মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চরম সংঘাতের পথে প্রায় সব বিজেপি-বিরোধী দলের সমর্থন পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিশের ‘দ্বৈরথে’র নজিরবিহীন ভাবে ধর্না শুরুর পর থেকেই মমতার সমর্থনে মুখ খোলেন দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা।
সারদা তদন্তের অঙ্গ হিসাবে রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকেরা হানা দেওয়ার পর থেকেই নাটকীয় সংঘাতের সূত্রপাত। কলকাতা পুলিশের হাতে সিবিআই বাধা পেতেই সেই সংঘাত আরও চরম রূপ নেয়। গোটা ঘটনা অন্য মাত্রা পায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্ধ্যায় সিপি-র বাসভবনে পৌঁছলে। এর পর রাতেই ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসেন মমতা। যাকে ‘সত্যাগ্রহ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। ধর্নামঞ্চ থেকেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগতে থাকেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এ রাজ্যে রাজনৈতিক অভ্যুত্থানেরও অভিযোগ করেন মমতা। এর পরই রাজীব-কাণ্ডের নিন্দা করে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় প্রায় সব বিরোধী দলগুলি।
মমতার পক্ষ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল থেকে শুরু করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। সরব হন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। মুখ খোলেন সমাজবাদী পার্টির সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল, মায়াবতী— একের পর এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সমর্থন পান মমতা। বার্তা দেন এ রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীও। মমতা বলেন, ‘‘সবাই বলছেন তাঁরা সঙ্গে আছেন।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে যখন একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে বিরোধী দলগুলি, তখন মমতার এই প্রতিবাদ আরও অক্সিজেন যোগান দিল বিজেপি-বিরোধী মঞ্চকে, এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
রাত ১০টা: মেট্রো চ্যানেলে পৌঁছলেন ব্রাত্য বসু এবং অনুব্রত মণ্ডল। রাত ৯টা ৩০ মিনিট: রিষড়া স্টেশনে রেল অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চলে এই অবরোধ। ৯টা বেজে ৪৪ মিনিট: অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু লেখেন, ‘এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থাকে রক্ষা করতে নেমেছেন। আমরা ওঁর পাশে আছি।’
রাহুল গাঁধীর টুইট।
I spoke with Mamata Di tonight and told her we stand shoulder to shoulder with her.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) February 3, 2019
The happenings in Bengal are a part of the unrelenting attack on India’s institutions by Mr Modi & the BJP.
The entire opposition will stand together & defeat these fascist forces.
চন্দ্রবাবু নায়ডুর টুইট।
This is shocking and we strongly condemn this. We stand by Chief Minister of West Bengal to preserve and protect constitution and spirit of federalism in the country. #SaveDemocracy
— N Chandrababu Naidu #StayHomeSaveLives (@ncbn) February 3, 2019
রাত ৮টা বেজে ৫৮ মিনিট: রাত ৮টা বেজে ৫৮ মিনিট: দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া টুইটারে লেখেন, ‘পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করতে সিবিআই হানা বাংলায়! এই মুহূর্তে ওখানে যা হচ্ছে, তাতে হতবাক আমি। জরুরি অবস্থার সময় এরকম অসাংবিধানিক আচরণ ঘটত। এই মুহূর্তে বাংলার পরিস্থিতি সেরকমই।’
I am shocked learning about the CBI rushing to arrest the Police Commissioner and subsequent developments in West Bengal. The country has faced similar kind of unconstitutional methods during the Emergency.
— H D Devegowda (@H_D_Devegowda) February 3, 2019
Situation in WB is similar to that of the emergency days.#SaveDemocracy
দেবগৌড়ার টুইট।
রাত ৮টা বেজে ৫৫ মিনিট: মমতাকে সমর্থন করে টুইট করলেন অখিলেশ যাদব। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘দেশে উৎপীড়ন চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। সিবিআইয়ের অপব্যবহার করছে। দেশের সংবিধান ও মানুষের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে বসেছে। এই নিপীড়ণের বিরুদ্ধে যে ভাবে ধর্নায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে আমার। বিজেপিকে পরাজিত করতে এই মুহূর্তে একজোট দেশবাসী ও বিরোধী নেতারা।’
भाजपा सरकार की उत्पीड़नकारी नीतियों और CBI के खुलेआम राजनीतिक दुरुपयोग के कारण जिस तरह देश, संविधान और जनता की आज़ादी ख़तरे में है, उसके ख़िलाफ़ ममता बनर्जी जी के धरने का हम पूर्ण समर्थन करते हैं.
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) February 3, 2019
आज देश भर का विपक्ष और जनता अगले चुनाव में भाजपा को हराने के लिए एकजुट है.
অখিলেশ যাদবের টুইট।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে টুইট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। তিনি লেখেন, ‘দেশের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করছেন মোদীজি। কয়েক বছর আধা সামরিক বাহিনী পাঠিয়ে দিল্লির অপরাধ দমন শাখাকে আটক করিয়েছিলেন। আজ আবার এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। মোদী-শাহ জুটি ভারত এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক। আজকের ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’
Modi ji has made a complete mockery of democracy and federal structure. Few years back, Modi ji captured Anti- Corruption Branch of Del govt by sending paramilitary forces. Now, this. Modi-Shah duo is a threat to India and its democracy. We strongly condemn this action https://t.co/Vay723LON9
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) February 3, 2019
কেজরীওয়ালের টুইট।
কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলেরও ফোন এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব তাঁকে ফোন করেছিলেন বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। মেট্রো চ্যানেলের কাছে দলে দলে হাজির হচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা। স্লোগান উঠছে ‘সিবিআই মুর্দাবাদ’। রাত ৯টা: মেট্রো চ্যানেলের ধর্না মঞ্চে হাজির হলেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারও।
ধর্নায় বসার আগে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন—
সিবিআই-পুলিশ সংঘাত নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা: ওরা বাংলায় ক্যু করার চেষ্টা করছে, অভিযোগ মমতার। ওরা সমস্ত সৌজন্য নষ্ট করে দিয়েছে, বললেন মমতা। ১৯ তারিখ সেই র্যালির দিনেই বলা হয়, কুছ তো করো কুছ তো করো, বিজেপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে, মানুষ ভোট না দিলে গায়ের জোরে তো হবে না, বললেন মমতা। ভয়ঙ্কর গব্বরি কায়দায় ত্রাস শুরু করেছে, অভিযোগ মমতার। কালকে মোদীর হুমকির পরেই আজ সিবিআই হানা, জরুরি অবস্থার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি, বললেন মমতা। আমরাই চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত করতে শুরু করি। কোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্ত সিবিাই-এর হাতে গিয়েছে। পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে। যেই একটা করে নির্বাচন আসে, চিট ফান্ডের নাম করে যা ইচ্ছা করছে, যেখানে ইচ্ছা ঢুকছে, বললেন মমতা। ডোভালকে আক্রমণ মমতার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ডোভাল সিবিআই-কে দিয়ে এই সব করাচ্ছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ। রাজনৈতিক ভাবে না পেরে ওরা সিবিআই-কে ব্যবহার করছে। এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে। সারা দিন বলে গিয়েছে রাজীব কুমার চিট ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত। প্রমাণ করুক। একটা সিট হয়েছিল, ও সেই সিটের প্রধান ছিল। আমি একটা প্রশাসন চালাই। সেই প্রশাসনে যাঁরা আছেন, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব। মোদী এবং অমিত শাহকে তীব্র আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। চম্বলের ডাকাত আর গদ্দারের সর্দার বলে আক্রমণ। শুধু আমাদের পুলিশ ফোর্স নয়, সারা ভারতের যত পুলিশ ফোর্স রয়েচে, তাদের আমি সম্মান করি। কিন্তু আমার আজকে খুব দুঃখ লেগেছে। কেন্দ্রীয় সরকার দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি করেছে। আমি সংবিধান বাঁচাতে চাই। আমি গণতন্ত্র বাঁচাতে চাই। আমি ধর্না শুরু করছি। আমি এখনই চলে যাব মেট্রো চ্যানেলে। ওখানে আমি আজ থেকেই ধর্নায় বসছি। কালকে রাজ্যে বাজেট রয়েছে। যেখানে ধর্নায় বসব, তার পাশেই একটা ঘর বানিয়ে নিচ্ছি। সেখানে ক্যাবিনেট মিটিং করব। আমি বাজেটে থাকতে পারব না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy