Advertisement
E-Paper

তিনি ভোটার তালিকায় ‘কারচুপির শিকার’! সভায় তাঁর উদাহরণ দিয়েছেন মমতা, কী বলছেন সেই তসলিম?

ভোটার কার্ডে নাম আলাদা। কিন্তু ‘এপিক’ নম্বর একই। কয়েক দিন আগে তা জানতে পেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা তসলিম মিঞা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০১

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ভোটার কার্ডে নাম আলাদা। কিন্তু ‘এপিক’ নম্বর একই। কয়েক দিন আগে তা জানতে পেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা তসলিম মিঞা। এ দিক-সে দিক ছোটাছুটিও করেছিলেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। বৃহস্পতিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেই তসলিমেরই নাম নিতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূলনেত্রীর বক্তৃতায় উঠে এল তসলিমের সমস্যার কথা। সংবাদমাধ্যমে তা দেখার পর প্রকাশ্যে এলেন তসলিম। জানালেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি বেশ চিন্তায় রয়েছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, এর সুরাহা চাইছেন।

নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের মহাসমাবেশে বক্তৃতা করতে উঠে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সরব হন মমতা। তাঁর দাবি, দিল্লি-মহারাষ্ট্রে ঠিক যে ভাবে ভোটার তালিকায় কারচুপি করেছে বিজেপি, বাংলাতেও তা-ই করার চেষ্টা হচ্ছে। এর জন্য একটি এজেন্সিকেও নিয়োগ করেছে তারা। সভায় হাতে কিছু কাগজ নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর দাবি, এ রাজ্যের ভোটার তালিকায় পঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাতের বহু লোকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে সুকৌশলে। দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যের বাসিন্দাদের ভোটার কার্ডের এপিক নম্বরের সঙ্গে হুবহু মিলে গিয়েছে ভিন্‌রাজ্যের বাসিন্দাদের এপিক নম্বর।

নথি দেখে সে কথা বলতে বলতেই তসলিম মিঞার নাম নিতে শোনা গিয়েছিল মমতাকে। সভায় তিনি বলেন, ‘‘এই দেখুন, আরও এক জন। নাম তসলিম মিঞা। বাড়ি গঙ্গারামপুর। একই এপিক নম্বর রয়েছে জিগনেশ মাকভানার। তাঁর বাড়ি গুজরাতের অহমদাবাদে।’’ সভায় উপস্থিত দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘বুঝেছেন? একই এপিক নম্বরে কখনও পঞ্জাব, কখনও হরিয়ানা। গঙ্গারামপুরে সব গুজরাত ঢুকিয়েছে। মুর্শিদাবাদ তো ঢেলে করেছে।’’

মমতা তাঁর নাম নেওয়ার পরেই প্রকাশ্যে আসেন গঙ্গারামপুর ব্লকের ৪ নম্বর নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তসলিম। তিনি পেশায় সরকারি কর্মী। মালদহ রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত। তসলিম বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি দু’মাস আগে জানতে পারি। মহকুমা শাসকের দফতরেও গিয়েছিলাম। ওখান থেকে আমাকে বলা হয়, বিষয়টা তাদের হাতে নেই। আমি খুবই আতঙ্কিত। কারণ, ওই ব্যক্তি যদি কোনও অপরাধ করেন, আমিও তো ফেঁসে যেতে পারি। আমি চাই, নির্বাচন কমিশন যাতে দ্রুত বিষয়টি ঠিক করে দেয়।’’

ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ নিয়ে সরব হয়ে মমতা দাবি করেছেন, গোটাটাই নির্বাচন কমিশনের আশীর্বাদে হচ্ছে। এটা চলতে থাকলে, কমিশনের অফিসের সামনে তিনি ধর্না দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মমতা বলেন, ‘‘আধার কার্ড কেলেঙ্কারি করেছে। বাংলা দখলের খেলা চলছে। ভূতুড়ে ভোটার দেখে নিন, নইলে যে কোনও দিন এনআরসি, সিএএ করে আপনাকে বাদ দিয়ে দেবে। নির্বাচন কমিশনের আশীর্বাদে কেলেঙ্কারি হচ্ছে।’’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশেও তৃণমূলনেত্রীর বার্তা, ‘‘ভোটার তালিকা পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে ইলেকশনের কোনও প্রয়োজন থাকবে না। ভয় পাবেন না। একটা এজেন্সিকে দিয়ে অনলাইনে এ সব করানো হয়েছে। আমি যত দূর জানতে পেরেছি, অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ডস, কোম্পানি ইন্ডিয়া ৩৬০ নামে দু’টি এজেন্সি আছে। তারা ডেটা অপারেটরদের কাছে গিয়েছিল। সেখান থেকেই নিয়েছে। কিছু বিএলও-কে সঙ্গে নিয়ে অনলাইনে কারসাজি করেছে। বাংলার লোক যাতে ভোট দিতে না পারে, তাই একই এপিক কার্ডে বাইরের লোকের নাম তুলেছে। তার মানে বাংলার লোক যখন ভোট দিতে যাবে, বাইরের ভোটারের নামে চলে যাবে। মুর্শিদাবাদের ভোটারগুলিকে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নিয়ে আসবে। মুর্শিদাবাদের নেতারা সতর্ক থাকুন।’’

Mamata Banerjee Voter list Manipulation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy