ শতাংশ, শ্রীরামপুরে ৭৩.৩১ শতাংশ, হুগলিতে ৭৬.১৪ শতাংশ এবং আরামবাগে ৭৫.৭৩ শতাংশ করে ভোট পড়েছে।

ইভিএম ভাঙচুর:

ধনেখালিতে ইভিএম ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত ধনেখালি।

পুনর্নির্বাচন:

অবাধ ছাপ্পার অভিযোগে ভোট শুরু থেকেই সরগরম ব্যারাকপুর। তৃণমূলের কর্মীরা বুথে ঢুকে ছাপ্পা দিচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে ব্যারাকপুরে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন।

ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা:

তারকেশ্বরে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা মহারাজা নাগের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলল বিজেপি। অভিযোগ, বুথে ঢোকার মুখে দাঁড়িয়ে তিনি ভোটারদের বলে দিচ্ছেন কোন নম্বরে ভোট দিতে হবে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এমন ছবিই। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্র পরিষদের ওই নেতা।

ভুয়ো ভোটার:

হুগলির মল্লিকপুরে ২৩২ নম্বর বুথে ‘ভুয়ো ভোটার’ ধরলেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ওই বুথের ভিতরেই ৪-৫ জন ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা প্রথমে নিজেদের তৃণমূলের এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। তারপর দাবি করেন, তাঁরা ভোট দিতে এসেছেন। ওই বুথ পরিদর্শন করতে গিয়েই তাঁদের ধরে ফেলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা প্রত্যেকেই ভুয়ো ভোটার ছিলেন বলে লকেটের অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন লকেট। পুরো বিষয়টি ফোনে নির্বাচন কমিশনকেও জানিয়েছেন তিনি। লকেটের অভিযোগ পেয়ে তৃণমূলের এজেন্টকে বুথ থেকে সরিয়ে দেন প্রিসাইডিং অফিসার।

অর্জুনের তাড়া:

অনুগামীদের নিয়ে দৌড়ে লাঠি উঁচিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের তাড়া করলেন বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ। সোমবার নির্বাচনের দিন বেলা ১১টা নাগাদ কাঁকিনাড়ার মনসাতলা প্রাইমারি স্কুলের ঘটনা। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীরা স্লোগান তুলেছিলেন। তখনই তিনি তৃণমূল কর্মীদের তাড়া করেন। পিছন পিছন লাঠি নিয়ে দৌঁড়তে থাকেন তাঁর কর্মীরাও। দৌড়তে গিয়ে অর্জুন পরেও যান। তাতে অল্প চোট পেয়েছেন।

ছাপ্পা ভোট:

বীজপুরের ১৯১, ১৯২ এবং ১৯৩ নম্বর বুথে অবাধ ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

এজেন্টকে হুমকি:

খানাকুলের শিমচকে কংগ্রেস এজেন্টকে হুমকি, বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। সকাল থেকেই খানাকুলের শিমচকে বুথের সামনে অবৈধ জমায়েত হতে শুরু করে। পুলিশ এলাকা খালি করেছে। কিন্তু হুমকির জেরে এখনও ভয়ে বুথে যায়নি কংগ্রেস এজেন্ট।

বনগাঁর স্বরূপনগরে অনেকগুলো বুথে বিরোধী এজেন্টদের হুমকি এবং বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বনগাঁ লোকসভার স্বরূপনগর বিধানসভার বালতি-নিত্যানন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২১, ১২৭ এবং ১২৮ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই বিরোধী এজেন্টদের তুলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপি এবং সিপিএমের।

ঠোঁট ফাটল অর্জুন সিংহের:

ব্যারাকপুরের মোহনপুরে তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মীদের মধ্যে অশান্তি। ঠোঁট ফেটে রক্তাক্ত হলেন অর্জুন সিংহ। প্রথমে জানা যায়, তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপির ভোটারদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এক মহিলাও অভিযোগে জানান, বিজেপিকে ভোট দিলে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, অর্জুন সিংহের লোকেরাই তাঁদের হুমকি দিচ্ছে।

সকালেই মোহনপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন অর্জুন সিংহ। অর্জুন সিংহ পৌঁছলে তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা।

ব্যারাকপুরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন অর্জুন সিংহ। তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন আধা সামরিক বাহিনীর এক জওয়ান।

তখনই মোহনপুরের ২৪১ নম্বর বুথে বিজেপি পোলিং এজেন্টকে বার করে দেওয়া হয়েছে খবর পান অর্জুন সিংহ। পোলিং এজেন্টকে বাড়ি থেকে আনতে গেলে তৃণমূলের কর্মীরা তাঁকে বাধা দেন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। তৃণমূল কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন অর্জুন সিংহ। ঠোঁট ফেটে যায় তাঁর। মোহনপুরের ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বাইকে আগুন:

গাইঘাটার তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে হামলা, বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। গোঘাট ১৪৮ নম্বর বুথে আবার সিপিএম এজেন্ট মিন্টু সাঁতরাকে মারধরের অভিযোগ।

বুথ জ্যাম:

ভাটপাড়া মিউনিসিপ্যালিটির ৬৩ এবং ৬৪ নম্বর বুথ জ্যামের অভিযোগ। অভিযোগ বহিরাগতরা এসে বুথ জ্যাম করে দেয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। লাঠি উঁচিয়ে সবাইকে তাড়া করে দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী।

ভোট দিলে খুনের হুমকি:

উদয়নারায়ণপুরে বিজেপি সভাপতির বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোট দিতে গেলে পা ভেঙে দেওয়ার এবং খুনের হুমকিও দেওয়া হয় তাঁকে। ভয়ে সারা রাত ঘুমতে পারেননি তাঁরা।

নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করলেন শান্তনু ঠাকুর:

সকাল সকাল ভোট দিলেন বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। কারণ গলায় বিজেপির উত্তরীয় জড়িয়ে তিনি ভোট দিতে গিয়েছিলেন।

শনিবার প্রচারের বেরিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি। ভোট দিতে এসে তিনি ফের এটাকে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মমতাবালা ঠাকুরের উদ্দেশ্য এখান রাজ করবেন। গণতন্ত্র তার জবাব দেবে। আমাকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কারণ শান্তনু ঠাকুরকে না সরালে তাঁর সঙ্গে তো পারা মুশকিল। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মতো এক মস্তান সঙ্গে রয়েছেন, তিনি তো এটাই চাইছেন।’’

বুথ দখল:

জাঙ্গিপাড়ার ২০০, ২৭১, ২৭২ এবং জাঙ্গিপাড়ার সাওড়াবেরিয়ার ১৯২ এবং ১৯৩ নম্বর বুথ দখলের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জঙ্গিপাড়ার দিঙ্গলহাটি ২০০ নম্বর বুথ থেকে সমস্ত বিরোধী দলের এজেন্টদের বার করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

নৈহাটির ১৬৯ নম্বর বুথ দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কোনও বিজেপি এজেন্টকে, অভিযোগ বিজেপির।

বিজেপির অফিস ভাঙচুর, বোমবাজি:

দত্তপুকুরের কাসেমপুরে ১৭৬ নম্বর বুথের পাশে বিজেপির ক্যাম্প অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোটর আগের দিন রবিবার গভীর রাতে ওই ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। সেখানেও বোমাবাজিও চলে বলে খবর।

দেশের আরও ছ’টি রাজ্যের সঙ্গে ভোটগ্রহণ আজ পশ্চিমবঙ্গেও। এই পঞ্চম দফায় ভোট হয়ে যাচ্ছে হাওড়া এবং হুগলি জেলার সব আসনে। সঙ্গে ভোট হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার ২টি আসনেও। রাজ্যের যে আসনগুলিতে ভোটগ্রহণ আজ, তার মধ্যে অনেকগুলিতেই শাসক এবং বিরোধীর মধ্যে জোরদার লড়াই এ বার। রয়েছেন বেশ কয়েকজন নজরকাড়া প্রার্থীও।

আরও পড়ুন: সনিয়া-রাহুল-রাজনাথদের ভাগ্য ইভিএম বন্দি হচ্ছে আজ

উত্তর ২৪ পরগনার যে ২টি আসনে আজ ভোট, সেগুলি হল ব্যারাকপুর এবং বনগাঁ। ২টি আসনেই তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ভাটপাড়ার চারবারের বিধায়ক তথা শিল্পাঞ্চলের দাপুটে নেতা অর্জুন সিংহ তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছেন বিজেপি-তে এবং ব্যারাকপুর আসনে বিজেপি প্রার্থী তিনিই। অর্জুনের লড়াই ওই এলাকার দু’বারের তৃণমূল সাংসদ তথা দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিদেবীর বিরুদ্ধে। অর্জুন বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে প্রায় গোটা এলাকা। আজকের ভোটগ্রহণ ব্যারাকপুরে কতটা সুষ্ঠু ভাবে হয়, সে দিকে অতএব নজর থাকবে গোটা রাজ্যেরই। আর বনগাঁ আসনে লড়াই শুধু তৃণমূল আর বিজেপির নয়, সেখানে লড়াই মতুয়া ঠাকুরবাড়ির দুই শিবিরেরও। বিদায়ী সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এ বারও তৃণমূল প্রার্থী বনগাঁয়। আর তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী তাঁর দেওর মঞ্জুলকৃষ্ণের ছোট ছেলে তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের বর্তমান প্রধান শান্তনু ঠাকুরের।

হাওড়ায় বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন রন্তিবেদ সেনগুপ্ত। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা রন্তিদেব আরএসএসের পছন্দ হিসেবে হাওড়ায় টিকিট পেয়েছেন। ওই জেলারই আর এক আসন উলুবেড়িয়ায় বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ সাজদা আহমেদের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী অভিনেতা থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে মূল লড়াই এলাকার দু’বারের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকারের মধ্যে। হুগলি আসনেও মূল লড়াই তৃণমূল আর বিজেপি-রই। দু’বারের তৃণমূল সাংসদ রত্না দে নাগের বিরুদ্ধে সেখানে জোরদার লড়াই দিচ্ছেন টলিউডের আর এক অত্যন্ত পরিচিত মুখ তথাবিজেপি মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। আরামবাগে এ বারও তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন গতবার জয়ী হওয়া অপরূপা পোদ্দার ওরফে আফরিন আলি। তাঁর বিরুদ্ধে সিপিএমের টিকিটে লড়ছেন ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত এলাকার সাংসদ থাকা শক্তিমোহন মালিক। বিজেপির প্রার্থী তপন রায় এবং কংগ্রেসের প্রার্থী জ্যোতিকুমারী দাস।

Lok Sabha Election 2019 TMC BJP Congress লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ Election 2019 Phase 5
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy