নামেই কেন্দ্রের জমি বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। পুরভোটের আগে পথে নেমে আসলে দলের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পূর্ব ঘোষণা মতো কেন্দ্রের জমি বিলের অধ্যাদেশের প্রতিবাদে বুধবার মৌলালি মোড় থেকে ময়দানে গাঁধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মমতার নেতৃত্বে মিছিল করে তৃণমূল। আসলে জমি বিলের অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে মিছিল হলেও পুরভোটের প্রাক্কালে কেন্দ্র বিরোধী এই মিছিল করার উদ্দেশ্য বহুবিধ বলে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা। এক বছর আগে লোকসভা ভোটে তৃণমূল বিপুল সাফল্য পেয়েছিল। তার পর নানা ঘটনায় রাজ্য সরকার ও শাসক দলের অস্বস্তি অব্যাহত। আর ঠিক এখনই শাসক দলের আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়েও প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার উপর বিরোধীরা শাসক দলের সন্ত্রাস নিয়ে সরব। এই অবস্থায় কলকাতার রাজপথে মিছিল করে দলীয় সংগঠনকে সচল করতে চাইলেন মমতা।
তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে, কেন্দ্রের জমি নীতি ও রাজ্যে শাসক দলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মঙ্গলবারই কলকাতায় সিপিএমের নেতৃত্বে বামেদের বিশাল মিছিল হয়েছে। পুরভোটের আগে সেই মিছিলে বাম ছাত্র-যুবদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তুলনায় এ দিন তৃণমূলের মিছিল কিছুটা নিষ্প্রভ। তবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘পুরভোটের প্রচারে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমাদের নেতা-কর্মীরা ব্যস্ত। আর কলকাতা ও সংলগ্ন দমদম, রাজারহাটের লোকজন নিয়েই আমরা মিছিল করেছি।’’ তবে কাজের দিনে তৃণমূলের মিছিল নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে জানিয়ে এ দিন মমতা অভিযোগ করেন, ‘‘আমি কেন মিছিল করব, তা নিয়েও আদালতে জনস্বার্থে মামলা (পিআইএল) করা হয়েছে। এটা তো ‘পলিটিক্যাল ইন্টারেস্ট লিটিগেশান’ মনে হচ্ছে। এটা তো আমার গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ।’’
জমি নিয়ে মিছিল করলেও মিছিল শেষে গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সভায় তাঁর আধ ঘণ্টার ভাষণে মমতা কেন্দ্রের জমি বিল নিয়ে অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে খুব সামান্য কথা বলেন। তবে এই সভায় তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে এবং পার্থবাবুও দাবি করেন, কেন্দ্রের জমি বিলের বিরোধিতায় আন্দোলন একমাত্র তৃণমূলই করতে পারে। কারণ, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম-সহ মমতার নেতৃত্বে কৃষকের জমি রক্ষা করার সব আন্দোলনই দেশের নজর কেড়েছে। তাঁদের দাবি, লোকসভায় জমি বিলের অধ্যাদেশ নিয়ে তৃণমূলই একমাত্র সরব হয়েছে।
তবে জমি বিলের বিষয় বলার চেয়ে এ দিন মমতা বেশি সময় খরচ করেছেন পুরভোট নিয়েই। তাঁর ভাষণের শেষ দিকে মমতা ডেকে নেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। মেয়রকে দেখিয়ে শ্রোতাদের তিনি বলেন, ‘‘কানন
(মেয়রের ডাক নাম) তো মেয়র ছিল। আবার হবে তো? ওকে আশীর্বাদ, দোওয়া দেবেন।’’ মেয়র তখন ঢিপ করে তাঁর দলনেত্রীকে প্রণাম করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy