উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ের পরে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বুধবারই শহরে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার ফের উত্তরবঙ্গে রওনা হচ্ছেন তিনি। এ বার তাঁর গন্তব্য দার্জিলিং। বৃহস্পতিবার নবান্নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং গঙ্গা ভাঙন নিয়ে ফের একবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে মমতা জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করবে রাজ্য সরকার।
দার্জিলিং সফরে তাঁর কর্মসূচির সবিস্তার তথ্য এখনও অজানা থাকলেও, সূত্রের দাবি, সেখান থেকেই বিপর্যয়-পরিস্থিতি উপর নজর রাখবেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছেন অনেক মানুষ। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, শুধু বিপর্যয়ের কারণেই নয়, বরং রাজনৈতিক দিক থেকেও উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি এখন বেশ জটিল। তাঁদের ব্যাখ্যা, বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী, যে নদীগুলির জল উপচে ওই বিপর্যয় ঘটেছে, সেগুলির সঙ্গে ভুটান থেকে আসা জলের সম্পর্ক থাকতে পারে। তবে জল ছাড়লে প্রশাসনিক ভাবে তার তথ্য আগাম জানানোই রীতি। এ ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়। আবার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের আক্রান্ত হওয়াও পরিস্থিতি জটিল করেছে। ওই ঘটনায় চারজন গ্রেফতার হলেও, বিজেপির অভিযোগ, এফআইআর-এ নাম থাকা কাউকে এখনও আটক করা হয়নি। সব মিলিয়ে পাহাড়ের উত্তাপ আগামী ভোটের আগে বাড়তে পারে। এই সব দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এত দ্রুত ফের উত্তরবঙ্গ সফরের ভিন্ন তাৎপর্য থাকতে পারে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ফের অভিযোগ করেছেন, গঙ্গা ভাঙন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ—দু’টি কাজই কেন্দ্রের। তারা তা করেনি। রাজনৈতিক ভাবে এ অভিযোগ প্রতিবারই করে থাকে তৃণমূল। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১১ অক্টোবর মাইথন ঘেরাও (ডিভিসি) করবে তৃণমূল। তার পরে পাঞ্চেত-ঘেরাও কর্মসূচি রয়েছে তাদের। বিপর্যয়ের সময়ে বাগডোগরা থেকে কলকাতার বিমান ভাড়াও অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছিল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন মমতা। স্থির হয়েছে, এ নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপিও দেবে তৃণমূলের সংগঠন। মমতা এ দিন দাবি করেছেন, তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পর্যটকদের ফেরার ব্যবস্থা করেছেন। ভোর তিনটে পর্যন্ত উত্তরকন্যায় থেকে ব্যবস্থা করেছিলেন ত্রাণ বিলিরও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)