নিয়োগ মামলায় হাজিরা দিতে সিবিআই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে দিল্লি ও পঞ্জাবের দুই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল ও ভগবন্ত সিংহ মানকে পাশে বসিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেই সময়ে দলীয় কর্মসূচিতে অভিষেক ছিল বাঁকুড়ায়। তাঁর বাড়ি গিয়ে রীতিমতো শাসিয়ে বলা হয়, না এলে দেখিয়ে দেব!’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রাজীব কুমারের বাড়িতে যখন সিবিআই গিয়েছিল, তখন তো উনি রাস্তায় বসে পড়েছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে সিবিআই হেনস্থা করল, হুমকি দিল আর উনি গেলেন না! মিথ্যে কথা বলা ওঁর অভ্যাস।’’
প্রশাসনিক কাজ এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার ব্যবহার নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মতোই আম আদমি পার্টির সঙ্গে বিরোধ লেগেই রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। এ দিন দুই দলের তরফেই একযোগে নিশানা করা হয়েছে কেন্দ্রের শাসক বিজেপিকে। কেন্দ্রের ‘অত্যাচার’-এর উদাহরণ হিসেবে অভিষেককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘‘ওরা (বিজেপি) কি আমাদের বাঁধা মজুর, চাকর-বাকর ভাবে!’’ মমতার কথায়, ‘‘দিল্লির সরকার (কেন্দ্রীয় সরকার) আদতে বাই দ্য বুলডোজ়ার, অব দ্য বুলডোজ়ার, ফর দ্য বুলডোজ়ার!’’
দিল্লিতেও দুর্নীতির অভিযোগে উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়াকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। মমতার পাশে বসে এ দিন কেজরীওয়ালও বলেন, ‘‘যে ভাবে দিল্লি পুলিশ (যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ) ‘টেনে হিঁচড়ে মনীশকে প্রায় ঘাড় ধাক্কা দিয়েছে, সেই অপমান এক জন জনপ্রতিনিধির প্রাপ্য?’’
বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচিত বিরোধী দলের সরকার ফেলে দিতে বিজেপি চক্রান্ত করছে বলে মমতা যে অভিযোগ করেন, এ দিন সে কথা বলেছেন আপ-প্রধান কেজরীওয়ালও। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসতে না পারলে বিজেপি ‘তিনটি অস্ত্র’ ব্যবহার করে— বিধায়ক কিনে ক্ষমতা বদল করে, আইনের তোয়াক্কা না করে রাজ্যপালের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্য সরকারকে অকেজো করা আর কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে, ভয় দেখিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।’’ কেজরীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাডু, কেরল, তেলঙ্গানা, সর্বত্র এই ‘ভয়ানক অত্যাচার’ চলছে। তাঁর আরও অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রেই দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে এই ‘অন্যায়’ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে যে অধ্যাদেশ জারি করে বিজেপি ‘অহঙ্কার’ দেখিয়েছে, তাতে মমতাকে পাশে পেতে তাঁর কলকাতা সফর বলে জানান কেজরী। দিলীপের কটাক্ষ, ‘‘সিবিআই তো রাস্তা থেকে ভদ্রলোককে ধরে নিয়ে যায়নি। বাড়ির লোক হোক আর পার্টির লোক! দুর্নীতি করেছে বলেই সিবিআই ধরছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)