সিএপিএফ (সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স) নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মহেশ চৌধুরী কী ভাবে ভিন্রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ডোমিসাইল শংসাপত্র জোগাড় করতেন, এখন তা খতিয়ে দেখতে চাইছে সিবিআই। সে কারণে শুক্রবার ধৃতের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিযুক্তের আইনজীবী যদিও তাঁর মক্কেলের গ্রেফতারি নিয়ে সওয়াল করেছেন। তাঁর জামিনের আবেদন করেছেন। শেষ পর্যন্ত জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। প্রাক্তন জওয়ান মহেশকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।
সিবিআই আদালতে দাবি করেছিল, প্রাক্তন জওয়ান মহেশ চৌধুরীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক কোটি টাকার হদিস মিলেছে। ভুয়ো নথি (ডোমিসাইল শংসাপত্র) তৈরি করে ভিন্রাজ্যের বাসিন্দাদের এ রাজ্য থেকে আধাসেনায় চাকরি পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মহেশ। পরিবর্তে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। এমনকি এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছিলেন, পাকিস্তানের বাসিন্দাদেরও চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন মহেশ। আদালতে শুক্রবার এই নিয়ে সওয়াল করেন মহেশের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। তিনি নিজের মক্কেলের জামিনের আবেদন করে জানান, এই মামলায় আরও যাঁদের নাম উঠেছে, তাঁরা কোথায়? তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি, অথচ মহেশকে কেন গ্রেফতার করে নেওয়া হল? তাঁর আরও সওয়াল, পাকিস্তানের যে নাগরিকদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলা হচ্ছে, তাঁরা কোথায়?
আরও পড়ুন:
সিবিআইয়ের আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করে জানান, ডোমিসাইল শংসাপত্র কী ভাবে জোগাড় করতেন মহেশ, সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। ‘বৃহৎ ষড়যন্ত্র’ রয়েছে এর মধ্যে। সিবিআইয়ের আরও দাবি, সরকারি বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে ‘যোগ’ ছিল প্রাক্তন জওয়ান মহেশের। যাঁদের চাকরি হয়েছে, তাঁদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি। সিবিআই এর আগে শুনানিতে দাবি করেছিল, চাকরিপ্রার্থীদের থেকে চার থেকে ছয় লক্ষ টাকা করে নিতেন মহেশ। শুক্রবার তারা সওয়াল করে জানিয়েছে, সেই টাকা কোথা থেকে এল আর কোথায় গেল, সেই ‘চেন’ খুঁজতে হবে। সিবিআইয়ের দাবি, তাদের হেফাজতে থাকাকালীন সহযোগিতা করেননি মহেশ। তদন্তকে ভুলপথে চালনা করার চেষ্টা করেছেন। এর পরেই মহেশের জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়।
সিএপিএফ-এর কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। অভিযোগ, ২০২১ এবং ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু প্রার্থী ভুয়ো ডোমিসাইল শংসাপত্র ব্যবহার করেছেন। তাঁরা এ রাজ্যের বাসিন্দা না হয়েও তা হওয়ার দাবি করেছেন। দু’জন চিহ্নিত অভিযুক্ত-সহ অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে সিবিআই। চিহ্নিত দুই অভিযুক্তের মধ্যে অন্যতম মহেশ। তিনি এক কেন্দ্রীয় বাহিনীতে সেপাই পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং স্টোর ডিপোয় কর্মরত।