Advertisement
E-Paper

গেস্ট হাউসে পল্টু, মুকুল ও শমীক, তুলকালাম দমদমে

তৃণমূলের অভিযোগ, রাত ১০টা ১০ নাগাদ শমীকবাবু ও মুকুলবাবু গেস্ট হাউসে ওই স্থানীয় সিপিএম নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০৩:০৬
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

শেষ দফার ভোটের প্রচার শেষ হতে না-হতেই বৃহস্পতিবার রাতে বিজেপি-সিপিএম গোপন বৈঠক এবং টাকা বিলির অভিযোগকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে দমদম নাগের বাজার এলাকা।

তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা নাগের বাজারের বাবুতলায় একটি গেস্ট হাউস বা অতিথি নিবাসে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য, বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং দমদমের এক বর্ষীয়ান সিপিএম নেতাকে প্রায় দু’ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখেন। বিক্ষোভের মধ্যেই শুরু হয় ভাঙচুর। স্থানীয় জনতাও তাতে যোগ দেয়। ভাঙচুর হয় তিনটি গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায়। গাড়ির কাচে হাত কেটে যায় দমদম থানার আইসি-র। পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরাও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘণ্টা দুয়েক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

তৃণমূলের অভিযোগ, রাত ১০টা ১০ নাগাদ শমীকবাবু ও মুকুলবাবু গেস্ট হাউসে ওই স্থানীয় সিপিএম নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে যান। দক্ষিণ দমদম পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর অভিজিৎ মিত্রের অভিযোগ, সিপিএমের পল্টু দাশগুপ্তের সঙ্গে বৈঠক করতে মুকুলবাবু ও শমীকবাবু ওই গেস্ট হাউসে ঢুকেছিলেন। তৃণমূলকর্মীরা দেখতে পেয়ে গেস্ট হাউস ঘিরে ফেলেন। স্থানীয় লোকজনও ঘেরাওয়ে যোগ দেন। ‘‘বিলি করার জন্য গাড়িতে করে টাকা আনা হয়েছিল। আমরা বারে বারেই বলছিলাম, বিজেপি ও সিপিএম জোট বেঁধেছে। এ দিনের ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল,’’ বলেন অভিজিৎবাবু।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিক্ষোভ-ঘেরাওয়ের মধ্যেই টাকা বিলির জল্পনাকে ঘিরে গাড়ি ভাঙচুর শুরু হয়। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেন, ‘‘মুকুল রায় ও শমীক ভট্টাচার্য সিপিএমের পল্টু দাশগুপ্তের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছিলেন। টাকার লেনদেন হচ্ছিল। তৃণমূল কোনও বিক্ষোভ করেনি।’’ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয়বাবু কী করে জানলেন যে, ওখানে টাকার লেনদেন হচ্ছিল? গাড়ি ভাঙচুরের অধিকার ওঁদের কে দিয়েছে?’’ সিপিএম নেতা পলাশ দাস বলেন, ‘‘পল্টু দাশগুপ্ত ওখানে আছেন কি না, জানি না। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে দল শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’

ওই গেস্ট হাউসের উপরের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রাজু সরকারের দাবি, পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন নেতা তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন। রাজুবাবু বলেন, ‘‘পল্টুবাবু আমার সম্পর্কিত কাকা। আমি মুকুলবাবু ও শমীকদারও ঘনিষ্ঠ। গণতান্ত্রিক দেশে যে-কেউ যে-কারও বাড়িতে আসতে পারে। ইটপাথর ছুড়ে আমার ঘর তছনছ করা হয়েছে। মুকুলবাবুর গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এখনই এই সন্ত্রাস হলে ভোটের দিন তৃণমূল কী করবে, সবাই বুঝতে পারছেন।’’

অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, রাজুবাবু মিথ্যে বলছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই সেটা বোঝা যাবে। ওই গেস্ট হাউস সিপিএম ও বিজেপি নেতাদের আস্তানা হয়ে উঠেছে। মুকুলবাবুরা ওই গেস্ট হাউসে নিয়মিত আসেন। বেশি রাতে গেস্ট হাউস থেকে বেরোনোর মুখে মুকুলবাবু বলেন, ‘‘রাজু আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। দলের ছেলে। ওর স্ত্রীর জন্মদিনের নিমন্ত্রণে এসেছিলাম। আমার গাড়িতে টাকা থাকলে পুলিশ সেটা আটকে তল্লাশি চালিয়ে দেখুক। আসলে ভোটের গতিপ্রকৃতি দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়েছেন। এই হামলায় সেটাই প্রমাণিত।’’

পল্টুবাবু জানান, রাজু তাঁর ভাইপোর বন্ধু। তাঁর স্ত্রীর জন্মদিনের নিমন্ত্রণ রাখতে তিনি গেস্ট হাউসে যান। ‘‘মুকুলবাবু ও শমীকবাবু যে ওখানে আছেন, তা জানতাম না, বলেন ওই সিপিএম নেতা।

বিজেপি প্রার্থী শমীকবাবু বলেন, ‘‘রাজু আমাদের দলের ছেলে। ওর স্ত্রীর জন্মদিনে আমরা নিমন্ত্রিত ছিলাম। আমাদের দেখেই তৃণমূল লোকজন ঘিরে ফেলে। ইটপাথর ছোড়া হয় রাজুর বাড়িতে। মুকুলদার সঙ্গে থাকা গাড়িগুলি ভাঙচুর হয়।’’

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ Mukul Roy TMC BJP CPM Dum Dum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy