প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি— টুইটার।
প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের বার্ষিক শিল্প সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানাতেই ফের ‘মোদী-দিদি’ কটাক্ষে সরব বাম ও কংগ্রেস। যদিও একে দুই দলের ‘হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বুধবার বিজেপি ও তৃণমূলের বোঝাপড়ার অভিযোগ তুলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘বৈঠকের আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এলাকা বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি জানাতে যাচ্ছেন। কিন্তু বেরোনোর পরে সে সব শুনলাম না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছিলেন, মোদীর শিল্পনীতির জন্যই লগ্নি আসছে না। এখন তাঁকেই শিল্প সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী।... আসলে দুর্নীতিতে ডুবে থাকা ভাইপো এবং দলের নেতাদের বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করেন। তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির দালাল।”
একই অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। তাঁর কটাক্ষ, “এটা প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ছিল না। ছিল নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক। ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কারণে দু’পক্ষেরই দু’পক্ষকে দরকার। যখন দরকার হয়, তখন দু’জনে বসে কথা বলে নেন। বিএসএফ নিয়ে কথা বলতে দিল্লি যেতে হয় না। তার জন্য অফিসার এবং ফাইল লাগে। তা ছাড়া বৈঠকে মানুষের স্বার্থ থাকতে পারে না।”
মোটের উপরে রাজ্যের এই দুই বিরোধী দলের বক্তব্য, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রয়োজনে এই পদক্ষেপ। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বাম- কংগ্রেসের এই অভিযোগকে ‘হতাশার বহিঃপ্রকাশ’ বলেই চিহ্নিত করেছে। রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বাংলায় তো বটেই, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতার গ্রহণযোগ্যতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ওঁরা এ সব বলছেন। মমতা জানেন, কখন বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বস্ব পণ করে, কী ভাবে লড়াই করতে হয়। শিল্প সম্মেলন রাজনীতির বিষয় নয়। এটা বোঝেন না বলেই এই দুই দলের নেতারা ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছেন।’’
চার দিনের দিল্লি সফরে বিজেপি- বিরোধী শিবিরের অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলে ধরতে গোড়া থেকেই তৎপর তাঁর দল। তাঁর উপস্থিতিতেই কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দল থেকে পরিচিত একাধিক মুখ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। তা নিয়ে কংগ্রেসের তরফে সমালোচনাও করা হয় তৃণমূল নেত্রীর। তবে এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বৈঠকের পরে তা অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে রাজ্যের কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব। তবে পাল্টা আক্রমণে তাঁদের বিঁধেছে তৃণমূলও।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ও জমি নীতি ঠিক না হলে এবং অবৈধ ভাবে টাকা আদায় বন্ধ না হলে, প্রধানমন্ত্রী কেন, শিল্প সম্মেলনে মহাদেব এলেও এ রাজ্যে বিনিয়োগ আসবে না। পশ্চিমবঙ্গের এই অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সচেতন।” আর কংগ্রেস ও সিপিএমের কটাক্ষ নিয়ে শমীকের প্রতিক্রিয়া, “এই কথা বলে বলেই তো কংগ্রেস এবং সিপিএম রাজ্য থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy