তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতাকে প্রার্থী কেন করা হবে, সেই প্রশ্ন তুলে কোচবিহারে বিক্ষোভে নেমেছিল বিজেপি। এ বার কংগ্রেসে বিক্ষোভ দেখা দিল ‘বিজেপির লোক’কে আসানসোলে প্রার্থী করার বিরুদ্ধে! পোড়ানো হল প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের কুশপুতুলও।
রাজ্যের আরও চার আসনের জন্য দলের প্রার্থীদের নাম বুধবার ঘোষণা করেছে এআইসিসি। যাদবপুর ও বাঁকুড়া ছাড়া বাকি ৪০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়ে গেল কংগ্রেসের। বামেরাও বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ ছেড়ে রেখে ৪০ আসনে প্রার্থী দেওয়ায় এখনও পর্যন্ত চতুর্মুখী লড়াই হচ্ছে ৩৮ আসনে।
কলকাতা উত্তরে আইনজীবী সৈয়দ শাহিদ ইমাম এবং তমলুকে প্রত্যাশিত ভাবে লক্ষ্মণ শেঠের নামই প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু আসানসোলে প্রার্থী হিসেবে বিশ্বরূপ মণ্ডলের নাম তালিকায় দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রার্থী কংগ্রেসের ‘লোক’ই নন। সামাজিক মাধ্যমে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং অন্যদের সঙ্গে বিশ্বরূপবাবুর নানা ছবি দেখিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, কংগ্রেসে কী ভোটে লড়ার লোক ছিল না? আসানসোলের রামবন্ধুতলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বিক্ষোভও দেখান কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। পোস্টারে বিশ্বরূপবাবুকে ‘বিজেপি এজেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কংগ্রেসের আরও চার
• কলকাতা উত্তর - সৈয়দ শাহিদ ইমাম
• তমলুক - লক্ষ্মণ শেঠ
• ঘাটাল - খোন্দকার মহম্মদ সইফুল্লা
• আসানসোল - বিশ্বরূপ মণ্ডল
কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব পাঁচ জনের নাম পাঠিয়েছিলেন বিধান ভবনে। কিন্তু তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে না বেছে সোমেনবাবু, প্রদীপবাবুরা অন্য নাম দিল্লির সিলমোহরের জন্য পাঠানোয় ক্ষুব্ধ জেলা নেতা-কর্মীদের বড় অংশ। জেলার এক নেতার বক্তব্য, ‘‘প্রথমত সিপিএমের সঙ্গে জোট থাকলে আসানসোলে ভাল লড়াই করা যেত। সেটা হল না। এই অবস্থায় এলাকার কংগ্রেস রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কাউকে প্রার্থী করা যেত। সেটাও হল না!’’ এমন প্রার্থীকে নিয়ে বুথ কমিটি তৈরি করাও সমস্যা হবে বলে জেলা নেতৃত্বের একাংশের মত। দলেরই অন্য এক নেতার ক্ষোভ, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, মুকুল রায় কংগ্রেসে প্রার্থী পাঠিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়কে জেতানোর জন্য!’’
প্রার্থী বিশ্বরূপবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপির গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, কথায়-কাজে ফারাক পীড়াদায়ক হয়ে ওঠে। দিন ১০-১২ আগে দল ছেড়ে দিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি।’’ তবে কোথায় যোগদানের অনুষ্ঠান হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কংগ্রেসেরই একাংশ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘তমলুকে লক্ষ্মণবাবুও তো বিজেপি থেকে এসেছেন। তাতে কী হল? কারা এমন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, খোঁজ নিয়ে কথা বলব।’’ পশ্চিম বর্ধমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি তরুণ রায়েরও দাবি, ‘‘প্রার্থীকে জেতাতে আমরা সবাই একজোট হয়ে প্রচারে নামছি।’’