Advertisement
E-Paper

নেত্রী মমতা বললেন, ‘অনেকে আমার মৃত্যু চায়’, শুনেই বৈঠকে কান্না বক্সির

সুব্রত বক্সিকে এতখানি আবেগবিহ্বল দেখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। ফলে বৈঠকের পরেও দলের অন্দরে যত আলোচনা ‘বক্সিদার কান্না’ নিয়েই। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:০৮
মমতার কথা শুনে সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া হয় বক্সির। —ফাইল চিত্র।

মমতার কথা শুনে সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া হয় বক্সির। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে নাটকীয় এবং আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হল শুক্রবার। দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর আবেগাপ্লুত বক্তব্য শুনে বৈঠকের মধ্যেই কেঁদে ফেললেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তাঁকে শান্ত করতে হল মমতাকেই।

বাংলার রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহালরা জানেন, তৃণমূলের জন্ম আবেগ থেকেই। দলনেত্রী মমতা নিজেও অসম্ভব আবেগপ্রবণ। বিভিন্ন সময়ে তার পরিচয়ও পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু মমতার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী সুব্রত (দলের অন্দরে যিনি ‘বক্সি’ বা ‘বক্সিদা’ বলেই সমধিক প্রসিদ্ধ) আবেগপ্রবণ— এমনটা তাঁর অতি বড় গুণগ্রাহীও বলবেন না। বরং দলের অন্দরে তাঁর পরিচয় সোজাসাপ্টা, নিরাবেগ এবং চাঁছাছোলা কথা বলার জন্যই। বস্তুত, দলের অন্যতম উচ্চপদে থাকার কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে যখন অর্থিপ্রার্থিরা তাঁর কাছে দরবার করতে আসতেন, তখন তাঁদের সঙ্গে যে ভাবে কথা বলতেন বক্সি, তাতে তাঁর সঙ্গে অনেকে দেখা করতেও ভয় পেতেন! আড়ালে তাঁকে ‘দুর্মুখ’ বলেও ডাকাডাকি করতেন। বক্সির ব্যবহারে দলের প্রথমসারির নেতাদের অনেকে অনেক সময় সামান্য ক্ষুণ্ণ হয়েছেন। কিন্তু সকলেই জানতেন, বক্সি আদতে সোজা-সরল মানুষ। তিনি মুখে চাঁছাছোলা কথা বলেও উপকারপ্রার্থীর উপকারটি ঠিক করে দেবেন। কিন্তু তাঁকে এর আগে কোনওদিন এতখানি আবেগবিহ্বল দেখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। ফলে বৈঠক শেষের পরেও দলের অন্দরে যত আলোচনা ‘বক্সিদার কান্না’ নিয়েই।

তৃণমূল সূত্রের খবর, শুক্রবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা হঠাৎই বলেন, অনেকে তাঁর মৃত্যুকামনা করছে। কারণ, তিনি মারা গেলে তারা তাঁর চেয়ারে (মুখ্যমন্ত্রীর পদে) বসতে পারবে! মমতা নিজেও খানিকটা আবেগতাড়িত হয়েই ওই কথাটি বলেছিলেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন। নেতাদের একাংশ নেত্রীর ওই কথা শুনে বিস্মিতও হন। কিন্তু সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া হয় বক্সির। তিনি বৈঠকের মধ্যেই সর্বসমক্ষে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন। এবং কাঁদতে কাঁদতেই মমতাকে বলতে থাকেন, ‘‘আপনি এমন কথা বলবেন না। আপনি থাকবেন। আপনি আজীবন আমাদের নেত্রী থাকবেন। আমাদের রাস্তা দেখাবেন।’’ সূত্রের খবর, বক্সিকে ওই ভাবে ভেঙে পড়তে দেখে প্রাথমিক ভাবে খানিকটা থমকে যান মমতাও। তার পরেই সামলে নিয়ে তিনি দলের রাজ্য সভাপতিকে বলেন, ‘‘আপনি কাঁদবেন না। আপনি একটু জল খান। শান্ত হোন।’’ বক্সি তখন নিজেকে সামলে নেন। কিন্তু তার পরেও সারা বৈঠকে তাঁকে যথেষ্ট মূহ্যমান দেখিয়েছে বলেই বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের একটি বড় অংশ জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: বিধায়ক পদে শুভেন্দুর ইস্তফার দিকেই এখন তাকিয়ে বিজেপি

আরও পড়ুন: রাজভবনে শোভন-বৈশাখী, কী নিয়ে কথা? জল্পনা রাজনৈতিক শিবিরে

ওই অংশটুকু ছাড়া বৈঠকে অবশ্য মমতা এবং বক্সি— দু’জনেই যথেষ্ট কড়া অবস্থান নিয়েছিলেন। চড়াসুরে বিজেপি-র বিরোধিতা করেন মমতা। নির্দেশ দেন বিজেপি-র বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বিভিন্ন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশও বক্সিকে দেন মমতা। ততক্ষণে অবশ্য পোড়খাওয়া নেতা বক্সিও নিজেকে সামলে নিয়েছেন।

Mamata Banerjee Subrata Bakshi TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy