মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন তুলে আসছেন, শুধু প্রেসিডেন্সি আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েই এত গন্ডগোল কেন? সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির সমালোচনায় মুখর হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।
সমাবর্তনে দীক্ষান্ত ভাষণে প্রেসিডেন্সির প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি যখন শুনলাম, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কোনও হল নয়, রাজভবনকে বেছে নিচ্ছে, আই ওয়াজ সো শক্ড (মর্মাহত হয়েছিলাম)।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সমাবর্তনে রাজ্যপালের কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে অস্বীকার করেছিলেন এক ছাত্রী। এটা কী ধরনের সৌজন্য?’’
বড়দিনের আগে সেন্ট জেভিয়ার্সে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে একই ভাবে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ছিলেন যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি সেই রাজনীতিকে রাজনীতি বলে মনে করি না, যে-রাজনীতি মানুষকে সম্মান দিতে জানে না।
‘হোক কলরব’ আন্দোলন চলার সময় যাদবপুরের সমাবর্তনে গীতশ্রী সরকার নামে এক ছাত্রী মঞ্চে উঠে রাজ্যপালের হাত থেকে সার্টিফিকেট নিতে অস্বীকার করেন। গীতশ্রী এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দলের দামাল ছেলেরা যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সিতে পারে না। কিন্তু রাজ্যের অন্যান্য কলেজে তারা যে-ভাবে ইউনিয়ান রুম দখল করে চলেছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে আমরা সৌজন্যের কথা শুনব না।’’ আর প্রেসিডেন্সির হিন্দু হস্টেল নিয়ে আন্দোলনের অন্যতম নেতা শুভজিৎ সরকার বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির ছাত্রদের উপরে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত রাগ আছে। কারণ উনি প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে ঢুকে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। হিন্দু হস্টেল নিয়ে আন্দোলন এবং তার জেরে ক্যাম্পাসের বাইরে সমাবর্তন করার দায় সম্পূর্ণ উপাচার্যের।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ওল্ড ভ্যালু আছে। যেটা আমি মনে করি গোল্ড ভ্যালু। পৃথিবীর বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমার ডাক আসে। সব সময় কাজের জন্য যেতে পারি না। কিন্তু এখানে সব সময় আসি। কারণ এটাকে আমার নিজের ঘর মনে হয়।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিদ্যাসাগরের ২০০ বছর এবং মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর ১৫০ বছরে তাঁদের নামে দু’টি চেয়ার তৈরি হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে।’’ জমির দরকার হলে তা-ও দেওয়া হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে। ১০ জানুয়ারি তিনি নদিয়া জেলায় কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করতে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি চাই, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সংযোগ থাকুক।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে সাম্মানিক ডিলিট এবং দুই চিকিৎসক দিলীপ মহলানবিশ ও সুকুমার মুখোপাধ্যায়কে সম্মানিক ডিএসসি দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy