Advertisement
E-Paper

কাপড়ের রং বদলে এক মঞ্চে সব সভা

বর্ধমান শহর থেকে ৩০-৩২ কিলোমিটার দূরে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের লাগোয়া গলসি ১ ব্লকের পুরষার ভোট-ছবি এমনই।

চিরন্তন রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০২:২১
সহাবস্থান: এই মঞ্চেই হয় সবার জনসভা। পূর্ব বর্ধমানের পুরষায়। নিজস্ব চিত্র

সহাবস্থান: এই মঞ্চেই হয় সবার জনসভা। পূর্ব বর্ধমানের পুরষায়। নিজস্ব চিত্র

গায়ে গা লাগিয়ে উড়ছে যুযুধান লাল-পদ্ম-ঘাসফুলের পতাকা। পথেঘাটে মানুষ ডেকে বলে যাচ্ছেন— ‘‘এ গ্রামে ভোট সত্যিই উৎসব। কোনও নির্বাচনে একটুও ঝামেলা হয়েছে বলে শুনিনি কখনও।’’ কেউ কেউ শোনালেন, ‘‘ভোটের দুপুরে সব দলের কর্মীরা খাবার খান একপাতে। চড়ুইভাতির আমেজে।’’ শুধু তা-ই নয়। জনসভার মাঠ নিয়ে টানাপড়েনও নেই সেই জনবসতিতে।

বর্ধমান শহর থেকে ৩০-৩২ কিলোমিটার দূরে, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের লাগোয়া গলসি ১ ব্লকের পুরষার ভোট-ছবি এমনই।

হাজার দশেক মানুষের সেই বসতিতে পৌঁছেই তার আঁচ মিলল।

বাজার এলাকায় একচিলতে মাঠ। চারপাশে বামফ্রন্ট, তৃণমূল, বিজেপির পতাকায় ছয়লাপ। সঙ্গে প্রার্থীদের প্রচার-পোস্টারও। সেই মাঠের এককোণে প্রচার-মঞ্চ। গ্রামের অনেকে এগিয়ে এলেন পাশে। জানালেন, ওই মঞ্চের কাঠামো থাকে একই। শুধু বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের প্রচারসভার আগে সেটির কাপড়ের রং বদলে দেওয়া হয়। প্রতিপক্ষ সব দলের স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা এক সুরে বলেন, ‘‘ভোট তো গণতন্ত্রের উৎসব। সবার অধিকার। এখানে সবাই নিজের মতো করে রাজনীতি করে। ও সব হানাহানি, মারামারি নেই।’’

পুরষায় সিপিএম নেতা হিসেবে পরিচিত শেখ সাবেদ রহমান। তিনি বলেন, ‘‘সভাস্থল নিয়ে অনেক জায়গায় সঙ্কট হচ্ছে বলে শুনছি। আমাদের গ্রামে ওই মঞ্চে তৃণমূলের সভা হয়েছে ১২ এপ্রিল। পরের দিন ছিল বামেদের সভা। সবুজ বদলে সে দিন লালরঙের কাপড় টাঙানো হয়েছে। ২৩ এপ্রিল কংগ্রেসের প্রচারের পরে মঞ্চ খোলা হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ততক্ষণে সেখানে আরও ভিড় জমেছে। কেউ কেউ বললেন, ‘‘ভিন্ন দলের প্রতীক-পতাকার এমন সহাবস্থান অন্য কোথাও কি সহজে দেখা যায়?’’

পঞ্চায়েত ভোটেও কি এমনই ছবি ছিল পুরষায়? তৃণমূলের তাহেদ আলম মীরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে তার জবাব দিলেন কংগ্রেসের শেখ নবীরুল হক। দু’জনেই বলেন, ‘‘এখানে কে, কাকে বাধা দেবে! নিশ্চিন্তে নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন সকলে। ভোটে এই পাড়ায় পুরনো দিন থেকে কখনও কোনও গণ্ডগোল হয়েছে বলে শুনিনি।’’ তবে গ্রামবাসীদের কয়েক জন জানান, আশপাশের পারাজ, কসবা, রামগোপালপুরে আগের কয়েকটি ভোটে অশান্তির খবর তাঁরা পেয়েছেন। কিন্তু সেই আঁচ পৌঁছয়নি পুরষায়। এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘এই গ্রামে নিরাপত্তাবাহিনী না-এলেও ভোটের গোলমাল হবে না। এটুকু নিশ্চিত করে বলা-ই যায়।’’

গ্রামবাসীরা জানান, গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামের চারটি আসনেই জিতেছে তৃণমূল। এ বার কী হবে তাঁদের লোকসভা কেন্দ্রে? ওই ভিড়ে তখন মিশে তিন দলের সমর্থকেরা। সমস্বরে তাঁদের উত্তর— ‘‘এই গ্রামে রাজনীতির কোনও ঝামেলা হয়তো হয়নি, কিন্তু বাইরে যা ঘটছে তার প্রভাব পড়তেও পারে পুরষার ভোটবাক্সে।’’

Politics Lok Sabha Election 2019 TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy