Advertisement
২২ মার্চ ২০২৩
TMC

রাজ্যসভার জন্য ৪ প্রার্থী ঘোষণা মমতার, বিদায়ীদের কেউই টিকিট পেলেন না

২৬ মার্চ রাজ্যসভার ৫৭ আসনের জন্য নির্বাচন হবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি আসন রয়েছে।

সুব্রত বক্সি (বাঁ দিকে উপরে), দীনেশ ত্রিবেদী, মৌসম বেনজির নুর (ডান দিকে উপরে) ও অর্পিতা ঘোষ। —ফাইল চিত্র

সুব্রত বক্সি (বাঁ দিকে উপরে), দীনেশ ত্রিবেদী, মৌসম বেনজির নুর (ডান দিকে উপরে) ও অর্পিতা ঘোষ। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ১৫:৩০
Share: Save:

রাজ্যসভা নির্বাচনের জন্য প্রার্থী ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে করে দলের কোনও মুখপাত্র ঘোষণা করলেন না প্রার্থীদের নাম। রবিবার দুপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই টুইট করে জানালেন চার প্রার্থীর নাম। তৃণমূলের যে চার সাংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, তাঁদের কাউকেই আর এ বার টিকিট দেওয়া হল না। সব আসনেই নতুন প্রার্থী দিলেন মমতা। তবে যে চার জনকে এই দফায় রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী, তাঁরা প্রত্যেকেই আগে লোকসভায় ছিলেন। এক জন রাজ্যসভাতেও ছিলেন।

Advertisement

২৬ মার্চ রাজ্যসভার ৫৭ আসনের জন্য নির্বাচন হবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি আসন রয়েছে। রাজ্যের বিধানসভায় তৃণমূলের হাতে যে সংখ্যা রয়েছে, তাতে পাঁচটির মধ্যে চারটি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চার আসনের প্রার্থীদের নামই ঘোষণা করলেন।

টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘‘আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, অর্পিতা ঘোষ, মৌসম নুর, দীনেশ ত্রিবেদী এবং সুব্রত বক্সীকে তৃণমূল রাজ্যসভায় মনোনীত করতে চলেছে।’’ চার জনের মধ্যে দুই প্রার্থী যে মহিলা, সে বিষয়ে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটটিতে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হ্যাশটাগ যোগ করার পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি গর্বিত যে, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আমাদের প্রার্থীদের অর্ধেকই মহিলা।’’

আরও পড়ুন: স্টিয়ারিঙেই দুনিয়া প্রতিমার, মহানগরীর মহিলা বাসচালক

Advertisement

প্রার্থীদের মধ্যে যাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই লিখেছেন, সেই অর্পিতা ঘোষ ছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অর্পিতা হেরে যান বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের কাছে। তবু অর্পিতাকে বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মমতা সরাননি। জেলা তৃণমূলের দায়িত্ব পুরোপুরি অর্পিতার উপরে দিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন। এ বার রাজ্যসভায় পাঠানোর কথা ঘোষণা করে অর্পিতার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা মমতা সম্পূর্ণ করে ফেললেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত।

পুনর্বাসন পাচ্ছেন মৌসম নুরও। উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন লোকসভা ভোটের আগে। তার পরে তৃণমূলের টিকিটেই সেই আসনে লড়েন। কিন্তু বিজেপির খগেন মুর্মুর কাছে মৌসম হেরে যান। কিন্তু মৌসমে মমতার আস্থা কমেনি। মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী করেন মৌসমকে। এ বার রাজ্যসভায় টিকিট দিয়ে ফের সংসদে পাঠানোর ব্যবস্থাও করে ফেললেন।

আরও পড়ুন: সিএএ-প্রতিবাদীদের নাম ঠিকানা দিয়ে লখনউয়ে হোর্ডিং! হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে যোগী সরকার

আর এক প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী আগেও তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন। তার পরে ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন দীনেশ। দেশের রেলমন্ত্রীও হয়েছিলেন। এ হেন দীনেশ ত্রিবেদী গত লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরে হেরে যান বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিংহের কাছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীনেশকেও সংসদে ফেরানোর ব্যবস্থা করে দিলেন।

দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী অবশ্য এ বারের লোকসভা নির্বাচনে লড়েননি। তিনি দক্ষিণ কলকাতা থেকে পর পর দু’বার জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন (প্রথম বার উপনির্বাচনে)। ২০১৯ সালে তিনি আর ভোটে দাঁড়াননি। তাঁর আসন থেকে জেতেন মালা রায়। কিন্তু তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন সুব্রত বক্সী। দলের সর্বোচ্চ স্তরে মমতার সবচেয়ে আস্থাভাজন যে ক’জন, বক্সী তাঁদের অন্যতম। কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়া বক্সীকে লোকসভা নির্বাচনের ধকল থেকে মমতা দূরে রেখেছিলেন ঠিকই। কিন্তু সংসদ থেকে যে দূরে রাখতে চান না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। রাজ্যসভার টিকিট দিয়ে তাঁকে ফের সংসদে পাঠানো হচ্ছে বলে মমতা জানিয়ে দিলেন।

পশ্চিমবঙ্গের যে পাঁচ সাংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এই নির্বাচন হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে তৃণমূলের তরফে ছিলেন শিল্পী যোগেন চৌধুরী, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত, শিল্পপতি কে ডি সিংহ এবং আহমেদ হাসান ইমরান। এঁদের মধ্যে কে ডি সিংহের সঙ্গে তৃণমূলের এখন আর কোনও সম্পর্ক নেই। ইমরানের সঙ্গেও দূরত্ব অনেক বাড়িয়ে নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যোগেন এবং মণীশ এখনও দলেই রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আর টিকিট দিলেন না মমতা। বরং ২০১৯-এর লড়াইয়ে যাঁরা জিততে পারেননি, তাঁদেরই অগ্রাধিকার দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.