Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

মঙ্গলবারের কৃষক আন্দোলনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করছেন মমতা

মমতা জানান, ২০১১ থেকে তাঁর সরকার বন্‌ধ সমর্থন না করলেও কালকের কৃষক আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তাঁদের।

সোমবার মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবার মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৩০
Share: Save:

অন্নদাতাদের আন্দোলনকে তিনি সমর্থন করছেন। কিন্তু দলের নীতির পরিপন্থী হওয়ায় বন্‌ধে সায় নেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে, ‘কালকের আন্দোলন’-এ তাঁদের সমর্থন রয়েছে।

সোমবার মেদিনীপুরে নির্বাচনী সভায় তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘নবান্নের ধান ছুঁয়ে শপথ করছি, আমরা কৃষকদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম-নেতাই ভুলিনি। আমি ভারতও ভুলিনি। আমি কৃষিজীবী মানুষ ভুলিনি। আগামীকালও কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করছি। কিন্তু বন্‌ধ দলের নীতির পরিপন্থী হওয়ায় বন্‌ধ সমর্থন করছি না। তবে, কালকের আন্দোলনকে আমি সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। কাল ব্লকে ব্লকে আন্দোলন হবে। বিজেপি দল ভাঙছে, ঘর ভাঙছে। কৃষকদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। হয় কৃষি আইন প্রত্যাহার করো, নইলে ক্ষমতা ছাড়ো।’’

দলনেত্রীর সুরেই সোমবার গলা মিলিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ও। সৌগতর কথায়, ‘‘তৃণমূল-কংগ্রেস আন্দোলকারী কৃষকদের পাশেই রয়েছে। কিন্তু বাংলায় ভারত বন্‌ধ সমর্থন করব না আমরা। এটা আমাদের নীতির পরিপন্থী।’’ তবে, দেশের অন্যপ্রান্তে এই বন্‌ধে যে দলের ‘নৈতিক সমর্থন’ রয়েছে, তা আগেই জানিয়েছে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: বহিরাগতদের দিয়ে বাংলা দখল করতে দেব না, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মমতার​

সোমবার মেদিনীপুরের সভাতেও কৃষকদের এই আন্দোলন নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন তৃণমূলনেত্রী। ধানের শীষ, শাক-সবজি দিয়ে সাজানো ডায়াসের পিছনে দাঁড়িয়ে ভাষণ শুরু করেন মমতা। নবান্নের ধান ছুঁয়ে সেখানেই কৃষকদের পাশে থাকার শপথ নেন তিনি। সোমবার মমতা স্পষ্ট অবস্থান তাঁর। মমতা বলেন, ‘‘আমরা ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনও বন্‌ধ সমর্থন করিনি। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে বলছি কালকের আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করছি।’’

সিঙ্গুরের কৃষি আন্দোলন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কেন্দ্রে চলে আসেন মমতা। তবে বঙ্গে গেরুয়া শিবিরের ‘শক্তিবৃদ্ধি’তে গত কয়েক মাসে হিসেব খানিক পাল্টে গিয়েছে। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ এবং দক্ষিণ কোচবিহারের মিহির গোস্বামীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ফলে দলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে মমতা আরও বেশি করে দলকে যে কৃষক আন্দোলনমুখী করে তুলতে চাইছেন, তা গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে স্পষ্ট হয়েছিল।

আরও পড়ুন: প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতি, বাড়িতে গিয়ে শোকজ্ঞাপন মমতার​

প্রত্যাশিত ভাবেই মঙ্গলবার মেদিনীপুরে সভার গোড়া থেকেই সেই পথেই হাঁটলেন তৃণমূলনেত্রী। কৃষি আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই দলের অভিমুখ যেন ঠিক করে দিলেন মমতা। তবে কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতায় রাজধানী যখন উত্তাল, সে সময় তাঁদের সমর্থন জানিয়ে আগেই টুইট করেছিলেন মমতা। পাশে থাকার বার্তা দিতে দলের রাজ্যসভা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানায় বিক্ষোভকারী কৃষকদের কাছে পাঠিয়ে ছিলেন। ফোনে নিজেও আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। তখন থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল, তাঁর সাবেক আন্দোলনের ভিত্তিভূমিতেই দলকে ফের নিয়ে যেতে চাইছেন মমতা। সোমবারের সভা থেকে তা আরও স্পষ্ট হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE