বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর বাড়ল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্যার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ডিভিসি-র জল ছাড়াকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বৃহস্পতিবার পাল্টা আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে। দু’জনেরই অভিযোগ, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ দিচ্ছেন। দিলীপবাবুর অভিযোগ, সেচের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিতে না পারায় টাকা দিল্লিতে ফেরত চলে গিয়েছে। আর শুভেন্দু জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তিনিও।
দিলীপবাবু এ দিন দিল্লিতে বলেন, ‘‘জমি দিতে না পারায় তিস্তা প্রকল্পের ১৭০০ কোটি টাকা, আয়লার ৫ হাজার কোটি টাকা ফিরে গিয়েছে। তারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী প্রকল্পে কেন্দ্র ১২০০ কোটি টাকা দিলেও কাজ শুরু হয়নি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান জমির অভাবে আটকে রয়েছে। রাজ্য সরকার জমি দিতে না পারায় প্রকল্প হচ্ছে না। অথচ দোষ চাপছে কেন্দ্রের ঘাড়ে!’’
দিলীপবাবুর আরও প্রশ্ন, ‘‘দামোদর বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১৭ সালে দু’টি আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক থেকে দু’হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্য পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। সেই টাকা কোথায় গেল? ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইবিআরডি) ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক (এআইআইবি) ২১৪৬ কোটি টাকা সাহায্য দেয় রাজ্যকে। তার পরেও ময়না, আরামবাগ, সবং, ঘাটাল সর্বত্র বন্যা হচ্ছে। ওই টাকাই বা গেল কোথায়? সব কি লুঠ হয়ে গিয়েছে?’’
এই প্রেক্ষিতে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে বন্যা হলে মোদীর দোষ! কলকাতায় বন্যা হলে মোদীর দোষ! তা হলে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ বছর ধরে কী করেছেন?’’
পাশাপাশি, শুভেন্দু এ দিন কলকাতায় প্রশ্ন তোলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র নামে অসত্য কথা বলেছেন। গত ২৭ তারিখ ডিভিসি রাজ্যকে সতর্ক করেছে। আপনার ডিএম, বিডিও, সেচ দফতর কোথায় মাইকিং করেছে? কোথায় আগে থেকে ব্যবস্থা নিয়েছে? খানাকুল, আমতা, উদয়নারায়ণপুর, গোঘাট, পুরশুড়া, ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা, কেশপুর কোথায় করেছেন?’’ শুভেন্দু জানান, ডিভিসি-র কমিটিতে সেচ দফতরের সচিব, ওয়েস্টার্ন সার্কেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার আছেন। সুতরাং, দায় রাজ্য সরকার এড়াতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমিও প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা চিঠি পাঠাচ্ছি। সেখানে আমি বলছি, বন্যা, জল-দুর্ভোগ এবং দুয়ারে নর্দমার জল প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী!’’
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিজেপি নেতাদের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারি—যা-ই হোক, কেন্দ্র কোনও সাহায্য করে না। আর বিজেপি নেতারা মিথ্যে অভিযোগ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। এ সব না করে দুর্যোগ-পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy