Advertisement
E-Paper

দিনহাটা উদয়নকেই দেবেন, কাছে টেনে বার্তা মমতার

শেষ পর্যন্ত জল্পনার অবসান! ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ যোগ দিলেন তৃণমূলেই। তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, বৃহস্পতিবার বিকালে লালবাজারের কাছে একদা তাঁর বাম সহকর্মী-নেতারা যখন তৃণমূল সরকারের পুলিশের হাতে রক্তাক্ত হচ্ছেন, প্রায় সেই সময়েই উদয়নবাবুকে শাসক দলে সাদরে বরণ করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! তৃণমূলে যোগ দিলেও ফ ব-র টিকিটে নির্বাচিত বিধায়ক বা দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ অবশ্য ছাড়েননি উদয়নবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৫ ১৭:৫৮

শেষ পর্যন্ত জল্পনার অবসান! ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ যোগ দিলেন তৃণমূলেই। তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, বৃহস্পতিবার বিকালে লালবাজারের কাছে একদা তাঁর বাম সহকর্মী-নেতারা যখন তৃণমূল সরকারের পুলিশের হাতে রক্তাক্ত হচ্ছেন, প্রায় সেই সময়েই উদয়নবাবুকে শাসক দলে সাদরে বরণ করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! তৃণমূলে যোগ দিলেও ফ ব-র টিকিটে নির্বাচিত বিধায়ক বা দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ অবশ্য ছাড়েননি উদয়নবাবু।

মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি থেকে কলকাতা ফেরেন এ দিন বিকালে। আর সেই মুহূর্তেই উদয়নবাবু বিমানবন্দরে গিয়ে উপস্থিত হন। বিমানবন্দরেই তাঁর তড়িঘড়ি তৃণমূলে যোগদানে শাসক দলের অন্দরেই বিস্ময় তৈরি হয়েছে। শাসক দলের নেতারা তৃণমূলের দফতরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে দলবদল করানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। ঘটনা দেখে তাঁদের কেউ কেউ আড়ালে বলেছেন, ‘‘এত তাড়া কীসের, বুঝলাম না! একেবারে বিমানবন্দরেই দলবদল করে বসলেন!’’

উদয়নবাবুকে দলে স্বাগত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘উনি ভাল সংগঠক। ওঁর বাবা কমল গুহের সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয় ছিল। তাঁর পরিবারের অবদান অপরিসীম। তাঁরই পুত্র উদয়ন আগামী দিনে দিনহাটা থেকেই লড়বেন। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গে তাঁকে কাজে লাগানো হবে।’’ যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক করে দেন মমতা। দলবদল নিয়ে উদয়নবাবু বিস্তারিত ভাবে কোনও মন্তব্য না করে শুধু বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’ মমতার মন্তব্যেই ইঙ্গিত মিলছে, আপাতত বিধায়ক পদ থেকে উদয়নবাবুকে সম্ভবত ইস্তফা দিতে হচ্ছে না। এর আগে কংগ্রেস থেকে ইমানি বিশ্বাস, সুশীল রায়, অসিত মাল, গোলাম রব্বানি, উমাপদ বাউরি বা সিপিএম থেকে ছায়া দলুইকে তৃণমূলে যোগদান করানো হলেও কেউই বিধায়ক-পদ ছাড়েননি। সেই ধারা এ বারও অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত মিলছে।

রীতিমাফিক উদয়নবাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করে ফ ব নেতৃত্ব অবশ্য বিধায়ক এবং পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাঁর ইস্তফার দাবিই তুলেছেন। ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ এ দিন বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘প্রত্যাশিত পথেই উদয়ন গুহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে, সুবিধাবাদের উচ্চতা কতখানি! সৎসাহস ও নীতিবোধ থাকলে উদয়নবাবু বিধানসভার সদস্যপদ এবং দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান ও সদস্যপদ ত্যাগ করবেন’। দল ও জনগণের প্রতি ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র দায়ে তাঁকে বহিষ্কারের কথাও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

উদয়নবাবুকে দলে নেওয়া নিয়ে কোচবিহারে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ অবশ্য প্রকাশ্যেই বিরোধিতায় নেমেছেন। উদয়নবাবুকে তাঁরা মানবেন না বলে জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। রবীন্দ্রনাথবাবু এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তাঁর অনুগামী দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মীর হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘মুচলেকা দিয়ে উদয়নবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ১৯৯৮ থেকে আমরা যারা রাজনীতি করি, তাঁরা কেউই উদয়নবাবুকে মেনে নেব না!’’ তবে দিনহাটায় ফ ব-র নেতা-কর্মীদের সিংহভাগই তাঁদের নেতার সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তৃণমূলকে হারিয়ে কয়েক মাস আগে জয়ী হওয়া দিনহাটা পুরসভাও ফ ব-র হাত থেকে তৃণমূলের দখলে যাচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, ১৬ আসনের পুরসভায় ফ ব-র ১০ কাউন্সিলরের মধ্যে উদয়নবাবুর সঙ্গে ৮ জনই তৃণমূলে যোগ দেবেন।

কোচবিহার থেকে উদয়নবাবুই ফ ব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। আবার তিনিই জেলা সম্পাদক, বিধায়ক ও পুরসভার চেয়ারম্যান! ফ ব থেকে তাঁর আর কিছু পাওয়ার ছিল না বলে এখন সরব হচ্ছেন দলের একাংশ। আর কমল-কন্যা ইন্দ্রাণী ব্রহ্মের মতো তাঁর ভাইয়েরও তৃণমূলে যোগদানের পরে রাতারাতি দিনহাটায় ফ ব-র দফতরে বোর্ড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে! তার বদলে বসেছে ‘কমল গুহ স্মৃতিরক্ষা কমিটি’র বোর্ড!

tmc banner tmc udayan guha dinhata dinhata tmc udayan guha tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy