Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

কেন্দ্রীয় দলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা

মমতার বক্তব্য, বাংলা শান্তই রয়েছে। তার পরেও বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা সরকারের শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো সৌজন্যবোধের পরিচয় হতে পারে না।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২১ ০৭:৩৮
Share: Save:

কেন্দ্রের পাঠানো প্রতিনিধি দলের বিরুদ্ধে উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে, সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে কেন্দ্রের সৌজন্য বোধ নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তিনি। মমতার বক্তব্য, বাংলা শান্তই রয়েছে। তার পরেও বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা সরকারের শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো সৌজন্যবোধের পরিচয় হতে পারে না।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই একদিকে হিংসার ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়া, অন্যদিকে শপথগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রের দলের রাজ্যে আসা— এই দু’য়ের মধ্যে কোথাও না কোথাও একটা সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণেই কেন্দ্র এবং কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের মনোভাবকে নিশানা করতে চেয়েছেন মমতা।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় কিছু হয়নি। বাংলা শান্ত আছে। একটা সরকার শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যারা কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে দেয়, তাদের ন্যূনতম সৌজন্য বোধ আছে? এত বড় ল্যান্ডস্লাইড ভিকট্রি নিয়ে একটা সরকার এসেছে, আইনশৃঙ্খলা তো রাজ্যের বিষয়। কেন কেন্দ্রীয় দল উত্তেজনা ছড়াবে? তাঁরা এসেছেন, মুখ্যসচিব বৈঠক করে কথা বলে নিয়েছেন। এরপর তারা বিজেপির বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে কেন? তারা টিএমসির বাড়িতে গিয়েছে? তারা এসইউসিআইয়ের বাড়িতে গিয়েছে? আমাদেরও তো কর্মীরা মারা গিয়েছন।”

প্রসঙ্গত, গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণের কয়েকঘন্টার মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কার্যত হুমকির সুরে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রাত পোহাতেই নবান্নে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধিদল। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে পরিস্থিতি বুঝতে বিভিন্ন জেলায় ঘুরতে থাকেন সেই অফিসারেরা। কিন্তু প্রত্যেক সফরেই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিজেপির নেতা-কর্মীদের থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিস্তর। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এ দিন প্রতিনিধিদলের নিরপেক্ষতার এবং কেন্দ্রের মনোভাবের দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন মমতা।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী শীতলখুচির ঘটনাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে হাথরসের ঘটনার প্রসঙ্গও টেনে এনে বলেছেন, “যারা সরকারের জয় মেনে নিতে পারে না, তারা ফেক ভিডিও দেখায়। জেনোসাইড কোথায় হল দেখতেও পেলাম না। জেনোসাইড তো শীতলখুচিতে হল। আমরা প্রত্যেকের জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছি। ত্রিপুরায় যখন হয়েছিল, এক পয়সা ক্ষতিপূরণ কাউকে দিয়েছে? লেনিন, মার্ক্সের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। হাথরসের ঘটনা ঘটেছে। কী রিলিফ দেওয়া হয়েছে? আমরা প্রত্যেক পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরি করে দিয়েছি। রাজবংশী ছেলেটির পরিবারের একজনকেও চাকরি করে দেওয়া হয়েছে। নন্দীগ্রামের বলরামপুর গ্রামের এক জনকেও হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।”

মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই অভিযোগ করে এসেছেন, যত ঘটনা ঘটছে, তার থেকে বেশি ভুয়ো অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। এ দিনই বিজেপির আইটি সেলের বিরুদ্ধে ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন মমতা। এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, “কোনও কোনও রাজনৈতিক দল ফেক ভিডিয়ো দিচ্ছেন। কড়া ব্যবস্থা নেব। কোথাও দাঙ্গা করতে দেব না। আমরা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। এই জয় বাংলার মানুষের জয়। এই রায় উন্নয়ন, শান্তি, সম্প্রীতি, সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং সবাই মিলে একসঙ্গে চলার রায়। বাংলা সম্প্রীতি চায়। কোনও বিভেদ চায় না। বাংলাকে আমরা দখল করতে দেব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE