পাঁচ বছর আগে মদন তামাঙ্গ খুন হওয়ার পরেও অন্যতম অভিযুক্ত রবীন সুব্বা দার্জিলিঙেই ছিলেন। কিন্তু তখন তাঁকে গ্রেফতারের কথা সে-ভাবে ভাবাই হয়নি। চার্জশিট পেশের পরে অভিযুক্তদের ধরপাকড়ের পর্বে সিবিআই শুক্রবার আদালতে জানাল, রবীন দুবাই পালিয়ে গিয়েছেন।
সম্প্রতি রবীনকে খুঁজতে সিবিআইয়ের একটি দল কালিম্পং গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে নিজের বাড়িতে তাঁকে পাওয়া যায়নি। খোঁজখবর করে সিবিআই অফিসারেরা জানতে পারেন, তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার অনেক আগেই, ২০১৪ সালে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান রবীন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে দুবাইয়ে গিয়ে কাজ করেছেন তিনি। আবার ফিরেও এসেছেন। তবে দুবাইয়ে তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ২০১৪ সালে শেষ দফায় সেখানে চলে যাওয়ার পরে তিনি আর পাহাড়মুখো হননি।
মদন-হত্যা মামলায় মূল অভিযুক্ত নিকল তামাঙ্গকে প্রথমে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করলেও তিনি শিলিগুড়িতে সিআইডি-র হেফাজত থেকে পালিয়ে যান। তার পরে নিকলের নামে রেড কর্নার নোটিস জারি করেও তাঁকে ধরতে পারেনি সিবিআই। ঘটনার পর থেকে অন্যতম অভিযুক্ত দীনেশ রায়েরও খোঁজ নেই। খুনের সময় নিকল ও দীনেশ দু’জনেই অকুস্থলে ছিলেন। অভিযোগ, দীনেশই ছুরি মারেন মদনের গলায়। দু’জনেই ভারতের কোনও প্রতিবেশী দেশে আছেন বলে সিবিআইয়ের সন্দেহ।
২০১০ সালের ২১ মে, দার্জিলিঙে খুন হন অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের নেতা মদন। বিমল গুরুঙ্গ-সহ পাহাড়ের বেশির ভাগ নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তিনি। মদনের অভিযোগ ছিল, পাহাড়বাসীকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করছেন বিমলেরা। মদন যখন সমান্তরাল একটি শক্তি কেন্দ্র গড়ে তুলতে যাচ্ছেন, সেই মোক্ষম সময়েই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় চিরতরে।
তদন্তে নামে সিবিআই। ২৯ মে বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি, হরকাবাহাদুর ছেত্রী-সহ পাহাড়ের বেশ কিছু নেতাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। কলকাতার বিচার ভবনের প্রধান বিচারক গোপালচন্দ্র কর্মকার ৬ জুন ২৩ জন অভিযুক্তের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে বলেন। তিনি সিবিআইকে নির্দেশ দেন, ২৬ জুনের মধ্যে পরোয়ানা জারি করে আদালতে জানাতে হবে। কিন্তু ৮ জুন সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন অভিযুক্তদের মধ্যে ২২ জন। তাঁরা আগাম জামিনেরও আর্জি জানান। চার্জশিটে অভিযুক্ত ২৩ জনের মধ্যে হাইকোর্টে যাননি শুধু রবীন। তাই শুধু তাঁকেই গ্রেফতার করতে সিবিআই অফিসারেরা পাহাড়ে গিয়েছিলেন।
সিবিআইয়ের কৌঁসুলি অরুণকুমার ভগত এ দিন বলেন, ‘‘হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া ২২ অভিযুক্তের আগাম জামিনের শুনানি হবে ১ জুলাই। তত দিন তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা স্থির হবে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy