রাজ্যে রক্তের সঙ্কট কাটাতে পুলিশকে মাঠে নামার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২০ মে, রাজ্যে প্রথম তৃণমূল সরকার আসার দিনটিতেই রাজ্যের অন্তত চারশো থানাকে ৫০ ইউনিট করে রক্ত সংগ্রহ করতে হবে বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।
সাত দিনের মধ্যে দলকেও পথে নামতে বলেছেন নেত্রী। ২৭ মে তৃণমূল রাজ্যে রক্তদান শিবির করবে বলেও শুক্রবার জানান তিনি। ক্যালেন্ডার তৈরি করে ধারাবাহিক রক্ত সংগ্রহের বদলে এক ধাক্কায় এত ইউনিট তুললে তা রাখার জায়গা পাওয়া যাবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
এ দিন দুপুরে নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক সভায় জেলার নার্সিংহোম মালিকদের ডেকেছিলেন মমতা। কথা প্রসঙ্গে ন্যায্য মূল্যের ওষুধ ও রক্তের প্রসঙ্গ আসে। মমতা জানতে চান, এই সময়ে কত রক্ত দরকার হয়। রাজ্যের এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, বছরে লক্ষ ইউনিট লাগে। তবে এই সময়ে ঠিক কত লাগে, তা হিসেব করে জানাবেন।
মঞ্চে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে জানতে চান, রাজ্যে কত থানা আছে। ডিজি জানান, ৪৮০টি। মমতা বলেন, অন্তত চারশো থানাকে ৫০ ইউনিট করে রক্ত দিতে হবে। নদিয়ায় যে ১০টি তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা আছে, তাদেরও ১০০ ইউনিট করে রক্ত সংগ্রহ করতে বলেন তিনি। তবে রক্ত যাতে কোনও ভাবে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলির বক্তব্য, রক্তসঙ্কটের সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগ স্বাগত। তবে একটি বিশেষ দিনের বদলে ধাপে-ধাপে পরিকল্পিত ভাবে রক্ত সংগ্রহ করলে অপচয় হবে না।
এ রাজ্যে রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে রক্ত সংগ্রহের ঐতিহ্য দীর্ঘ দিনের। বাম জমানায় সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ পরিকল্পিত ভাবে বছরভর রক্ত তুলত। বামেরা হীনবল হয়ে পড়ার পরে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বেড়েছে রক্তের সঙ্কট। কিন্তু পুলিশকে দিয়ে রক্তদান বামেরা করায়নি। প্রশ্ন হল, ২০ মে-র শিবিরে কি শুধু পুলিশকর্মী, গ্রামীণ পুলিশ, সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরাই রক্ত দেবেন? নাকি, অন্যদের থেকেও রক্ত নেওয়া হবে? নদিয়ার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘এখনও নির্দেশ আসেনি। তবে শিবির হচ্ছেই।’’
প্রতি বছর গরমের সময়ে শিবির কমে যাওয়াতেই রক্তের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শিবির করা হোক। রক্তদান শিবিরগুলির সঙ্গে চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-কেও যুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy