কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রমারি তাঁর উদ্দেশে কুৎসিত ভাষা ব্যবহার করেছেন বলে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক অ্যালিস ভ্যাজ। ওই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে দলের বিধায়কের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে ফেরার সময় তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খানিকটা বিরক্ত হয়েই মমতা বলেন, ‘‘এ রকম কিছু হয়ইনি। আপনারা কিছুই জানেন না। না জেনে সব লিখছেন।’’
আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের জয়গাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতে গত ১১ জুনের ঘটনা। পাঁচিল দিয়ে স্থানীয় গোপীমোহন ময়দানের সরকারি জমি দখল করা রুখতে অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সেই মতো অভিযান হয় পুলিশের উপস্থিতিতে। পাঁচিলের কিছুটা ভেঙেও দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মেনে নিতে পারেননি শাসক দলের বিধায়ক। সেখানে গিয়ে প্রকাশ্যে তিনি বলেন, ‘‘কে এ সব সিদ্ধান্ত নিল? এসডিও-বিডিও অফিসে গিয়ে সকলকে জ্বালিয়ে দেব। কে ডিএম?’’ এর পরেই ওই মহিলা জেলাশাসকের উদ্দেশে অশ্রাব্য ভাষায কথাবার্তা বলেন চম্প্রমারি।
পরে অবশ্য তৃণমূল বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, ‘‘জবরদস্তি উচ্ছেদ আমাদের দলনেত্রী পছন্দ করেন না। সে জন্য প্রতিবাদ করেছি। কোনও গালি-হুমকি দিইনি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য ছিল, ‘‘অনেক পুরনো ব্যাপার। ব্যাপারটা মিটে গিয়েছে। এখন পুরনো ঘটনা টেনে বাজার গরমের চেষ্টা করছেন বিরোধীরা।’’
বিধায়ক অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও ক্ষোভ চেপে রাখেননি জেলাশাসক। গত ২২ জুন নবান্নে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে লিখিত রিপোর্ট পাঠিয়ে তিনি সে দিনের ঘটনার বিস্তারিত জানান। মুখ্যসচিবকে তিনি লেখেন, বিধায়ক তাঁকে ‘যৌনকর্মীর বাচ্চা’ বলে কটূক্তি করেছেন। চিঠির সঙ্গে বিধায়কের বক্তব্যের একটি ডিভিডি-ও পাঠান নবান্নে। সরকারি সূত্রের খবর, জেলাশাসকের লিখিত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক স্তরে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছিলেন শীর্ষকর্তারা। কিন্তু এ দিন সন্ধেয় মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে চম্প্রমারির পাশে দাঁড়িয়ে ‘কিছুই হয়নি’ বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, তাতে জেলাশাসকের অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে গেল বলেই মনে করছেন নবান্নের কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy